ছবি: সংগৃহীত।
নিজের ছবি বা নিজস্বী তোলা শখের পর্যায়েই পড়ে। কারও কারও ক্ষেত্রে তা আসক্তিও বটে। বছরে এক-আধ বার কোথাও ঘুরতে গেলে ছবি তোলা বা পোস্ট করা— এই তত্ত্বে বিশ্বাস করে না তরুণ প্রজন্ম। আবার, ভাল-মন্দ না বুঝে হাতে ফোন পেয়ে আর সমাজমাধ্যমে নতুন অ্যাকাউন্ট খুলে যখন-তখন ছবি পোস্ট করার মতো ছেলেমানুষিও করেন অনেকে। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে জালিয়াতির ছক কষছে প্রতারকেরা।
একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যক্তির মুখের আদল বা আঙুলের ছাপ নকল করে ফোন থেকে তথ্য চুরির ঘটনা বাড়ছে দেশ জুড়ে। ফোন বা অ্যাপের ‘লক’ খুলতে আঙুলের ছাপ লাগে। কোনও কোনও ফোনে আবার ‘ফেস রেকগনিশন’-এর ব্যবস্থাও থাকে। এক বার সেই সব জিনিস জাল করে ফোনের মধ্যে প্রবেশ করে ফেলতে পারলে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে নেওয়া সহজ হয়। ফোন নম্বরের সঙ্গে আধার এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সমস্ত তথ্য যুক্ত থাকে। তাই আঙুলের ছাপ ‘ক্লোন’ করে ফেলতে পারলে সেই কাজ অনেকটা সহজ হয়।
ছবি থেকে আঙুলের ছাপ কিংবা মুখের ছবি নকল করা কি এতই সহজ?
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, অসম্ভব নয়। তবে প্রতারকেরা সচরাচর সেই পদ্ধতির দিকে হাত বাড়ান না। কারণ, এই পদ্ধতিতে অনেক জটিলতা রয়েছে। ছবির ক্ষেত্রে সঠিক আলো, রেজ়োলিউশন কিংবা ক্যামেরা অ্যাঙ্গেল প্রয়োজন। এই সমস্ত শর্ত পূরণ না হলে বায়োমেট্রিকের ‘বেড়া’ ডিঙোনো এত সহজ নয়। তা ছাড়া এই ধরনের সমস্যা এড়াতে সমাজমাধ্যমে ফোটো বা ভিডিয়োর মান কমিয়ে রাখার বিকল্প উপায়ও রয়েছে। এটিও এক রকম ভাবে সুরক্ষা প্রদান করতে সক্ষম।
সমাজমাধ্যমে ছবি পোস্ট করার সময়ে কী কী মাথায় রাখবেন?
১) ফোন খুলতে গেলে মুখের ছবি বা আঙুলের ছাপ লাগে। তাই এমন ভাবে ছবি পোস্ট করবেন না, যাতে আঙুলের ছাপ বা মুখ খুব স্পষ্ট ভাবে বোঝা যায়। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে জালিয়াতেরা তথ্য চুরি করে থাকেন।
২) টাকা লেনদেন, ব্যাঙ্ক কিংবা ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখার জন্য অনলাইনে অ্যাপগুলি ব্যবহার করেন তার প্রাইভেসি সেটিংসের উপর জোর দিতে হবে। প্রয়োজনে ‘টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন’ পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
৩) কোনও সংস্থার সঙ্গে টাকাপয়সা লেনদেন করতে হলে তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে হবে। অসুরক্ষিত কোনও মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়া উচিত নয়।
৪) নির্দিষ্ট সময় অন্তর ফোনের অপারেটিং সিস্টেম এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত সফ্টঅয়্যার আপডেট করতে হবে।
৫) এই ধরনের ঝুঁকি এড়াতে বায়োমেট্রিকের ব্যবহার সীমিত রাখতে হবে। যেখানে বায়োমেট্রিক না করলেও কাজ চলে যায়, সেখানে এই পদ্ধতি এড়িয়ে চলাই ভাল।