মূল অভিযুক্ত বিশাল দাস। চুঁচুড়া আদালতে। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP
চার বছর আগে নৃশংস ভাবে খুন হয়ে যান চুঁচুড়া শহরের রায়েরবেড়ের বাসিন্দা, বছর তেইশের বিষ্ণু মাল। ওই ঘটনার দায়ে সমাজবিরোধী বিশাল দাস-সহ ৮ জনকে সোমবার দোষী সাব্যস্ত করল চুঁচুড়া আদালতের প্রথম ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক শিবশঙ্কর ঘোষ। আগামী বৃহস্পতিবার সাজা ঘোষণা। ওই ঘটনায় মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাদের মধ্যে এক জন রাজসাক্ষী হয়। এ দিন আদালত তাকে খালাস ঘোষণা করেছে।
পুলিশ ও আইনজীবীদের সূত্রে খবর, ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর বাড়ির সামনে থেকে বিষ্ণুকে মোটরবাইকে চাপিয়ে চাঁপদানিতে এক শাগরেদের ভাড়াবাড়িতে নিয়ে যায় বিশাল। সেখানে তাকে খুন করে। তার পরে দেহ ছ’টি টুকরো করে কাটা হয়। পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে বিভিন্ন জায়গায় দেহাংশগুলি ফেলা হয়।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, এক যুবতীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল বিশাল। যুবতী তাতে সাড়া দেননি। তাঁর সঙ্গে বিষ্ণুর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সে কথা জেনেই আক্রোশবশত বিষ্ণুকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার ছক কষে বিশাল। দিন কুড়ি পরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলায় কয়েক জনকে গুলি চালিয়ে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে বিশাল। ওই জেলার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট গ্রেফতার করে। বিশালকে জেরা করে বৈদ্যবাটী খালের ধার থেকে প্লাস্টিকে মোড়ানো অবস্থায় বিষ্ণুর মুন্ডু উদ্ধার করে পুলিশ। অন্য দেহাংশও মেলে।
ঘটনার বীভৎসতায় সমাজে রীতিমতো আলোড়ন হয়। ধৃতেরা জামিন পায়নি। তাদের ‘কাস্টডি ট্রায়াল’ (হেফাজতে রেখে বিচার) হয়। শুনানির বিভিন্ন দিনে বিষ্ণুর আত্মীয়, প্রতিবেশী-সহ সাধারণ মানুষ দোষীদের ফাঁসির দাবিতে আদালতের সামনে অবস্থান করেন। সোমবারেও এর অন্যথা হয়নি।
এ দিন কড়া পুলিশি পাহারায় বিশাল এবং তার শাগরেদদের আদালতে আনা হয়। বিষ্ণুর বাড়ির সামনেও ছিল পুলিশ প্রহরা। কালো টি-শার্ট ও নীল জিনসে প্রিজ়ন ভ্যান থেকে বেরিয়ে আসে বিশাল। আদালতে ঢোকা এবং বেরোনোর সময় দৃশ্যত বিচলিত মনে হয়নি তাকে।
বিশালরা দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে চোখের জল ফেলে বিষ্ণুর
দিদি কাজল মাল বলেন, ‘‘আমার নিরীহ ভাইকে যারা মেরেছে, সকলের ফাঁসি চাই।’’