বিনেশ ফোগট। — ফাইল চিত্র।
শম্ভু সীমানায় কৃষকদের আন্দোলন ২০০ দিনে পা রাখল। সেই উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে মহাসমাবেশের। শনিবার সেখানে যোগ দিচ্ছেন কুস্তিগির বিনেশ ফোগাটও। প্রতিবাদী সভার আয়োজন করা হয়েছে খনৌরি এবং রতনপুরা সীমানাতেও।
ভাগ্যের ফেরে প্যারিস অলিম্পিকে নিশ্চিত সোনা খুইয়ে আসার পর বিনেশের নাম দেশের সবার মুখে মুখে ফিরছে। বিনেশকে কুস্তির রিংয়ের পাশাপাশি বার বার দেখা গিয়েছে নানা আন্দোলনে। যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত সর্বভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের তৎকালীন প্রধান ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের গ্রেফতারির দাবিতে বছরখানেক আগে রোদ-জল মাথায় নিয়ে টানা ৪০ দিন যন্তর মন্তরের ধর্নামঞ্চে কাটিয়েছেন। দাবি তুলেছেন ন্যায়বিচারের। সঙ্গে ছিলেন সাক্ষী মালিক, বজরং পুনিয়ারাও। নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনের দিনে রাজধানীর রাস্তা থেকে তাঁদের টেনেহিঁচড়ে প্রিজ়ন ভ্যানে তুলেছিল দিল্লি পুলিশ। অপমানে, লজ্জায় হরিদ্বারের গঙ্গায় ভাসিয়ে দিতে চেয়েছিলেন পদক। সমাজমাধ্যমে জুটেছিল ‘দেশদ্রোহী’র তকমাও। তবু দমেননি বিনেশ। সব অপমানের জবাব দিতে নতুন উদ্যমে নিজেকে তৈরি করেছেন প্যারিস অলিম্পিকের জন্য। এ হেন বিনেশ মাত্র ১০০ গ্রাম ওজন বেশি হওয়ায় অলিম্পিকের ফাইনাল থেকে বাতিল হয়ে যাওয়ার পর তাঁর জন্য চোখের জল ফেলেছেন নিন্দকেরাও।
কৃষক আন্দোলন নিয়েও বারবার মুখ খুলেছেন, সমর্থন জানিয়েছেন। সূত্রের খবর, শনিবার শম্ভু সীমানার মহাসমাবেশে দেখা যেতে পারে বিনেশকেও। অগস্টে বিনেশ প্যারিস থেকে দেশে ফেরার পর থেকেই নানা মহলে জল্পনা শোনা যাচ্ছে, কংগ্রেসে যোগ দিতে পারেন তিনি। তবে তিনি অবশ্য এ সব জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে জানিয়েছেন, এখনই সে রকম কোনও পরিকল্পনা নেই তাঁর।
প্রসঙ্গত, ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের (এমএসপি) দাবিতে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ফের আন্দোলনে নেমেছেন কৃষকেরা। কৃষক সংগঠনগুলির ঐক্যমঞ্চ সংযুক্ত কিসান মোর্চার দাবি, এমএসপি নিয়ে চাষিদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে কেন্দ্র। তারপর মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড এবং জম্মু-কাশ্মীরের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ফের দ্বিগুণ উৎসাহে শুরু হয় আন্দোলন। প্রসঙ্গত, কৃষকদের আন্দোলনের জেরেই চলতি বছরের লোকসভা ভোটে পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান ও মহারাষ্ট্রের বহু গ্রামীণ কেন্দ্র খুইয়েছে বিজেপি। তাই এ বারও ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে বিজেপির ‘মুখোশ খুলে দিতে’ আন্দোলনে নেমেছেন কৃষকেরা। এই রাজ্যগুলিতে বিজেপির ‘কৃষক-বিরোধী নীতি’র বিরুদ্ধে আয়োজন করা হয়েছে একাধিক পদযাত্রা, জাঠা ও মহাপঞ্চায়েতের। সেই আন্দোলনই এ বার ২০০ দিনে পা রাখল।