Japan

বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করলে নাকি সংসার করা হয় না মেয়েদের! পুরনো ধারণা ঘোচাতে তৎপর জাপান

বিজ্ঞানচর্চা করলে বিয়ে, সংসারে অনীহা দেখা যায় সেই মেয়েদের। এমন তকমা ঘোচাতে এবং লিঙ্গবৈষম্য দূর করতে একাধিক পদক্ষেপ জাপানের।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
টোকিও শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৩ ২০:৫১
Image of Japanese women

বিজ্ঞানচর্চায় মেয়েদের আগ্রহী করবে জাপান। ছবি: রয়টার্স

বিজ্ঞান মেয়েদের বিষয় নয়। এমন ধারণা বোধ হয় পৃথিবীর সর্বত্রই কমবেশি রয়েছে। জাপানও এর বাইরে নয়। যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই ধারণা প্রায় কুসংস্কারের পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। তাঁদের মতে, ‘সায়েন্স’, ‘টেকনোলজি’, ‘ইঞ্জিনিয়ারিং’ এবং ‘ম্যাথমেটিক্স’এর মতো বিষয় নিয়ে চর্চা করা মেয়েরা নাকি বিয়ে করতে চান না। এই সব বিষয়ে নিয়ে পড়াশোনা করলে বা ভবিষ্যতে কাজ করলে সংসারধর্ম পালন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এমন পুরনো ধারণা ঘোচাতে এবং বিজ্ঞানচর্চায় মেয়েদের আরও বেশি করে উৎসাহ দিতে একাধিক পদক্ষেপ করছে জাপান।

Advertisement

জাপানের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী গবেষণার সুযোগ পেয়েও সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পাচ্ছিলেন। ইয়ুনা কাটো নামের ওই ছাত্রীটি বলেন, “এই চারটি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা বা কাজ করলে পরিবারকে দেওয়ার মতো সময় পাওয়া যায় না। তাই আমার বাড়ির সকলেই চেয়েছিলেন আমি যেন অন্য যে কোনও বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করি। আমার মা এবং ঠাকুমা প্রায়ই বলতেন, বিয়ে-সন্তান চাইলে ওই চারটি বিষয় নেই এমন কোনও কাজ খুঁজতে।” বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং অঙ্ক এই বিষয়গুলির পরিধি যে বৃহৎ সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। প়ড়াশোনা করার সময়ে তো বটেই পরবর্তীকালে গবেষণা করতে গেলেও সময়ের অভাব অনুভব করেন অনেকে। সঠিক বয়সে বিয়ে, সন্তান, পরিবারের পরিকল্পনা থাকলে, তা যে সময়মতো হবে, এমন নিশ্চয়তা কম। জাপানের বহু মহিলাই এই সমস্যার সম্মুখীন। যা বর্তমানে এই দেশের জন্য বড় সমস্যা। সে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি ইতিমধ্যেই কর্মী সঙ্কটের মধ্যে পড়েছে। মলিকিউলার বায়োলজি নিয়ে গবেষণারত শিক্ষক ইনউয়ো লির মতে, “এই ধরনের মানসিকতা যে কোনও দেশের পক্ষেই ক্ষতিকর। লিঙ্গসাম্য না থাকলে, যে কোনও দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে বাধ্য।”

জাপানে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিভিন্ন শাখায় পড়াশোনা করছেন, এমন মেয়েদের হার ১৬ শতাংশ। প্রতি সাত জনের মধ্যে মহিলা গবেষক বা বিজ্ঞানীর সংখ্যা মাত্র এক। বিজ্ঞান ভিত্তিক পড়াশোনায় এমন লিঙ্গবৈষম্য দূর করতে জাপান কঠোর পদক্ষেপ করতে চলেছে। ২০২৪ সালের মধ্যে ডজন খানেক নতুন বিশ্ববিদ্যালয় শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে জাপানের। এমনকি ‘স্টেম’ বা ‘সায়েন্স’, ‘টেকনোলজি’, ‘ইঞ্জিনিয়ারিং’ এবং ‘ম্যাথামেটিক্স’ নিয়ে পড়াশোনা করতে চাইলে মেয়েদের আসন সংরক্ষরণেরও ব্যবস্থা থাকবে বলে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই মিতসুবিসি, টয়োটার মতো সংস্থা ‘স্টেম’ ছাত্রীদের বিশেষ বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা শুরু করেছে।

আরও পড়ুন
Advertisement