‘বডি স্পা’ করে নিন বাড়িতেই, পদ্ধতি খুব কঠিন নয়। ছবি: ফ্রিপিক।
শীতকাল জুড়েই নানা উৎসব-অনুষ্ঠান লেগে থাকবে। বড়দিন, নতুন বছরের উদ্যাপন তো আছেই, এই সময়ে বিয়েবাড়িও থাকবে অনেক। বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চলেছেন যিনি, তিনি শীতের কাঁপুনি উপেক্ষা করে রূপচর্চায় মেতে উঠবেন। বিয়ে বাড়িতে কাজের শেষ থাকে না। সে সব সামলে পার্লারে ঢুঁ মারা খুবই কষ্ট কর হয়ে ওঠে। কিন্তু বিয়ের সন্ধ্যায় কনের ত্বক ঝলমলে না দেখালেও চলবে না। তাই আগে থেকে রূপচর্চা শুরু করতে না পারলে ত্বক মসৃণ ও জেল্লাদারও হবে না। তা হলে উপায়? ‘বডি স্পা’ করে নিতে পারেন বাড়িতেই। তাতে খরচও কম হবে এবং সময়ও বাঁচবে।
বাড়িতে ‘স্পা’ করবেন কী ভাবে?
বডি স্পা ত্বক সুন্দর তো করেই, সঙ্গে র্যাশ, পিগমেন্টেশনের মতো সমস্যাও নিমেষে উধাও হয়ে যায়। ধুলোময়লা জমে নিষ্প্রাণ ত্বক নিমেষে জেল্লাদার হয়ে ওঠে। আর শুধু কি তাই, মনের চাপও কমে। মন অনেক সতেজ ও ফুরফুরে হয়।
ত্বকের ধরনের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরনের প্যাক লাগাতে পারেন
ওট্মিল, দই, হলুদ বাটা, মধু একসঙ্গে ভাল করে মিশিয়ে সারা শরীরে ঘষে ঘষে লাগান। শুকিয়ে গেলে ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকের মৃত কোষ ঝরে যাবে। হলুদ বাটা ত্বকের দাগছোপ তুলে দেবে। মধু ত্বককে ময়েশ্চরাইজ় করার পাশাপাশি ত্বককে নরম রাখতেও সাহায্য করবে। সব শেষে অলিভ অয়েল দিয়ে ভাল করে সারা গা মালিশ করে নিন।
বেসন, লেবুর রস ১ চা-চামচ, জল, লাল চন্দনের পাউডার মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এই প্যাক খুবই উপকারী। ত্বকে কোনও দাগ থাকলে চলে যায়, টোনিংয়েরও কাজ করে। এই প্যাক খুবই কম সময়ে ত্বককে উজ্জ্বল করে।
কাঠবাদামের প্যাকও খুব ভাল। সারা রাত কাঠবাদাম ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন সকালে সেগুলি বেটে নিন। তার পর তাতে একটু দুধ মেশান। সারা মুখে ভাল করে মালিশ করে নিন। যে কোনও ত্বকের জন্যই প্যাকটি ভাল।
বডি র্যাপও জরুরি
বডি স্পা-এর অন্যতম অঙ্গ হল বডি র্যাপ। অনেক সময় হার্বাল বডি র্যাপ ব্যবহার করা হয়। আবার স্টিমও দেওয়া হয়। এতে বন্ধ রোমকূপ খুলে যায়। বডি র্যাপে শুধু ত্বক পরিষ্কারই হয় না, শরীর থেকে টক্সিন বা দূষিত পদার্থও বেরিয়ে যায়।
ক্লিনজ়িং
বেসন, দুধ আর হলুদগুঁড়ো মিশিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন তৈলাক্ত ত্বকের আদর্শ ক্লিনজ়ার। মিশ্রণ মুখে লাগিয়ে ১ মিনিট অপেক্ষা করে ভাল ভাবে ঘষে তুলে ফেলুন। স্বাভাবিক, শুষ্ক এবং মিশ্র ত্বকের জন্য ঠান্ডা দুধে তুলো ডুবিয়ে পুরো মুখ মুছে নিন। মিনিট পাঁচেক অপেক্ষা করে বার কয়েক জলের ঝাপটা দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
টোনিং
গোলাপজল বাড়িতে রাখুন। একটি স্প্রে বোতলে গোলাপজল ভরে মুখে স্প্রে করলে তা টোনারের কাজ করবে। পাশাপাশি একটি বোতলে জল ভরে তাতে শশা ছোট ছোট টুকরো করে ফেলে দিন। সেই জলও মুখ ধোয়ার জন্য ব্যবহার করেত পারেন। দিনে যত বার মুখ ধোয়া হচ্ছে, তত বার এটি ব্যবহার করা হলে ত্বক স্বাভাবিক ভাবেই ‘ডিটক্স’ হবে।
ময়েশ্চারাইজ়িং
মধু, অ্যালোভেরা জেল এবং সামান্য গ্লিসারিন মিশিয়ে রাখুন। সকালে পরিষ্কার ত্বকে এই মিশ্রণ লাগিয়ে মিনিট দশেক পর ধুয়ে নিন। যদি ত্বক শুষ্ক হয়, সে ক্ষেত্রে মধু না মিশিয়ে বাকি দুই উপকরণের মিশ্রণ ব্যবহার করুন। গ্লিসারিনের পরিবর্তে কয়েক ফোঁটা আমন্ড অয়েল বা অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিতে পারেন।