আগরতলার জলসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
ত্রিপুরার মহিলা এবং যুবরা বামেদের চাঁদাবাজি এবং ঝান্ডাবাজির সরকারকে পাঁচ বছর আগে ‘রেড কার্ড’ দেখিয়েছিলেন। এ বারেও তাঁরা একই পথে হাঁটবেন। সোমবার ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার আস্তাবল ময়দানে বিজেপির জনসভায় এই দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘বামেরা জনগণকে নিজেদের ভৃত্য ভাবতেন।’’
মোদীর বক্তৃতায় সোমবার এসেছে ‘বদল এবং বদলার’ রাজনীতির প্রসঙ্গও। তাঁর দাবি, পাঁচ বছর আগে ত্রিপুরায় ক্ষমতা দখলের পর বদলা নয়, বদলের (পরিবর্তনের) রাজনীতিতেই আস্থা রেখেছে বিজেপি। প্রসঙ্গত, ২০১১-য় পশ্চিমবঙ্গে পরিবর্তনের ভোটের সময় তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘বদলা নয় বদল চাই’ স্লোগান তুলেছিলেন।
১৯৯৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত চলা বাম শাসনে ত্রিপুরায় ভয়ের পরিবেশ ছিল দাবি করে মোদী বলেন, ‘‘সরকার গড়ার পরে ত্রিপুরায় উন্নয়নের পাশাপাশি আমরা ভয়মুক্ত পরিবেশ গড়েছি। তাই ত্রিপুরার স্বার্থেই বিজেপিকে ভোট দিতে হবে।’’ বামেদের সহযোগী কংগ্রেসকেও সোমবার নিশানা করেন মোদী। তাঁর অভিযোগ আশির দশকের শেষ এবং নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় কংগ্রেসের শাসনে ত্রিপুরাকে অরাজকতা এবং দুর্নীতি গ্রাস করছিল। জনসভার পরে আগরতলায় ‘রোড শো’ও করেন মোদী।
বিজেপি জমানায় গরিবদের আবাস নির্মাণ কর্মসূচি রূপায়ণে অনিয়মের অভিযোগের সাফাই দিয়ে মোদী বলেন, ‘‘আমি সকলকে আশ্বস্ত করে বলছি, যাঁরা এখনও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় পাকা বাড়ি পাননি, রাজ্যে পরবর্তী বিজেপি সরকার শপথ নেওয়ার পরে তাঁরা তা পাবেন।’’ সেই সঙ্গে রাজ্যে বৌদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় ফরেন্সিক সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়, ডেন্টাল কলেজ এবং আধুনিক ক্যানসার হাসপাতাল গড়ার কর্মসূচির কথাও বলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরা বিধানসভা ভোটের ইস্তাহারে (পোশাকি নাম ‘সংকল্প পত্র’) বিজেপির প্রথম প্রতিশ্রুতি ‘বালিকা সমৃদ্ধি স্কিম’। বলা হয়েছে, এই প্রকল্পে আর্থিক ভাবে দুর্বল পরিবারে জন্মানো কন্যাসন্তানের জন্য ৫০ হাজার টাকার একটি বন্ড দেওয়া হবে। ঘটনাচক্রে, বাংলায় তৃণমূল সরকারের কন্যাশ্রী প্রকল্পের সঙ্গে এর অনেক মিল খুঁজে পাচ্ছেন অনেকে। ত্রিপুরা বিধানসভার ৬০টি আসনেই ভোট হবে আগামী বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি)। আগামী ২ মার্চ ভোটগণনা হবে উত্তর-পূর্বের অন্য দুই রাজ্য মেঘালয় এবং নাগাল্যান্ডের সঙ্গে।