নিজেই করুন নিজের ফেশিয়াল। ছবি: সংগৃহীত।
অফিস থেকে বাড়ি। আবার বাড়ি থেকে অফিস। মাঝে এক দিন ছুটি থাকলেও পরিবারের যাবতীয় কাজ সেরে, আলাদা করে আর সালোঁয় যেতে ইচ্ছে করে না। অযত্নের ফলে দিন দিন ত্বকের যা অবস্থা হচ্ছে, তাতে আয়নায় নিজের মুখ দেখে নিজেরই বয়স ভুলে যাচ্ছেন। প্রতি দিন ক্লিনজ়িং, টোনিং, ময়েশ্চারাইজ়িং করার পাশাপাশি, মাসে অন্তত এক বার করে ফেশিয়াল করা মুখের জন্য ভাল, তা জানেন। ত্বকে জেল্লা বজায় রাখতে গেলে ফেশিয়াল না হোক, নিয়মিত মাসাজ করতেই হয়। রক্ত সঞ্চালন ভাল না হলে ত্বক নিষ্প্রাণ হয়ে পড়া স্বাভাবিক। মুখের চামড়া টান টান রাখতে চাইলেও মাসাজ করা প্রয়োজন। কিন্তু কারও কাছে গিয়ে যে মাসাজ করাবেন, এত সময় কই? চিন্তা নেই, ‘আপনা হাত জগন্নাথ’ বলে নিজেই নিজের মুখের মাসাজ শুরু করে দিন। তার আগে জেনে নিন পদ্ধতি।
১) প্রথম ধাপ
মুখে মাসাজ করার আগে ঈষদুষ্ণ জলে মুখ ভাল করে পরিষ্কার করে নিন। মুখের উন্মুক্ত ছিদ্রের মধ্যে জমা ধুলো-ময়লা, সেবাম, ব্ল্যাকহেড্স এবং হোয়াইটহেড্স থাকলে মুখ পরিষ্কার করার পর, গরম জলের ভাপ নিতে পারেন। তবে বেশি ক্ষণ নয়। মিনিট তিনেক ভেপার নিলেই হবে। তার পর ত্বকের ধরন বুঝে যে কোনও একটি সিরাম মেখে ফেলুন। তার পর শুরু করুন ফেস মাসাজ।
২) কপাল মাসাজ
প্রথমে কপালের অংশ থেকে মাসাজ করা শুরু করুন। তর্জনি এবং মধ্যমা এই দু’টি আঙুলের সাহায্যে ত্বকের উপর চক্রাকারে ঘোরাতে থাকুন। ভ্রু থেকে ধীরে ধীরে আঙুল নিয়ে যান কপালের দু’পাশে। অন্তত পক্ষে বার পাঁচেক এই ভাবে মাসাজ করতে থাকুন।
৩) চোখের চারপাশ
এ বার চোখের চারপাশের রক্ত সঞ্চালন ভাল রাখতে অনামিকার সাহায্যে মাসাজ শুরু করুন। চোখের ভিতরের অংশ থেকে আঙুল বাইরের দিকে টেনে নিয়ে যান। নাকের হাড় থেকে ভ্রু যুগলের মাঝখান দিয়ে গোল করে দু’পাশে আঙুল ঘুরিয়ে মাসাজ করুন। পাঁচ বার করলেই যথেষ্ট।
৪) দুই গাল
এ বার নাসারন্ধ্রের দু’পাশে দু’হাতের বুড়ো আঙুল এবং তর্জনি রাখুন। তর্জনি ভাঁজ করে তার উল্টো দিকও রাখতে পারেন। সেই পয়েন্ট থেকে গালের হাড় অর্থাৎ হনুর তলা দিয়ে চামড়া টেনে দু’কানের পাশ পর্যন্ত নিয়ে যান। এই ভাবে মাসাজ করুন বার পাঁচেক।
৫) মুখ এবং ঠোঁটের চারপাশ
তর্জনি এবং মধ্যমা পাশাপাশি রাখলে ইংরেজির ‘ভি’ আকার নেয়। আঙুল ওই ভাবে রাখুন ঠোঁটের দু’ধারে। এ বার সেখান থেকে চামড়া টেনে নিয়ে যান কানের গোড়া পর্যন্ত।
৬) চোয়াল
অনেকেরই মুখে মেদ জমার সমস্যা থাকে। নিয়মিত মাসাজ করলে এই মেদ অনেকাংশে ঝরানো যায়। তবে তার জন্য সঠিক ভাবে মাসাজ করা প্রয়োজন। প্রণামের ভঙ্গিতে দুই হাত থুতনির কাছে রাখুন। এ বার দুই চোয়ালের পাশ থেকে চাপ দিয়ে কান পর্যন্ত হাত টেনে নিয়ে যান। হাতের স্ট্রোক যাতে সব সময় উপরের দিকে থাকে, তা খেয়াল রাখবেন।
৭) ঘাড় মাসাজ
একেবারে শেষ পর্যায়ে ঘাড়ের কাছে একটু মাসাজ করে নিতে পারলে সারা দিনের ক্লান্তি এক নিমেষে দূর হয়ে যাবে। তার জন্য হাতের বুড়ো আঙুলের সাহায্যে কানের দু’পাশ থেকে গলা পর্যন্ত লম্বা করে আঙুল টেনে আনুন। করোটির শেষ এবং সুষুম্নাকাণ্ডের শুরু যেখান থেকে, সেই অংশে আঙুল দিয়ে গোল করে মাসাজ করতে পারেন।