সমাজমাধ্যমের নেশা কাটাতে কী করবেন? ছবি: সংগৃহীত।
ঘুমচোখ খোলা পর থেকেই হাতে ফোন। সকাল থেকে ফোনে নানা ধরনের ‘নোটিফিকেশন’ এসেই চলেছে। হয় অনলাইন শপিং অ্যাপের। নয় সমাজমাধ্যমে লভ, লাইক কিংবা কমেন্ট। কানে সেই পরিচিত আওয়াজ আসা মাত্রই চোখ চলে যায় মোবাইলের পর্দায়। কাজে-অকাজে দিনের বেশির ভাগ সময় কাটে এই যন্ত্রটির সঙ্গে। অফিসে গুরুত্বপূর্ণ মিটিং চলাকালীন অভ্যাসবশতই আঙুল চলে যায় নীল, গোলাপি, কালো আইকনগুলোর উপর। চটজলদি এক বার স্ক্রল করে নিতে না পারলে, মনটা কেমন যেন অস্থির হয়ে ওঠে। ‘স্ক্রল’ করতে করতে এমন কিছু চোখে পড়ে, যেগুলো দেখলে মন খারাপও হয়। বহু বার ভেবেছেন সমাজমাধ্যম থেকে বিরতি নেবেন। কিন্তু পারেননি। শরীরের পাশাপাশি মন ভাল রাখতে হলে কিন্তু ‘ডিজিটাল ডিটক্স’ জরুরি।
সমাজমাধ্যমের নেশা কাটাতে কী কী করবেন?
১) লক্ষ্য স্থির করে নিন
সমাজমাধ্যমের নেশা যদি ছাড়তেই হয়, তা হলে অন্য কারও কথায় নয়, নিজেকেই এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে। নিজেকেই স্থির করে নিতে হবে দিনের কতটুকু সময় ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামে ব্যয় করবেন। এক দিনে সম্ভব নয়, তবে ধীরে ধীরে সমাজমাধ্যমে ঘোরাফেরা করার সময় কমিয়ে আনতে হবে।
২) সমস্ত নোটিফিকেশন বন্ধ করে দিন
বিভিন্ন অ্যাপ থেকে নানা ধরনের নোটিফিকেশন আসতে থাকলে মনোযোগ নষ্ট হয়। বার বার মনে হতে থাকে ‘কী হল দেখি’। ছবি বা রিলে কটা ‘লাইক’ হল বা আদৌ ‘ফলোয়ার্স’ এর সংখ্যা বাড়ল কি না দেখাটা রীতিমতো নেশায় পরিণত হয়ে যায়। তাই সেটিংস থেকে নোটিফিকেশন বন্ধ করে রাখতে পারলে ভাল হয়।
৩) এমন কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকুন, যার সঙ্গে সমাজমাধ্যমের যোগ নেই
সমাজমাধ্যম শুধু ঘোরার জায়গা নয়। অনেকেই এই প্ল্যাটফর্মকে উপার্জনের কাজেও ব্যবহার করেন। নেটপ্রভাবীরা সারা ক্ষণ নতুন, অভিনব ভিডিয়ো পোস্ট করতে থাকেন। যা এই নেশা আরও বাড়িয়ে তোলে। সমাজমাধ্যমের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করতে চাইলে এমন কাজ করতে হবে, যার সঙ্গে সমাজমাধ্যমের খুব একটা যোগ নেই।
৪) মানুষের সঙ্গে কথা বলুন
সমাজমাধ্যমে বন্ধুতালিকা দীর্ঘ। অথচ বন্ধু থাকা সত্ত্বেও তরুণ প্রজন্মের অনেকেই একাকিত্বে ভোগেন। মনোবিদেরা বলেন, ভার্চুয়াল বন্ধুত্ব নয়, মুখোমুখি বসে কথার বলার বা শোনার মানুষ প্রয়োজন। তাতে মানসিক স্বাস্থ্য ভাল থাকে। সমাজমাধ্যমের প্রতি আকর্ষণও কমে।
৫) প্রয়োজন ছাড়া ফোনে হাত দেবেন না
খুব প্রয়োজন না হলে ফোনে হাত দেবেন না। সমাজমাধ্যমের নেশা কাটাতে হলে এই চেতনা বা বোধ নিজের মধ্যে জাগ্রত করতে হবে। বিশেষ করে সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং ঘুমোতে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে ফোন ঘাঁটা বন্ধ করে দিন।