US India Relation

ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ‘র’-কে নিষিদ্ধ করার সুপারিশ মার্কিন ফেডারেল কমিশনের! রিপোর্টে নিশানা প্রধানমন্ত্রী মোদীকেও

ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ‘র’-কে নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছে আমেরিকার ফেডারেল সরকার গঠিত কমিশন। মার্কিন সরকারের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত ওই কমিশনের বার্ষিক রিপোর্টে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রসঙ্গও উঠে এসেছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৫ ১৬:২৫
ভারতের গুপ্তচর সংস্থা ‘র’ নিষিদ্ধ করার সুপারিশ মার্কিন কমিশনের।

ভারতের গুপ্তচর সংস্থা ‘র’ নিষিদ্ধ করার সুপারিশ মার্কিন কমিশনের। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ‘রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং’ (র)-কে নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করল আমেরিকার ফেডারেল সরকার গঠিত কমিশন। মঙ্গলবার আমেরিকার আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত কমিশন (ইউএসসিআইআরএফ) তাদের বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সংবাদ সংস্থা ‘রয়টার্স’ জানিয়েছে, ওই রিপোর্টে ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ‘র’-কে নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছে তারা। ওই মার্কিন কমিশনের দাবি, শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হত্যার চেষ্টায় ‘র’-এর যোগ রয়েছে। সেই কারণেই এই সুপারিশ করেছে তারা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়েও মন্তব্য করা হয়েছে ওই রিপোর্টে।

Advertisement

মার্কিন প্রশাসনের অধীনস্থ এই কমিশনটির মূল কাজ হল বিভিন্ন দেশের ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত বিষয়ের উপর নজর রাখা। সেইমতো ধর্মীয় নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে আমেরিকার সরকারকে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করে এই কমিশন। অর্থাৎ এটি হল মার্কিন প্রশাসনকে পরামর্শ দেওয়ার একটি প্রতিষ্ঠান। তবে কমিশনের সুপারিশ যে আমেরিকার প্রশাসনকে মানতেই হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের সঙ্গে কথা বলে রয়টার্স জানিয়েছে, এশিয়া তথা বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে চিনের প্রভাব ঠেকাতে ভারতকে একটি পছন্দের বিকল্প হিসাবে দেখে আমেরিকা। ফলে, কমিশনের সুপারিশমতো ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থাকে আমেরিকার প্রশাসন নিষিদ্ধ করে দেবে, সেই সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।

বস্তুত, খলিস্তানপন্থী নেতা গুরপতবন্ত সিংহ পন্নুনকে ২০২৩ সালে হত্যার ষড়যন্ত্রে ‘র’-এর এক প্রাক্তন কর্তার যোগ পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করে আমেরিকা। পন্নুন আমেরিকার নাগরিক। মার্কিন তদন্তকারী সংস্থা এফবিআই দাবি করেছিল, ভারতে ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষিত সংগঠন ‘শিখ ফর জাস্টিস’ (এসএফজে)-এর নেতা পন্নুনকে হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন ‘র’-এর প্রাক্তন কর্তা বিকাশ যাদব। যদিও নয়াদিল্লি তখনই জানিয়ে দিয়েছিল, ওই ঘটনার সঙ্গে ভারত সরকারের কোনও যোগ নেই। রয়টার্স অনুসারে, বিকাশ এবং ‘র’, উভয়ের উপরেই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার জন্য সুপারিশ করেছে মার্কিন কমিশন।

পাশাপাশি আমেরিকার ওই সরকারি কমিশনের দাবি, ২০২৪ সালে ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার অবনতি হয়েছে। সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও দাবি ওই কমিশনের। রয়টার্স অনুসারে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর দল বিজেপির প্রসঙ্গেও মন্তব্য করেছে তারা। তাদের দাবি, গত বছরের নির্বাচনী প্রচারের সময়ে সংখ্যালঘুদের বিষয়ে ‘বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার’ করেছেন মোদী এবং বিজেপি। বস্তুত, এর আগে মার্কিন স্বরাষ্ট্র দফতরের মানবাধিকার এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত কিছু রিপোর্টেও সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতির কথা বলা হয়েছিল। যদিও নয়াদিল্লি সেগুলিকে ‘ভীষণ ভাবে একপেশে’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী মোদী ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে বার বার দাবি করেছেন, তিনি কোনও বৈষম্য করেন না এবং তাঁর সরকারের প্রকল্পগুলি সকল সম্প্রদায়ের মানুষের কথা ভেবে তৈরি করা। আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত আমেরিকার কমিশনের এই রিপোর্টের প্রেক্ষিতে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে রয়টার্স। তবে এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

Advertisement
আরও পড়ুন