পুলিশ মোতায়েন করেও অশান্তি ঠেকানো যায়নি দিল্লি পুরসভায়। ফাইল চিত্র।
প্রথমে ৬ জানুয়ারি। তার পর ২৪ জানুয়ারি। আম আদমি পার্টি (আপ) এবং বিজেপির কাউন্সিলরদের সংঘাতের জেরে দু’বার ভেস্তে গিয়েছে দিল্লি পুরসভার মেয়র নির্বাচন প্রক্রিয়া। এই পরিস্থিতিতে নয়া মেয়র বেছে নিতে আবার সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বসছে দিল্লি পুরসভার অধিবেশন। মেয়র নির্বাচনের তৃতীয় প্রচেষ্টাও ভেস্তে গেলে দেশের রাজধানীতে পুর পরিষেবায় অচলাবস্থা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা।
আপ প্রধান তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের অভিযোগ, বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিতে লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভিকে সাক্সেনা দিল্লির নির্বাচিত সরকারকে উপেক্ষা করে একতরফা ভাবে ১০ জন অল্ডারম্যান নিয়োগ করে মেয়র নির্বাচনে তাঁদের ভোটাধিকার দিয়েছেন। যা দিল্লি পুর আইনের পরিপন্থী। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে মামলাও করা হয়েছে আপের তরফে।
প্রসঙ্গত, ডিসেম্বরের গোড়ায় পুরভোটে ২৫০ আসনের দিল্লি পুরনিগমে ১৩৪টি ওয়ার্ডে জিতেছিল কেজরীওয়ালের আপ। ক্ষমতাসীন বিজেপি নেমে আসে ১০৪-এ। ৯টি ওয়ার্ডে জেতেন কংগ্রেস প্রার্থীরা। তবে দিল্লির মেয়র নির্বাচনে সেখানকার রাজ্যসভার ৩ জন ও লোকসভার ৭ জন সাংসদ এবং ১৪ জন বিধায়কেরও ভোটাধিকার রয়েছে। যার অর্থ, মোট ২৭৪টি ভোটের মধ্যে যে দল ১৩৮টি ভোট পাবে, সেই দলের প্রার্থীই মেয়র পদে জয়ী হবেন।
অঙ্কের হিসাবে ১৩৪ জন কাউন্সিলর, রাজ্যসভার ৩ জন সাংসদ এবং ১৩ জন বিধায়কের ভোট আপের পক্ষে রয়েছে। অর্থাৎ, সকলে ভোট দিলে ১৫০টি ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচনে আপের প্রার্থীরই জেতা উচিত। অন্য দিকে, বিজেপি পুরভোটে জেতে ১০৪টি আসনে। পরে এক জন নির্দল কাউন্সিলর বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এ ছাড়া লোকসভার ৭ সাংসদ এবং ১ জন বিধায়কের ভোট বিজেপির পক্ষে ছিল। সে ক্ষেত্রে সব মিলিয়ে পুরসভায় এই মুহূর্তে নরেন্দ্র মোদীর দলের শক্তি ১১৩।
কিন্তু অঙ্কের হিসাবে জয় অসম্ভব হলেও পদ্ম শিবির মেয়র নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ায় নতুন করে অশান্তি তৈরি হয় দিল্লিতে। এই পরিস্থিতিতে গত ৬ জানুয়ারি এবং ২৪ জানুয়ারি পর পর দু’বার পুরসভার অধিবেশনে লেফটেন্যান্ট গভর্নর নিযুক্ত রিটার্নিং অফিসার তথা বিজেপি কাউন্সিলর সত্য শর্মা ১০ অল্ডারম্যানের শপথে উদ্যোগী হলে বাধা দেন আপ কাউন্সিলররা। গন্ডগোলের জেরে ভেস্তে যায় মেয়র নির্বাচন।