কোন কোন অভ্যাস রপ্ত করলেই ক্লান্তি উধাও হবে? ছবি: ফ্রিপিক।
ক্লান্তি কাটছে না কিছুতেই। সকালে চোখ খুলে আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতেই যেন ক্লান্তিটা ফিরে আসে। রাতে ঘুমের পরেও ক্লান্তি। অফিসে কাজ করতে করতে চোখ দুটো যেন বুজে আসে। একটানা কাজে একঘেয়েমি এসে যায় সহজেই। খালি মনে হয়, কুঁড়েমি করেই দিনটা কাটিয়ে দিলে বেশ হত। চনমনে ভাবটাই যেন উধাও। অথচ কিছু মানুষ আছেন, যাঁদের ক্লান্তি ভাবটাই যেন নেই। সারাদিন উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটছেন যেন। অবসাদ, বিষণ্ণতা তাঁদের ধারকাছে ঘেঁষে না। সব সময়েই শরীরে অফুরন্ত শক্তি। দিনভর পরিশ্রমের পরে আপনি যখন বিছানার নিশ্চিন্ত আরাম খোঁজেন, তাঁরা হয়তো তখন নতুন কোনও কাজে ব্যস্ত হয়ে যান। মনে হতেই পারে, কোথা থেকে এত শক্তি আসছে। তা হলে জেনে নিন কোন কোন অভ্যাস রপ্ত করলেই ক্লান্তি উধাও হবে।
প্রথমত, কাজের গুরুত্ব বুঝতে হবে। কোন কাজ আগে জরুরি, কোনটি পরে করলেও চলবে সেই পরিকল্পনা আগে করা জরুরি। অকাজে পরিশ্রম ও সময় নষ্ট না করে, দরকারি কাজ আগে সেরে নিলেই মন অনেকটা নিশ্চিন্ত থাকবে। উদ্বেগ কম হলে ক্লান্তিও কম হবে।
নিয়মে বাঁধতে হবে জীবন। এই বিষয়ে মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন, শারীরিক ক্লান্তির থেকেও মানসিক ক্লান্তি অনেক বেশি। কর্মক্ষেত্রে লক্ষ্যপূরণের চাপ, কাজ নিয়ে অতৃপ্তি, কাজের পরও পরিবারের দায়দায়িত্ব, ব্যক্তিজীবন ও কর্মজীবনে ভারসাম্য রক্ষা করতে গিয়েই দুশ্চিন্তার পাহাড় জমে। তখনই যে কোনও কাজে একঘেয়েমি এসে যায়। তাই সময় অনুযায়ী কাজ ভাগ করে নিলে আর রোজের রুটিন নিয়মে বাঁধলে মন অনেক ভাল থাকবে।
মানসিক চিন্তাভাবনার জেরে হজমে সমস্যা, মাথাব্যথা, খিদে কমে যাওয়া, ঘুমের সমস্যা, ওজন আচমকা কমে বা বেড়ে যাওয়া, ঘন ঘন অসুস্থ বোধ করার মতো লক্ষণও দেখা যায় যা ক্লান্তি ভাব কয়েক গুণ বাড়িয়ে তোলে। তাই নিয়ম করে শরীরচর্চা, মেডিটেশন বা ধ্যান করা জরুরি। সেই সঙ্গেই সুষম খাবার খেতে হবে। বাইরের খাবার যত কম খাওয়া যাবে ততই ভাল।
কেন কাজে অতিরিক্ত চাপ হচ্ছে, সেটি বুঝে চাপ কমানোর চেষ্টা করা যেতে পারে। প্রয়োজনে কোন সময় কী ভাবে কাজ করলে সুবিধা হতে পারে, সে ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করতে হবে। চেষ্টা করতে হবে টানা কাজ না করে মাঝেমধ্যে একটু বিশ্রাম নেওয়ার।
নিয়ম মেনে ঘুম খুব জরুরি। আট থেকে ন’ঘণ্টার টানা ঘুমোতেই হবে। অনিন্দিতা বলছেন,ঘুমোনোর সময়ে মোবাইল, ল্যাপটপ বা যে কোনও বৈদ্যুতিন গ্যাজেট দূরে রাখতে হবে। কারণ এই সব ডিভাইস চোখের পাশাপাশি মনের ক্লান্তিও বাড়ায়।