৪২-এ স্নাতক হলেন চার সন্তানের মা। —প্রতীকী ছবি।
স্কুল পাশ করার পর কেটে গিয়েছে ২৪ বছর। নানা কারণে আর পড়াশোনা করা হয়নি। কিন্তু পড়াশোনা করার অদম্য ইচ্ছা ছিল। আর সেই ইচ্ছা হারিয়ে দিল বাকি সব প্রতিবন্ধকতাকে। চার সন্তান, সংসারের দায়িত্ব সামলেও স্নাতক হলেন আমেরিকার বাসিন্দা ৪২ বছর বয়সি কেরি আন হেমানস। স্ট্যাফোর্ডশায়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাধারণ স্বাস্থ্য এবং সমাজ বিষয়ে স্নাতক পাশ করেছেন তিনি। হেমানস অবশ্য তাঁর সাফল্যের সমস্ত কৃতিত্ব দিয়েছেন বড় ছেলে ডেনরিচকে। হেমানস জানিয়েছেন, ডেনরিচ না থাকলে তিনি কোনও ভাবেই এই পথ পেরোতে পারতেন না।
স্কুলের গণ্ডি পেরোনোর কয়েক বছরের মধ্যেই বিয়ে হয়ে যায় হেমানসের। তার পর একে চারটি সন্তানও হয়। এত কিছুর মধ্যে তাঁর পড়াশোনা করার ইচ্ছা কোথায়ও ঢাকা পড়ে যায়। তিনি মন থেকে একেবারে মুছে যায়নি। সংসার, চার সন্তানের দেখাশোনা করার পর যেটুকু সময় পেতেন পড়াশোনার মধ্যেই ডুবে থাকতেন। তবে সেগুলি সবই সাহিত্যধর্মী বই। সে সব লেখা তাঁকে সাময়িক তৃপ্তি দিলেও শান্তি দিতে পারেনি। হেমেনস ছোটবেলা থেকে মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি জানতেন তার জন্য সঠিক পড়াশোনা দরকার। কোন বিষয়ে পড়াশোনা করলে তিনি সমাজের জন্য কাজ করতে সক্ষম হবেন, সেটা নিয়েই ভেবে যেতেন। এই ভাবনা সক্রিয় হয়ে ওঠে কোভিডের সময়। করোনা ভাইরাসের হানায় যখন চারিদিক মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়, তখনই ঠিক করেছিলেন সাধারণ স্বাস্থ্য নিয়ে পড়াশোনা করবেন।
হেমেনস নতুন করে পড়াশোনা শুরু করুক পরিবারের কেউ তা চাননি। অগত্যা লুকিয়েই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। তবে পাশে পেয়েছিলেন বড় ছেলেকে। ডেনরিচ বছর কয়েক আগে নিজেও একই বিষয় নিয়ে স্নাতক হয়েছেন। ফলে মাকে পড়ানোর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন তিনি। তবে পড়াশোনা থেকে কলেজ যাওয়া-আসা— সবটাই চলত গোপনে। এ জন্য বা়ড়িতে বেশ কয়েক বার মিথ্যেও বলতে হয়েছে। তখন খারাপ লাগলেও স্নাতক পাশ করার পর অবশ্য আর কোনও আপসোস নেই হেমেনসের। তিনি আর বিষয়টিকে লুকিয়ে রাখতেও চান না। স্নাতক পাশ করেই পড়াশোনায় ইতি টানছেন না বলে জানিয়েছেন হেমেনস। উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন ইতিমধ্যেই।