Bengaluru Waterfall Rescue

ঝর্না দেখতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যান, ২২ ঘণ্টা পাথরের ফাঁকে আটকে থাকার পর উদ্ধার তরুণী

২২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জলে থাকার কারণে হামসার হাত-পায়ের চামড়া সাদা হয়ে গিয়েছিল। সারা শরীরেও ছিল ছোট-বড় নানা ক্ষতের দাগ। তবে প্রাথমিক চিকিৎসার পর এখন সুস্থ রয়েছেন তিনি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২৪ ১১:২৮
(বাঁ দিকে, উপরে) বান্ধবীর সঙ্গে তরুণী, নীল জ্যাকেট পরনে। উদ্ধারের পর নিয়ে আসা হচ্ছে তরুণীকে (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে, উপরে) বান্ধবীর সঙ্গে তরুণী, নীল জ্যাকেট পরনে। উদ্ধারের পর নিয়ে আসা হচ্ছে তরুণীকে (ডান দিকে)। ছবি: এক্স।

বন্ধুর সঙ্গে ঝর্না দেখতে গিয়েছিলেন। হঠাৎ পা পিছলে দুই পাথরের ফাঁকে পড়ে যান। সেখানেই বুক পর্যন্ত জলে টানা ২২ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর উদ্ধার হলেন বছর ১৯-এর তরুণী। রবিবার কর্নাটকের তুমাকুরুতে ঘটনাটি ঘটেছে।

Advertisement

দ্য টাইম্‌স অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে, তরুণীর নাম হামসা গৌড়া। রবিবার দুপুরে তুমাকুরুর মাইডালা হ্রদ দেখতে গিয়েছিলেন ওই তরুণী। সঙ্গে ছিলেন বান্ধবীও। হঠাৎই পা পিছলে যায় হামসার। মুহূর্তে দুই পাথরের ফাঁকের ফাটলে পড়ে যান তিনি।

হাসপাতালে হামসা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘আচমকা পা পিছলে তলিয়ে যাই। চোখ খুলে দেখি, চারপাশে শুধু অন্ধকার। শুধু জলের শব্দ ছাড়া কিছু শুনতে পাচ্ছিলাম না।’’ বুক পর্যন্ত জলে দাঁড়িয়ে পাথুরে দেওয়ালে হেলান দিয়ে বাকি রাতটা ওই ভাবেই কাটিয়ে দেন তিনি।

তবে, রবিবার দুপুর থেকেই হামসার খোঁজে শুরু হয়ে গিয়েছিল উদ্ধার অভিযান। দমকল এবং পুলিশের পাশাপাশি উদ্ধারকাজে হাত মিলিয়েছিলেন স্থানীয়েরাও। প্রতিটি পাথরের ফাঁকে ফাঁকে শুরু হয় খোঁজ। কিন্তু অন্ধকার নামায় বাধ্য হয়ে ফিরে যান সকলে। সোমবার সকাল হতে না হতেই ফের কাজে লেগে পড়েন তাঁরা।

তুমাকুরুর জেলা দমকল আধিকারিক শশীধর কেপি জানাচ্ছেন, মূলত প্রতিটি ফাটলের নীচে জল থাকায় উদ্ধারকাজে দেরি হচ্ছিল। সে জন্য পাথর ও কংক্রিট বোঝাই বস্তা রেখে জলের প্রবাহ আংশিক বন্ধ করে দেওয়া হয়। জল কমে আসলে ফাটলের নীচে নেমে শুরু হয় উদ্ধারকাজ। শেষমেশ সোমবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ ওই তরুণীর খোঁজ মেলে। চার দমকলকর্মীর সহযোগিতায় তাঁকে উপরে আনা হয়। ২২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জলে থাকার কারণে হামসার হাত-পায়ের চামড়া সাদা হয়ে গিয়েছিল। সারা শরীরেও ছিল ছোট-বড় নানা ক্ষতের দাগ। তবে প্রাথমিক চিকিৎসার পর এখন সুস্থ রয়েছেন তিনি। হামসা বলছেন, ‘‘গোটা সময়টা চোখের পলক অবধি ফেলতে পারিনি। প্রতি মুহূর্তে মনে হচ্ছিল এখনই বুঝি কেউ এসে আমাকে বাঁচাবে!’’

শশীধর অবশ্য বলছেন, ‘‘আমাদের কর্মীরাও তাঁদের জীবনের বাজি রেখে উদ্ধারে নেমেছিলেন। তরুণীকে উদ্ধারের পর যখন তাঁকে জড়িয়ে কেঁদে উঠলেন তাঁর মা, সেই সময়টাই আমাদের কাছে সব চেয়ে গর্বের মুহূর্ত ছিল। তবে আমাদের প্রচেষ্টা ছাড়াও ছিল হামসার সাহস ও আত্মবিশ্বাস। না হলে অন্ধকার ওই গুহায় ২২ ঘণ্টা কাটানো কি মুখের কথা?’’

আরও পড়ুন
Advertisement