— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
সারা দেশের বিভিন্ন রাজ্যের জেলে মহিলা কয়েদিরা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ছেন বলে অভিযোগ। স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা গ্রহণ করল সুপ্রিম কোর্ট। এক দিন আগেই এ বিষয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। সেখানে রিপোর্ট জমা দিয়ে আদালত বান্ধব জানিয়েছিলেন, এ রাজ্যের বিভিন্ন সংশোধনাগারের মহিলা বন্দিরা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ছেন। বিচার চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আদালত বান্ধব তাপস ভঞ্জ।
পরিসংখ্যান দেখে এই মামলাটি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে গ্রহণ করেছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি আহসানুদ্দিন আমানুল্লাহের বেঞ্চ। ভারতীয় জেলে বন্দিদের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে একটি আবেদন শুনছে বিচারপতি আমানুল্লাহের বেঞ্চ। এই পরিস্থিতি কী ভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব, তা নিয়ে চলছে শুনানি। গত মাসে নির্দেশিকা জারি করে এই বিষয়ে সকল রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসনকে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার অনুরোধ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। জেলের পরিকাঠামোর মূল্যায়নের জন্য জেলা স্তরে কমিটি গঠনের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। ২০১৬ সালের ‘আদর্শ জেল ম্যানুয়াল’ মেনে তা করার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তার মধ্যেই জেলে মহিলা বন্দিদের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা গ্রহণ করল সুপ্রিম কোর্ট।
বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন আদালত বান্ধব তাপস। আদালতে তিনি জানান, সম্প্রতি আলিপুর মহিলা জেল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সেখানে দেখেন, মহিলা কয়েদিদের মধ্যে এক জন অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন। তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিচারপতি শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি ভট্টাচার্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। রাজ্যের সংশোধনাগারের মহিলা সেলগুলিতে পুরুষদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার আর্জিও তিনি জানান ডিভিশন বেঞ্চে।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলের কয়েদিদের সুযোগ-সুবিধার কথা মাথায় রেখে আদালত বান্ধব নিয়োগ করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। সংশোধনাগারের মধ্যে কয়েদিরা ঠিক করে খাবার বা চিকিৎসা পাচ্ছেন কি না, তা দেখার দায়িত্ব আদালত বান্ধবের। পাশাপাশি, কয়েদিদের জীবনযাপনে কোনও অব্যবস্থা রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখার দায়িত্ব তাঁকে দেওয়া হয়েছে।
কলকাতা হাই কোর্টে আদালত বান্ধব তাপসের জমা দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছর পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন সংশোধনাগারে ১৯৬ জন শিশু জন্ম নিয়েছে। সম্প্রতি, আলিপুর মহিলা জেলেও এক জন কয়েদি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। তাই বিচার চেয়ে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি। তাঁর আর্জি, রাজ্যের সমস্ত মহিলা সংশোধনাগার বা যে সব সংশোধনাগারে মহিলা সেল রয়েছে, সেখানে পুরুষদের প্রবেশ বন্ধ করা হোক। প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ মামলাটি শুনেছে। এই সংক্রান্ত সব মামলা ফৌজদারি কোর্টে পাঠিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।