বুধবার রাতে তিরুপতি মন্দির চত্বরের সামনে পুণ্যার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। ছবি: পিটিআই।
বৈকুণ্ঠ দ্বার দর্শনের জন্য দেশের নানা প্রান্ত থেকে কয়েক হাজার দর্শনার্থী হাজির হয়েছিলেন তিরুপতিতে। প্রতি বছরই এই সময় দশ দিন ধরে বিগ্রহের বিশেষ দর্শনের আয়োজন করেন তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থানম (টিটিডি)। এ বছর ১০ জানুয়ারি থেকে সেই বিশেষ দর্শনের আয়োজন করা হয়েছিল। শুক্রবার থেকে সেই বিশেষ দর্শনে দেশের নানা প্রান্ত থেকে হাজির হয়েছিলেন কয়েক হাজার পুণ্যার্থী।
মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে পুণ্যার্থীদের জন্য কুপনের ব্যবস্থা করা হয়। প্রত্যেক পুণ্যার্থী যাতে কুপন পান তার জন্য বেশ কিছু কাউন্টারও খোলা হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, অন্য বছরের তুলনায় এ বার ভিড় ছিল অনেক বেশি। তাই বুধবার সকাল থেকেই পুণ্যার্থীদের কুপন দেওয়া শুরু হয়। ভিড় ক্রমশ বাড়তে থাকে। কুপন পাওয়ার জন্য লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছিল পুণ্যার্থীদের।
মন্দির কর্তৃপক্ষের দাবি, ভিড় মসৃণ করার জন্য এবং বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয়, তার জন্য ৯৪টি কাউন্টার খোলা হয়েছিল। সেখান থেকেই কুপন দেওয়া হচ্ছিল। বুধবার রাত হতেই ভিড়ের চাপ আরও বাড়ে। টিটিডি-র এক সদস্যের দাবি, বৈরাগী পাঠক পার্কের কাছে একটি কাউন্টারে লাইনে দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকায় এক মহিলা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে ভিড় থেকে সরিয়ে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় গেট খোলা হয়েছিল। আর সেই সুযোগেই পুরো ভিড় ওই গেট দিয়ে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ে। আর তাতেই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। যে মহিলা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, ভিড়ের চাপে আর পাঁচ জনের সঙ্গে তাঁরও মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আহত হয়েছেন ৪০ জন।
টিটিডি সূত্রে খবর, ১০-১২ জানুয়ারি, প্রথম তিন দিন ১ লক্ষ ২০ হাজার কুপন বিতরণের আয়োজন করা হয়েছিল। বিনামূল্যে বিগ্রহ দর্শনের জন্য এই কুপন দেওয়া হচ্ছিল, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘সেবা দর্শন’। বিষ্ণু নিবাসম, শ্রীনিবাসম, ভূদেবী কমপ্লেক্স-সহ ৯৪টি জায়গায় কাউন্টার খোলা হয়। কিন্তু তার পরেও কী ভাবে এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হল, পদপিষ্টের মতো ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে জোরালো হতে শুরু করেছে প্রশ্ন।
টিটিডি-র বোর্ড সদস্য ভানুপ্রকাশ রেড্ডি জানিয়েছেন, এই ধরনের ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। তবে যা হয়েছে, তার জন্য প্রশাসনিক গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন তিনি। পরোক্ষে পুলিশ-প্রশাসনকেই এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করেছেন। এই বিশেষ দর্শনের জন্য তিরুপতি এবং তিরুমালায় ৩০০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। তার মধ্যে ১২০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল তিরুপতিতে। আর ১৮০০ তিরুমালায়।