Uniform Civil Code

দেশে প্রথম উত্তরাখণ্ডে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি? মুখ্যমন্ত্রী ধামী ডাকছেন বিধানসভার অধিবেশন

উত্তরাখণ্ডে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকরের আইনি প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখতে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জনা প্রকাশ দেশাইয়ের নেতৃত্বে একটি কমিটি গড়েছিল সে রাজ্যের সরকার।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
দেহরাদূন শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৩ ১৩:১৭

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

উদ্যোগী হয়েছিলেন গত বছরেই। এ বারে উত্তরাখণ্ডে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করতে চলেছেন সে রাজ্যের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী পুস্কর সিংহ ধামী। সরকারি সূত্রের খবর, বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে তৈরি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি সংক্রান্ত বিল পাশের উদ্দেশ্যে আগামী সপ্তাহেই উত্তরাখণ্ড বিধানসভার অধিবেশন ডাকা হচ্ছে।

Advertisement

উত্তরাখণ্ডের বিধানসভা ভোটে বিজেপি জিতলেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ধামী। গত বছর ভোটে জিতে ক্ষমতায় ফেরার পরেই সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষায় তৎপর হন তিনি। উত্তরাখণ্ডে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকরের আইনি প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখতে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জনা প্রকাশ দেশাইয়ের নেতৃত্বে একটি কমিটি গড়েছিল সে রাজ্যের সরকার।

উত্তরাখণ্ড সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, সব ধর্মের মানুষের জন্য বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, জমি-সম্পত্তি এবং উত্তরাধিকার সংক্রান্ত একই আইন প্রচলনের রূপরেখা তৈরি করবে ওই কমিটি। কমিটির প্রধান বিচারপতি (অবসরপ্রাপ্ত) দেশাই শনিবার বলেন, ‘‘উত্তরাখণ্ডের জন্য অভিন্ন দেওয়ানি বিধির খসড়া তৈরি করা হয়েছে। দ্রুত তা রাজ্য সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে।’’ সূত্রের খবর, সুপারিশের খসড়ায় ধর্ম নির্বিশেষে পুরুষদের বহুবিবাহ বন্ধ এবং একত্রবাস নথিভুক্ত করার আইনের কথা বলা হয়েছে।

এই কমিটিতে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি প্রমোদ কোহলি, সমাজকর্মী মনু গৌড়, অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার শত্রুঘ্ন সিংহ এবং দুন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরেখা ডাঙ্গওয়ালও ছিলেন। বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, রামমন্দির, কাশ্মীর থেকে ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের পরে এ বার দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার পথে এগোতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। এ ক্ষেত্রে লোকসভা ভোটের আগে ধাপে ধাপে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি থেকে সেই প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে।

তবে রাজ্যগুলির পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় স্তরেও ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে ‘সক্রিয়তা’ শুরু হয়েছে। গত ১৪ জুন ২২তম আইন কমিশনের তরফে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর বিষয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন এবং আমজনতার মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল এক মাস। পরে তা কয়েক দফায় বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। ঘটনাচক্রে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে ২২তম আইন কমিশনের মেয়াদ প্রায় ১৮ মাস বাড়িয়ে ২০২৪ সালের ৩১ অগস্ট পর্যন্ত করেছিল সরকার।

প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বলবীর সিংহ চৌহানের নেতৃত্বাধীন ২১তম আইন কমিশনের মত ছিল, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করে বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, উত্তরাধিকারের মতো পারিবারিক বিষয়ে হিন্দু, মুসলমান, শিখ, খ্রিস্টান, পার্সি, জৈন সকলের জন্য একই আইন চালু করার প্রয়োজন নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও লোকসভা ভোটের আগের অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল পাশ করে মোদী সরকার হিন্দু ভোটের মেরুকরণ করাতে চাইছে বলে বিরোধীদের একাংশের অভিযোগ। কিন্তু তা আইনে পরিণত করতে গেলে সংখ্যালঘুদের পাশাপাশি জনজাতি সমাজের দিক থেকেও বিজেপিকে বিরোধের মুখে পড়তে হবে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা।

Advertisement
আরও পড়ুন