১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ইডির মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় জামিন পাবেন, জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
নিয়োগকাণ্ডে ইডির মামলা থেকে ‘অব্যাহতি’ চেয়ে আদালতে নতুন করে আবেদন করতে চলেছেন মানিক ভট্টাচার্য, কুন্তল ঘোষেরা। এর ফলে চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া আপাতত কিছুটা জটিল হল। আগামী ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় জামিন পাবেন বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যেই বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করে এই মামলার সঙ্গে যুক্ত গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের বয়ান নেওয়ার চেষ্টা করবে ট্রায়াল কোর্ট। কিন্তু সেই প্রক্রিয়ায় নতুন করে জটিলতা তৈরি হল সোমবার। কারণ, মামলা থেকে ‘অব্যাহতি’ চেয়ে আদালতে আবেদন জানাতে চলেছেন অভিযুক্তেরা।
সোমবার কলকাতার বিচার ভবনে নিয়োগকাণ্ডে ইডির মামলার শুনানি ছিল। চার্জ গঠন উপলক্ষে আদালতে সশরীরে উপস্থিত হয়েছেন পার্থ, ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র, অয়ন শীল, সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়রা। আদালত কক্ষে ছিলেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও। কিছু দিন আগে অর্পিতার জামিন মঞ্জুর করা হয়েছিল। এই মামলায় চার্জ গঠনের তোড়জোড় আগেই শুরু করেছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা। ফলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নতুন করে চার্জশিট তৈরি, আদালতে তাঁদের সশরীরে হাজিরা, চার্জশিট এবং বিভিন্ন নথি তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার মতো একাধিক প্রক্রিয়া চলছিল। বিদেশ থেকে এসেছিলেন পার্থের জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্যও। মনে করা হয়েছিল, সোমবার সকলে আদালতে এলে চার্জ গঠনের কাজ এগোবে। কিন্তু কুন্তলেরা নতুন করে আবেদন করতে চলেছেন।
মামলা থেকে যাঁরা ‘অব্যাহতি’ চাইছেন, সেই তালিকায় মানিক, কুন্তল ছাড়াও আছেন মানিকের স্ত্রী এবং পুত্র। এ ছাড়া, একটি রিয়েল এস্টেট সংস্থার তিন কর্মী-সহ আরও দু’জন এই মামলা থেকে ‘অব্যাহতি’ চাইতে পারেন। কুন্তলের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তের শুরুতে যে চার্জশিট ইডি দিয়েছিল, তার সঙ্গে কিছু দিন আগে দেওয়া শেষ চার্জশিটের মিল নেই। নিয়োগ মামলায় ইডির দেওয়া ১০ হাজার পাতার নথি পড়ার সময় পাননি বলেও আদালতে জানিয়েছেন কেউ কেউ।
এ প্রসঙ্গে আদালত চত্বর থেকে মানিক বলেন, ‘‘আদালত এর আগে এই মামলায় একটি ‘ক্লোজ়ার’ রিপোর্ট দিতে বলেছিল। এখনও তা ইডি দেয়নি।’’
রিয়েল এস্টেট সংস্থার তিন কর্মী আদালতে জানান, সমস্ত নথি পড়ার সময় তাঁরা পাননি। প্রাথমিক ভাবে নথি পড়ে তাঁদের মনে হয়েছে, এই মামলায় তাঁদের কোনও যোগই নেই। তাই তাঁরা ‘অব্যাহতি’ চাইবেন। নতুন করে আবেদন জানানো হলে তার শুনানিতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। ফলে চার্জ গঠন আরও পিছিয়ে যেতে পারে। এ প্রসঙ্গে তাপস মণ্ডলের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘সোমবার চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া এগোনো যায়নি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু এখনও আমরা নথি পাইনি। ইডি সবাইকে সব নথি দিতে পারেনি। এ ছাড়া, কয়েকটি সংস্থার হয়ে কারা প্রতিনিধিত্ব করবেন, তা-ও এখনও জানা যায়নি।’’