(বাঁ দিকে) মহম্মদ সিরাজ এবং শুভমন গিলের (ডান দিকে) উচ্ছ্বাস। ছবি: পিটিআই।
এ বারের আইপিএলের প্রথম জয় পেল গুজরাত টাইটান্স। প্রতিযোগিতা শুরুর আগে শুভমন গিল ৩০০ রানের কথা বলেছিলেন। ঘরের মাঠে দ্বিতীয় ম্যাচেও সেই রানের ধারেকাছে যেতে পারল না তাঁর দল। অহমদাবাদের ২২ গজে প্রথমে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে গুজরাত টাইটান্সের ইনিংস শেষ হয় ৮ উইকেটে ১৯৬ রানে। তাতে অবশ্য জিততে অসুবিধা হয়নি শুভমনদের। রান তাড়া করতে নেমে মুম্বই করল ৬ উইকেটে ১৬০। টানা দ্বিতীয় ম্যাচ হারল পাঁচ বারের আইপিএল চ্যাম্পিয়নেরা। ৩৬ রানের জয়ে স্বস্তি ফিরল শুভমনদের শিবিরে।
জয়ের জন্য ১৯৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই রোহিত শর্মার (৮) উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় মুম্বই। চাপ আরও বাড়ে অন্য ওপেনার রায়ান রিকেলটনও (৬) দ্রুত আউট হয়ে যাওয়ায়। পরিস্থিতি কাজে লাগালেন গুজরাতের বোলারেরাও। মহম্মদ সিরাজের জোড়া ধাক্কার পাশাপাশি কাগিসো রাবাডা, ইশান্ত শর্মা, রশিদ খানেরাও নিয়ন্ত্রিত বোলিং করলেন। এতে মুম্বইয়ের ইনিংসে চাপ ক্রমশ বাড়তে থাকে। ৩৫ রানে ২ উইকেট হারানোর পর মুম্বইয়ের ইনিংসের হাল ধরেন তিলক বর্মা এবং সূর্যকুমার যাদব। তিলক করেন ৩৬ বলে ৩৯ রান। মারেন ৩টি চার এবং ১টি ছয়। ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নামা রবিন মিঞ্জ (৩) ব্যর্থ হওয়ায় চাপ আরও বৃদ্ধি পায়।
সূর্যকুমার অবশ্য ভরসা জোগাচ্ছিলেন স্বভাবসিদ্ধ আগ্রাসী ব্যাটিং করে। তবু মুম্বইয়ের ওভার প্রতি রান তোলার লক্ষ্য ক্রমশ বাড়তে থাকে। ১৫ ওভারের পর মুম্বইয়ের দরকার ছিল ৭৯ রান। হাতে ছিল ৬ উইকেট। সূর্যকুমারের সঙ্গে ২২ গজে ছিলেন হার্দিক পাণ্ড্য। তাঁরাও পারলেন না মুম্বইকে জয় এনে দিতে। সূর্যকুমার ২৮ বলে ৪৮ রান করলেন ১টি চার এবং ৪টি ছয়ের সাহায্যে। হার্দিকের ব্যাট থেকে এল ১৭ বলে ১১ রান। চাপের মুখে বিতর্কে জড়ালেন মুম্বই অধিনায়ক। হতাশায় মাথা গরম করে সাই কিশোরের সঙ্গে অভব্যতা করে বসলেন। শেষ পর্যন্ত মিচেল স্যান্টনার (৯ বলে ১৮) এবং নমন ধীর (১১ বলে ১৮)।
গুজরাতের আঁটসাঁট বোলিংয়ের সামনে প্রয়োজনমতো বড় শট খেলতে পারছিলেন না মুম্বইয়ের ব্যাটারেরা। মাঝের ওভারগুলোয় বেশ ভাল করলেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। গুজরাতের সফলতম বোলার প্রসিদ্ধ ১৮ রানে ২ উইকেট নিলেন। সিরাজের ২ উইকেট ৩৪ রানে। রাবাডার ৪২ রানে ১ উইকেট। ৩৭ রানে ১ উইকেট কিশোরের। মূলত বোলারদের দাপটেই প্রতিযোগিতার প্রথম জয় পেল গুজরাত।
টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন মুম্বই অধিনায়ক হার্দিক। শুভমনকে একদম শুরুতে একটু মন্থর দেখালেও সাই সুদর্শন ছিলেন আগ্রাসী। শুভমনও দ্রুত রান তুলতে শুরু করেন ২২ গজে একটু থিতু হয়ে নিয়ে। হার্দিকের বলে আউট হওয়ার আগে গুজরাত অধিনায়ক ৪টি চার এবং ১টি ছয়ের সাহায্যে ২৭ বলে ৩৮ রান করেন। তিন নম্বরে নেমে জস বাটলারও চালিয়ে খেলার চেষ্টা করেন। তিনি বড় রান পাননি। বাটলারের ব্যাট থেকে এসেছে ২৪ বলে ৩৯ রানের ইনিংস। মারেন ৫টি চার এবং ১টি ছয়। পিচের এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন সুদর্শন। চার নম্বরে নামা শাহরুখ খান (৯) দলকে ভরসা দিতে পারেননি। পাঁচ নম্বরে নেমে আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট করার চেষ্টা করেন শেরফানে রাদারফোর্ড। তিনিও বড় রান পেলেন না। ১১ বলে ১৮ করলেন। সুদর্শন করলেন ৪১ বলে ৬৩ রান। মারলেন ৪টি চার এবং ২টি ছয়। কোনও বল না খেলেই রান আউট হলেন রাহুল তেওতিয়া (শূন্য)।
ইনিংসের শেষ দিকে পর পর তিন বলে (১৮তম ওভারের শেষ বল এবং ১৯তম ওভারের প্রথম ২ বল) তিন উইকেট হারিয়ে খানিকটা খেই হারিয়ে ফেলে গুজরাতের ইনিংস। ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন রশিদ (৬), সাই কিশোর (১)। শেষ পর্যন্ত ৭ রানে অপরাজিত থাকেন রাবাডা। মাঝের ওভারগুলিতে বেশ ভাল বল করলেন হার্দিকেরা। ধারাবাহিক ভাবে উইকেট হারাল গুজরাত। ফলে প্রত্যাশার থেকে ২০-২৫ রান কম করেন শুভমনেরা।
মুম্বইয়ের সফলতম বোলার হার্দিক ২৯ রানে ২ উইকেট নেন। ৩৪ রানে ১ উইকেট ট্রেন্ট বোল্টের। ২৮ রানে ১ উইকেট মুজিব উর রহমানের। দীপক চহারের ১ উইকেট ৩৯ রানের বিনিময়ে। ৪০ রান দিয়ে ১ উইকেট নিলেন সত্যনারায়ণ রাজু।