— প্রতীকী চিত্র।
জন্ম থেকে যোনিপথ নেই। রাজ্যের ও ভিন্রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে নামজাদা হাসপাতাল ঘুরেও কোনও সুরাহা হয়নি। অবশেষে সিউড়িতে এসে মিলল সমাধান। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রতিস্থাপন করা হল কৃত্রিম যোনিপথ। তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও তিন ইঞ্চির কৃত্রিম যোনিপথ তৈরি করে অসাধ্য সাধন করেছিলেন সিউড়ির ওই চিকিৎসক। এ বার সেই পথই আরও একটু প্রশস্ত হল!
শরীরে যোনিপথ না থাকায় তরুণীর ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় পড়েছিলেন পরিবারের লোকেরা। চিকিৎসার জন্য তাঁকে নিয়ে পাড়ি দিয়েছিলেন ভিন্রাজ্যেও। তবে সব জায়গাতেই আশাহত হতে হয় পরিবারকে। এমন সময়ে সমাজমাধ্যম থেকে তারা জানতে পারেন সিউড়ির স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ দেবাশিস দেবাংশীর কথা। এর পর সেই চিকিৎসক-সকাশেই মিলল সমাধান। দীর্ঘ দুই মাসের চিকিৎসা এবং অস্ত্রোপচারের পর অসাধ্য সাধন করেছেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই তরুণী বলেন, “অনেক জায়গায় ঘুরেছি আমরা। কেউ কিচ্ছু করতে পারেনি। শেষমেশ এখানে এসে সুস্থ হলাম।’’ পরিবারের এক সদস্যের কথায়, ‘‘এ রাজ্য তো বটেই, ভিন্রাজ্যের নানা জায়গায় ঘুরেও সুরাহা হয়নি। দেবাশিসবাবুর জন্যই আমাদের মেয়েটা আবার স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেল।’’
জুন মাসে ইলামবাজার থানায় এলাকার এক নাবালিকার কৃত্রিম যোনিপথ স্থাপন করে নজির গড়েছিলেন সিউড়ির বাসিন্দা দেবাশিস। তাঁর কথায়, “এই তরুণী আমার কাছে ‘অ্যাবসেন্ট ভ্যাজাইনা’র সমস্যা নিয়ে এসেছিলেন। ডাক্তারি পরিভাষায় যাকে ‘মেয়ার রকিট্যানস্কি কুজ়স্টার হাউজ়ার সিন্ড্রোম’ বা ‘এমআরকেএইচ’ সিন্ড্রোম বলা হয়। তবে এই রোগ সত্যিই বিরল।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘প্রায় পাঁচ হাজার জনের মধ্যে একজন এই রোগে আক্রান্ত হন। চিকিৎসা পদ্ধতি এবং অস্ত্রোপচার বেশ ঝুঁকির। যোনি প্রতিস্থাপন করার আগে আরও একটি অস্ত্রোপচার করতে হয়। সেখান থেকে বিশেষ একটি জিনিস সংগ্রহ করে, মাপ নিয়ে ছাঁচ তৈরি করা হয়। তার পর চলে প্রতিস্থাপন পর্ব। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।”
চিকিৎসক জানান, প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলে অস্ত্রোপচার এবং তা সফলও হয়। তবে এই ধরনের অস্ত্রোপচারের পর মেয়েরা স্বাভাবিক যৌনজীবন পেলেও, সন্তানধারণ করতে পারেন না বলেই জানিয়েছেন ওই চিকিৎসক।