প্রদ্যোতবিক্রম মাণিক্য দেববর্মন। ফাইল ছবি।
একটি এক টাকার নোট এবং একটি ভোট। ২০০৪ সালে অবিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশের বিধানসভা ভোটে এই স্লোগান তুলে প্রচারে নেমেছিলেন প্রয়াত কংগ্রেস নেতা ওয়াইএস রাজশেখর রেড্ডি। সে বার তেলুগু দেশম প্রধান চন্দ্রবাবু নায়ডুর প্রায় এক দশকের শাসনে ইতি টেনে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি দখল করেছিলেন তিনি। এ বার ত্রিপুরার বিধানসভা ভোটে সেই ‘ক্রাউড ফান্ডিং’-কেই হাতিয়ার করলেন প্রদেশের কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি তথা জনজাতি দল তিপ্রা মথার প্রতিষ্ঠাতা প্রদ্যোতবিক্রম মানিক্য দেববর্মণ।
বুধবার ত্রিপুরা রাজপরিবারের বংশধর তথা জনজাতি সম্প্রদায়ে বুবাগ্রা (রাজা) প্রদ্যোতের ঘোষণা, আমজনতার চাঁদাতেই ভোটে লড়বে তাঁর দল। তিপ্রা মথাকে চাঁদা দেওয়ার আবেদন জানিয়ে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নম্বর-সহ প্রয়োজনীয় তথ্য টুইট করে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমরা একটি ছোট দল এবং আমরা বলেছি যে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাতে হলে স্বচ্ছতা প্রয়োজন। কেউ আমাদের তিপ্রা মথার নির্বাচনী তহবিলে অনুদান দিতে চাইলে এই অ্যাকাউন্টে দিতে পারেন।’’
We are a small party and we have said that to change the system we need transparency. Anyone wanting to donate for our election this is the ac Tipra motha party
— Pradyot_Tripura (@PradyotManikya) February 1, 2023
A/c no:- 503310110010108
IFSC- BKID0005033
BANK OF INDIA
গত সপ্তাহে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ড নিয়ে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পরে একক ভাবে ত্রিপুরার ৬০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৪২টিতে লড়ছে তিপ্রা। প্রদ্যোত জানিয়েছেন, জনজাতি সম্প্রদায়ের স্বার্থরক্ষাই তাঁর প্রাথমিক লক্ষ্য। ত্রিপুরার ৬০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ২০টি জনজাতি সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত। ২০১৮-র বিধানসভা নির্বাচনে এর মধ্যে ১০টিতে বিজেপি এবং ৮টিতে তার সহযোগী দল আইপিএফটি জয়ী হয়েছিল। সিপিএম জিতেছিল ২টিতে। গত কয়েক মাসে আইপিএফটির নেতা-কর্মীদের অধিকাংশই তিপ্রায় যোগ দিয়েছেন। এই পরিস্থিতি তিপ্রাই ওই আসনগুলিতে শাসক জোটের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি তথা রাজপরিবারের বংশধর প্রদ্যোতবিক্রম ২০২১ সালের গোড়ায় জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের অধিকার রক্ষার দাবিতে তিপ্রা ইন্ডিজেনাস প্রোগ্রেসিভ রিজিওনাল অ্যালায়েন্স বা তিপ্রা মথা দল গড়েছিলেন। দলের জনভিত্তির প্রথম প্রমাণ পাওয়া যায় ২০২১ সালের এপ্রিলে। ত্রিপুরা ট্রাইবাল এরিয়াস অটোনমাস ডিসট্রিক্ট কাউন্সিল (এডিসি) নির্বাচনে। বিভিন্ন আদিবাসী বা জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষদের নিয়ে তৈরি তিপ্রা মথা এডিসির ১৮টি আসনে জয়লাভ করে। বাকি ৯টি আসন মিলিত ভাবে পায় বিজেপি এবং তাদের জোট সঙ্গী জনজাতি আইপিএফটি। গত ১ জানুয়ারি আইপিএফটির প্রধান তথা জোট সরকারের মন্ত্রী এনসি দেববর্মার মৃত্যুর পর কার্যত নেতৃত্বহীন হয়ে পড়া দল তিপ্রায় মিশে যাওয়ার জন্য আলোচনাও শুরু করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিজেপির বাধায় তা সম্ভব হয়নি।