ভরপেট খেয়ে উপুড় শুলে কি আদৌ শরীরের কোনও ক্ষতি হয়? —প্রতীকী ছবি।
পুজোর মাস দুয়েক আগেই পূজাবার্ষিকী হাতে এসে গিয়েছে। একসঙ্গে এতগুলো বই তো একবারে পড়ে ওঠা সম্ভব নয়। ছুটির দিনে অল্প অল্প করে পড়ে ফেলার পরিকল্পনা রয়েছে। দুপুরবেলা মাংস-ভাত খেয়ে, উপুড় হয়ে উপন্যাস পড়তে পড়তে অন্য এক জগতে হারিয়ে যাওয়া। তবে অনেকেই বলেন, পেটের উপর চাপ দিয়ে শোয়ার অভ্যাস না কি আদতে ভাল নয়। তা কোমর এবং ঘাড়ের ক্ষতি করে। অবশ্য শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা হলে বা নাক ডাকার সমস্যা থেকে রেহাই পেতে অনেকে এই ভঙ্গিতে শুতে পছন্দ করেন। তা হলে কোন বিষয়টিকে গুরুত্ব দেবেন?
চিকিৎসকেরা বলছেন, অতিমারি অর্থাৎ করোনার সময়ে অনেকেই হয়তো খেয়াল করেছেন, শ্বাসযন্ত্রের সমস্যায় আরাম পেতে বহু রোগীকেই উপুড় করিয়ে শুইয়ে রাখা হত। অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে গেলে তৎক্ষণাৎ এই টোটকায় অনেকেই আরাম পেয়েছিলেন। তবে নিয়মিত এই ভঙ্গিতে শোয়ার খারাপ দিকও রয়েছে। তাঁদের মতে, প্রশ্বাস নেওয়ার সময়ে ফুসফুস যতটা ফুলে ওঠার কথা, উপুড় হয়ে শুলে ততটা জায়গা পেতে পারে না। ফলে শ্বাস নিতে সমস্যা হতেই পারে। চিকিৎসার পরিভাষায় যাকে ‘হাইপোপ্লাসিয়া’ বলা হয়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে এই হাইপোপ্লাসিয়া মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। যা থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।
আবার হাড়ের চিকিৎসকেরা বলছেন, কেউ যদি বালিশে মাথা রেখে উপুড় হয়ে শোয়া অভ্যাস করেন, সে ক্ষেত্রে ঘাড়ে চোট লাগার সম্ভাবনা থেকেই যায়। দেহের গোটা কাঠামো ধরে রাখে যে সুষুম্নাকাণ্ডটি, তার শুরুটা হয় মস্তিষ্কের খানিকটা পর থেকেই এবং তার সঙ্গে যোগ থাকে কোমরের। তাই বালিশের উপর ঘাড় রেখে তা এদিক-ওদিক ঘোরালে লাম্বার স্পাইন অর্থাৎ মেরুদণ্ডের একেবারে শেষপ্রান্তের ডিস্কে আঘাত লাগার সম্ভাবনা থেকেই যায়। ভারী কাজ না করেও ঘাড়, কোমরের ব্যথায় ভুগতে পারেন। তা ছাড়া ভরপেট খেয়ে যদি কেউ পাকস্থলীর উপর চাপ দিয়ে, উপুড় হয়ে ঘুমোতে যান, সে ক্ষেত্রে হজমের গন্ডগোলও হতে পারে।