প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহিত
খাওয়ার টেবিলেই যেন যত অশান্তি! খাবার দেখলেই অনীহা, চিৎকার, কান্নাকাটি। বকাঝকা করে, ভুলিয়ে, গল্পের ছলে— কিছুতেই খাওয়াতে পারছেন আপনার বাচ্চাকে? কী করে এই সমস্যার সমাধান করবেন? বকাঝকা না করে কয়েকটি ছোট অভ্যাস পাল্টে দেখুন না।
জলখাবার খাওয়ান
দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার এটাই। তাই নিজেও জলখাবার বাদ দেবেন না। আর বাচ্চাকেও কোনও মতে ছাড় দেবেন না। রোজ সকালে নিয়ম করে একটা নির্দিষ্ট সময়ে খাওয়াতেই হবে বাচ্চাকে। রোজ নিত্য নতুন জলখাবার না বানাতে পারেন, একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খাবার দিন। অনেক সময় এক খাবার খেয়ে খেয়েও বাচ্চাদের অনীহা জন্মে যায়।
ঘন ঘন খেতে দিন
বড়দের মতো বাচ্চাদের শুধু ৩ বেলা খাবার দেবেন না। এতে ওদের খিদে আরও মরে যায়। ঘন ঘন খেতে দিলে তাদের শরীরেও সেই মতো খিদে তৈরি হবে। অল্প পরিমাণে ২-৩ ঘণ্টা অন্তর খেতে দিন। কখনও ফল, কখনও স্যুপ, কখনও স্যান্ডউইচ।
জাঙ্ক ফুড নয়
তা়ড়াহুড়োয় অনেক বাবা-মায়েরাই ম্যাগি ধরিয়ে দেন বাচ্চাদের। কিংবা অন্য কোনও প্রসেস্ড খাবার। বাচ্চাদের ব্যস্ত রাখতে কেক-প্যাস্ট্রি-চিপ্স দিয়ে দেন অবিভাবকেরা। কিন্তু তাতে বাচ্চার খিদে আরও মরে যায়। আসল খাবারের সময়ে তারা খেতে চায় না। তাই স্বাস্থ্যকর অথচ সুস্বাদু কিছু স্ন্যাক্স দিতে হবে তাদের। দইয়ে নানা রকম বেরি দিয়ে সাজিয়ে দিন। আপেল টুকরো করে কেটে পিনাট বাটার দিয়ে সাজিয়ে দিন। ডিমসেদ্ধ দিলে একটু সস দিয়ে আঁকুবুকি কেটে পরিবেশন করুন। যাতে বাচ্চারা খেতে উৎসাহ পায়।
খেলাধুলা করান
বাচ্চাদের একটু শারীরিক পরিশ্রম না করালে কিন্তু খিদে বাড়ানো সম্ভব নয়। এই করোনাকালে তাদের খেলাধুলো একদম বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিকেলবেলা খেলতে যাওযা, পার্কে হুড়োহুড়ি করার অবকাশ নেই। কিন্তু তাই বলে বাচ্চাকে সারাদিন ঘরে মুঠোফোন দিয়ে বসিয়ে রাখবেন না। বাড়ির ছাদে বিকেলে নিয়ে যান। খেলাধুলো করান। ঘরের মধ্যে ছুটোছুটি করলে বকাবকি করবেন না।
প্রিয় খাবার দিন
মাঝে মাঝে বাচ্চাদের তাদের প্রিয় খাবারগুলোও দিতে হবে। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস করানো ভাল। কিন্তু কখনও কখনও বিরতি দেওয়াই যায়। সারা সপ্তাহ ঠিক মতো খেলে রবিবারে আইসক্রিম বা বার্গার বরাদ্ধ করতে পারেন। কথা শোনার উপহার হিসেবে এই খাবারগুলো খেতে দিন। তাহলে তারা খুশি হয়ে খাবে এবং সারা সপ্তাহ স্বাস্থ্যকর খাবার নিয়ে সমস্যা তৈরি করবে না।
ডাক্তারের পরামর্শ
সব রকম চেষ্টার পরও যদি বাচ্চা কিছুতেই খেতে না চায়, একবার শিশু-চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। অনেক কারণেই খিদে মরে যেতে পারে। পেটের কোনও রকম সমস্যা হচ্ছে কিনা, কিংবা কোনও ব্যাক্টেরিয়াল রোগের জন্য খিদে মরে যাচ্ছে কিনা সেটা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়াই ভাল।