কোন বয়সে কত ক্ষণ ঘুমোনো উচিত? ছবি: সংগৃহীত।
ঘুম মানেই ৮ ঘণ্টা, এই ধারণা আদৌ ঠিক নয়। সারা জীবন ধরে একটি মানুষ একই সময় ঘুমে ব্যয় করলে, তা মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। ঘুমের দৈর্ঘ্য নির্ভর করে ব্যক্তির বয়স, স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য অনেক বিষয়ের উপর। আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘুম বিষয়ক গবেষক র্যাফায়েল প্যালায়ো বলেন, ‘‘ঘুম প্রত্যেক মানুষের জীবনের অপরিহার্য অংশ। নিজের প্রতি যত্ন নেওয়ার প্রথম এবং সবচেয়ে সহজ পদক্ষেপ হল ঘুম। কত ক্ষণের ঘুম দরকার, কেবল সেটি জেনে লাভ নেই, যদি না আপনার ঘুমের মান ভাল হয়। ঘুমের দৈর্ঘ্য এবং মান, দুই-ই গুরুত্বপূর্ণ। এই দুই বিষয় যদি সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়, তা হলে ঘুম থেকে ওঠার পর আর ক্লান্তি থাকে না।
জনস হপকিন্সের বিহেভিয়ারাল স্লিপ মেডিসিন চিকিৎসক মলি অ্যটউড বলেন, ‘‘এমন বহু রোগী দেখি আমরা, যাঁরা জানান, বেশ কয়েক ঘণ্টা ঘুমোনোর পরও ক্লান্তি কাটে না। তার মানেই বুঝে নিতে হবে, পাশাপাশি অন্য অনেক সমস্যা আছে। বেশির ভাগ মানুষই ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমোন। সেই বিশেষ শ্রেণির মানুষের স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকিও কম। কেউ যখন ৬ ঘণ্টার কম অথবা ৯ ঘণ্টার বেশি ঘুমোন, তখনই রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।’’
বয়স অনুযায়ী তালিকা দিলেন অ্যটউড।
নবজাতকদের সবচেয়ে বেশি ঘুমের প্রয়োজন ১৪ থেকে ১৭ ঘণ্টার। বেড়ে ওঠার সময়ে শরীরে ঘুমের প্রয়োজনীয়তা বেশি থাকে।
ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশন ২৬ থেকে ৬৪ বছরের বেশির ভাগ প্রাপ্তবয়স্কদের ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমোনোর পরামর্শ দিয়েছে। আরও বয়স্কদের ক্ষেত্রে এর থেকে কিছুটা কম এবং ১৬ থেকে ২৫ বছরের মানুষদের আরও কিছুটা বেশি ঘুমোনোর কথা বলা হয়েছে।
ঘুমের দৈর্ঘ্য নির্ভর করে ব্যক্তির বয়স, স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য অনেক বিষয়ের উপর। ছবি: সংগৃহীত।
মানুষ প্রায় প্রতি ৯০ মিনিট অন্তর ঘুমের একটি করে পর্যায় পার করেন। রাতের প্রথম অংশে গভীর ঘুম হয়, যা শরীর মেরামত এবং শক্তি পুনরুদ্ধারের জন্য অপরিহার্য। শেষের দিকে, ঘুম চক্রের বেশির ভাগ সময় ঘুমের মধ্যে চোখের পাতা নড়াচড়া করে। অর্থাৎ, ঘুমন্ত ব্যক্তির আরইএম (র্যাপিড আই মুভমেন্ট) ঘটে। এর অর্থ, ব্যক্তি স্বপ্ন দেখছেন। এই সময়টি স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
অ্যটউড বলেন, শিশুরা ঘুম চক্রের প্রায় ৫০ শতাংশ গভীর ঘুমেই কাটায়। বয়ঃসন্ধিকালে এটি কমে যায়, কারণ আমাদের শরীরে একই ধরনের মেরামত এবং পুনরুদ্ধারের প্রয়োজন পড়ে না।