কাজ সামলে ছেলে বিহানের সঙ্গে মাঝে মধ্যেই ঘুরতে বেরিয়ে পড়েন নন্দিতা। ছবি- সংগৃহীত
মাত্র কয়েক বছর আগেও এই বিষয়টি নিয়ে কানাঘুষো চলত। সকলের সামনে বিশেষ বলা হত না। কিন্তু একা হাতে সন্তানকে বড় করে তোলা এখন আর চমকে ওঠার মতো নতুন বিষয় নয়। সন্তানকে একা হাতে মানুষ করার এই যাত্রা পথ যে সব সময় খুব মসৃণ হয়, তা কিন্তু নয়। পরিবারের সমর্থন থাকলেও সমাজের সকলে কিন্তু এই বিষয়টিকে ভাল চোখে না-ও দেখতে পারে। কখনও কখনও এই প্রভাব পড়ে ছোট্ট খুদের উপরেও। এতে কি সন্তানের সঙ্গে অভিভাবকের সম্পর্কের সমীকরণ বদলে যায়? অভিনেত্রী এবং পরিচালক নন্দিতা দাসও কি এমনটাই মনে করেন?
২০১৭ সালে আইনি বিবাহবিচ্ছেদ হয় পরিচালক ও অভিনেত্রী নন্দিতা দাস এবং সুবোধ মাস্কারার। সেই থেকেই তাদের সন্তান বিহানের দায়িত্ব নন্দিতার উপর। এক সাক্ষাৎকারে নন্দিতা বলেন, “কঠিন হলেও এই কাজে আনন্দও আছে।” সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ এই সম্পর্ক খোলামেলা ভাবে নানা বিষয়ে আলোচনা করতে সাহায্য করে বলে মনে করেন নন্দিতা।
এ কথা অস্বীকার করার জায়গা নেই যে একা হাতে সন্তানকে বড় করে তোলার অনেক রকম প্রতিবন্ধকতা আছে। সেই প্রতিবন্ধকতা কি সমাজের চোখ রাঙানিতে আরও কয়েক গুণ বেড়ে যায়? নন্দিতার উত্তর, “হ্যাঁ, এই নিয়ে চর্চা তো সব জায়গায় হয়। অনেকেই কৌতূহলের বশে জিজ্ঞাসা করেই ফেলেন ‘তোমরা আলাদা থাকো? তোমার বরকে দেখে তো ভাল মানুষই মনে হয়।’ আসলে আমরা বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানটিকে এত গুরুত্ব দিয়ে ফেলি যে ভাবতেই পারি না মেয়েরা একা একাও অনেক কিছু করতে পারে।”
ছেলেকে স্কুলে দিতে গিয়ে অন্য আরও এক মায়ের চাকরি থেকে ইস্তফা দেওয়ার কারণ শুনে থমকে গিয়েছিলেন নন্দিতা। শুনেছিলেন, সন্তানের জন্য বহুজাতিক এক সংস্থার উঁচু পদ থেকে তিনি স্বেচ্ছায় ইস্তফা দিয়েছিলেন শুধু সন্তানের কথা ভেবে। এই প্রসঙ্গে নন্দিতা বলেন, “আগে যে আমার এই কথা মনে হত না তা নয়। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমার এই ধারণা বদলে গিয়েছে। এখন আমার মনে হয়, সন্তানদের জানা উচিত তাদের মায়েরা কী কী করেন, শুধু বাড়ির কাজ করলেই মা হওয়া যায় না। ঘরে, বাইরে সমান তালে সব কিছু সামলাতে দেখলে মায়েদের প্রতি সন্তানদের শ্রদ্ধা বাড়ে।”