অনেক কিছু ব্যবহার করেও চুলের স্বাস্থ্য ফেরেনি? ছবি: সংগৃহীত।
বাজারে নানা ব্র্যান্ডের শ্যাম্পু, সিরাম, তেল, কন্ডিশনারের ছড়াছড়ি। একে একে অনেক কিছু ব্যবহার করা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সমস্যা আর যাচ্ছে কই! সেই চুল পড়া, সেই খুশকি, সেই চুলের ডগা ফাটা, জট— সমস্যা যেই কে সেই। অনেক কিছু ব্যবহার করেও চুলের স্বাস্থ্য ফেরেনি? পরখ করে দেখতে পারেন নারকেল তেলের এই পাঁচ ঘরোয়া মাস্ক।
চুল পড়া একটি সাধারণ সমস্যা। দূষণ বা মানসিক চাপ অথবা যত্নের জন্য সময়ের অভাব, চুল পড়ার অভিজ্ঞতা সত্যিই খারাপ। আর করোনা পরবর্তী সময়ে তো এই সমস্যা আরও বেড়েছে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ব্যবহার করতে পারেন নারকেল তেল। তবে শুধু তেল মাখলে হবে না। তার সঙ্গে মেশাতে হবে আরও কিছু।
নারকেল তেলে থাকে লরিক অ্যাসিড। যা মাথার ত্বকের জন্য ভীষণ উপকারী। চুল পড়া কমাতেও সাহায্য করে। নারকেল তেলের সঙ্গে যদি ঠিকঠাক ভাবে কয়েক’টি জিনিস মিশিয়ে ব্যবহার করেন, তাহলে চুলের হরেক সমস্যা মিটবে এই এক তেলেই।
নারকেল তেল ও মধুর মাস্ক:
চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে এবং চুলের জেল্লা করতে মধু ভীষণ উপকারী। তার সঙ্গে নারকেল তেল মিশিয়ে হেয়ার মাস্ক তৈরি করুন। ফল পাবেনই। একটি পাত্রে ১ টেবিল চামচ উষ্ণ নারকেল তেল এবং ১ টেবিল চামচ মধু নিন। সমপরিমাণ এই মিশ্রণটি ভাল করে গুলে নিন। এই হেয়ার মিশ্রণটি মাথার ত্বকের পাশাপাশি আপনার চুলেও লাগিয়ে ফেলুন। ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন। আরও ভাল ফলাফলের জন্য উষ্ণ জল দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলতে পারেন।
নারকেল তেল এবং লেবুর মাস্ক:
লেবুতে আছে ভিটামিন-সি। যা কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে। কোলাজেন চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তা ছাড়া লেবুর অ্যান্টি ফাঙ্গাল গুণ তৈলাক্ত চুলের জন্য ভীষণ উপকারী। মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখে। এই মাস্কটি তৈরি করতে একটি পাত্রে ১ টেবিল চামচ নারকেল তেল নিয়ে ১ টেবিল চামচ লেবুর রস মেশান। মিশ্রণটি শুকনো চুলে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। ফল পাবেন হাতেনাতে।
নারকেল তেল ও কলার মাস্ক:
ঘরোয়া উপায়ে সহজ হেয়ার মাস্ক তৈরি করা যায় নারকেল এবং কলা দিয়ে। কলা চুলকে নরম করে। চুলের ডগা ফাটা রোধ করে। এই মাস্কের জন্য ব্লেন্ডারে অর্ধেক কলা এবং ১ টেবিল চামচ নারকেল তেল নিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। তার পর একটি পাত্রে নিয়ে নিন। মিশ্রণটি আঙুলে নিয়ে ভাল করে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। মিনিট ২০ পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
নারকেল তেল এবং ডিমের কুসুমের মাস্ক:
আপনার চুল যদি পাতলা হয়, তা হলে এই মাস্কটি আপনার জন্য উপকারী। ডিমের কুসুমে ভিটামিন এবং প্রোটিনের পরিমাণ বেশি। যা চুলের ক্ষতি রোধ করে। একটি পাত্রে একটি ডিমের কুসুমের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ নারকেল তেল মেশান। ভাল করে গুলে নিয়ে ভেজা চুলে এই মাস্কটি লাগান। এর পর ২০ মিনিট রেখে ঠান্ডা জলে চুল ধুয়ে ফেলুন।
আমলকি, শিকাকাই এবং নারকেল তেলের মাস্ক:
আমলকি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং ভিটামিন সি-তে সমৃদ্ধ। চুলের স্বাস্থ্য ফেরাতে এর জুড়ি মেলা ভার। চুলের বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে আমলকি। অন্য দিকে, শিকাকাই চুলের ডগা ফাটা রোধ করে গোড়াকে মজবুত করে। নারকেল তেলের সঙ্গে এই দু’টিকে মিশিয়ে নিলেই তৈরি হবে এমন মাস্ক, যা আমাদের চুলকে ভিতর থেকে পুষ্টি জোগাবে। ১ টেবিল চামচ আমলকির রস এবং শিকাকাই পাউডারের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ নারকেল তেল মেশান। সব এক সঙ্গে মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। মিশ্রণটি ছেঁকে ঠান্ডা হতে দিন। এই মাস্কটি চুলে ম্যাসাজ করে সারা রাত রাখুন। পর দিন সকালে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কয়েক দিন নিয়মিত ব্যবহার করে দেখুন চুলের জেল্লা কাকে বলে।