গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
কয়েক মাস আগেই প্রসাদী লাড্ডুতে পশুচর্বি মেশানোর অভিযোগ ঘিরে বিতর্কের জেরে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশের (যা রায়লসীমা অঞ্চল নামে পরিচিত) তীর্থশহরে। এ বার বৈকুণ্ঠ একাদশীর দর্শন শুরুর আগেই মৃত্যুর ছায়া তিরুপতিতে। বুধবার রাতে সেখানে ভক্তদের ভিড়ে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ছ’জনের। গুরুতর আহতের সংখ্যা ১৫।
অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু বুধবার রাতেই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছিলেন। ‘তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থানম দর্শনম’ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান বিআর নায়ডুর কাছে টেলিফোনে পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালেই তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী, আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা মৃত পুণ্যার্থীদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন।
তিরুপতি মন্দিরের দশ দিনের (১০-১৯ জানুয়ারি) বৈকুণ্ঠ একাদশী এবং বৈকুণ্ঠদ্বার দর্শনের টিকিট সংগ্রহের জন্য বুধবার সকাল থেকেই দীর্ঘ লাইন পড়েছিল ভক্তদের। প্রকাশিত একটি খবরে দাবি, সন্ধ্যার সময় ‘বৈকুণ্ঠদ্বার দর্শন’ টিকিটকেন্দ্রের সামনে লাইনে ছিলেন চার হাজারেরও বেশি মানুষ। বৈরাগী পট্টিতা পার্কের এমজিএম হাইস্কুল থেকে টোকেন বিলির সময় আচমকাই সেখানে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। চন্দ্রবাবু সরকারের দাবি, বৈকুণ্ঠ একাদশী উপলক্ষে ‘পর্যাপ্ত পুলিশি ব্যবস্থা’ ছিল। তা সত্ত্বেও কী ভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ইতিমধ্যেই। অভিযোগ, বিপুল সংখ্যক ভক্তের জন্য খোলা ছিল মাত্র একটি কাউন্টার। হুড়োহুড়ি বাড়ার সেটিই মূল কারণ। পুলিশও ভিড় নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ছিল না বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভক্তসংখ্যার নিরিখে তিরুপতি মন্দির দেশের মধ্যে শীর্ষস্থানীয়। পাশাপাশি, সেখানকার ভিড় সামলানোর ব্যবস্থাপনাও বহুল প্রশংসিত। বৈকুণ্ঠ একাদশী উৎসবের দর্শনপর্বের জন্য বুধবার ১ লক্ষ ২০ হাজার টোকেন বিলির প্রস্তুতি ছিল মন্দির কর্তৃপক্ষের। ট্রাস্টের চেয়ারম্যান নায়ডু ঘটনার জন্য ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি স্বীকার করে নিয়েছেন, তাঁদের হিসাবের তুলনায় ভিড়ের বহর ছিল অনেক বেশি। তিনি জানান, লাইনে দাঁড়ানো এক মহিলা হঠাৎ অসুস্থ বোধ করায় তাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ করে দিতে স্কুলের একটি গেট খোলা হয়েছিল। সে সময় ভক্তদের একাংশ জোর করে ভিতরে ঢুকতে গেলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।