No Confidence Motion

অধীরের সাসপেনশন নিয়ে কংগ্রেস সংসদীয় দলের বৈঠক ডাকলেন সনিয়া, সংঘাতের বার্তা দিতেই কি?

বৃহস্পতিবার অধিবেশন মুলতুবির আগে স্পিকার ওম বিড়লা জানিয়েছেন, যত দিন না লোকসভার স্বাধিকার রক্ষা কমিটি অধীর চৌধুরীর বিষয়ে রিপোর্ট জমা দিচ্ছে, তত দিন তিনি সাসপেন্ড থাকবেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৩ ০৯:৩০
Sonia Gandhi calls meeting of Congress MPs over Adhir Ranjan Chowdhury’s suspension from Lok Sabha

অধীররঞ্জন চৌধুরী এবং সনিয়া গান্ধী। — ফাইল চিত্র।

অধীর চৌধুরীর সাসপেনশন নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের সঙ্গে সংঘাতের পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিল কংগ্রেস। শুক্রবার সকালে দলের সংসদীয় বোর্ডের চেয়ারপার্সন সনিয়া গান্ধী একটি জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। অধীর সংক্রান্ত বিষয়ে কৌশলগত পদক্ষেপ স্থির করতেই এই বৈঠক বলে কংগ্রেসের একটি সূত্রের খবর। সংসদ ভবনে সকালে সাড়ে ১০টায় কংগ্রেস সংসদীয় দলের ওই বৈঠক হবে।

Advertisement

নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ‘ইন্ডিয়া’র আনা অনাস্থা প্রস্তাবের বিতর্কে বুধ এবং বৃহস্পতিবার বার উঠে এসেছে লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীরের নাম। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রধানমন্ত্রী মোদী বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে খোঁচা দিয়েছেন অধীরকে। বৃহস্পতিবার অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটির শেষে ‘অসংসদীয় আচরণের’ অভিযোগ তুলে অধীরের বিরুদ্ধে স্বাধিকারভঙ্গের প্রস্তাব আনেন কেন্দ্রীয় সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী। বিরোধীশূন্য লোকসভায় সেই প্রস্তাব গ্রহণ করে অধীরকে সাসপেন্ড করেন স্পিকার ওম বিড়লা।

বৃহস্পতিবার সভা মুলতুবির আগে স্পিকার জানিয়েছেন, যত দিন না লোকসভার স্বাধিকার রক্ষা কমিটি অধীরের বিষয়ে রিপোর্ট জমা দেয়, তত দিন তিনি সাসপেন্ড থাকবেন। ঘটনাচক্রে, শুক্রবারই বাদল অধিবেশনের শেষ দিন। অর্থাৎ, শুক্রবার সিদ্ধান্ত না-নিলে বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদের সাসপেনশনের মেয়াদ গড়াবে অন্তত আগামী শীতকালীন অধিবেশন পর্যন্ত। লোকসভায় বুধবারের বক্তৃতায় মহারাষ্ট্রের বিধবা কলাবতী বান্দুরকর সম্পর্কে ‘অসত্য তথ্য’ দেওয়ার অভিযোগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার কংগ্রেস সাংসদ মানিকম টেগোর স্বাধিকারভঙ্গের নোটিস জমা দিলেও সে বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করেননি স্পিকার বিড়লা। এমনকি, স্পিকার নিজে অসংসদীয় আচরণের জন্য অধীরের পাশাপাশি বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বীরেন্দ্র খটিকের নাম করেছিলেন। কিন্তু সভায় হাজির বীরেন্দ্র ক্ষমা চাওয়ায় পত্রপাঠ তাঁকে রেহাই দেন।

অধীর তাঁর সাসপেনশনের সিদ্ধান্তকে ‘সংখ্যাগরিষ্ঠের মস্তানি’ বলে চিহ্নিত করে বলেন, ‘‘শুধু প্রহ্লাদ জোশী কেন, বিজেপির সব নেতা মিলে যদি আমার একটা শব্দ, একটা ব্যাখ্যা মানুষের বিচারে ‘ভুল’ প্রমাণ করতে পারেন, তবে আমি আমার রাজনৈতিক জীবন ছেড়ে দেব।’’ অধীরের দাবি, কোনও অসংসদীয় শব্দ নয়, ভাষার অলঙ্কার ব্যবহার করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমি কাউকে অপমান করিনি।’’ তাঁর আরও দাবি, চন্দ্রযান থেকে কুনোর চিতা পর্যন্ত সমস্ত বিষয়ে মোদী কথা বললেও মণিপুর প্রসঙ্গে চুপ থাকায় তিনি ‘নীরব’ শব্দ এবং ‘অন্ধ ধৃতরাষ্ট্র’ উপমা ব্যবহার করেছেন। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতার আরও মন্তব্য, ‘‘মোদী এবং শাহ ‘ইন্ডিয়া’কে ভয় পেয়েছেন।’’

তাঁকে বার বার বক্তব্য পেশে বাধা দেওয়া হয়েছে দাবি করে অধীরের মন্তব্য, ‘‘মোদীকে যে আমরা সংসদে হাজির হতে বাধ্য করলাম, সেটা ওঁদের সহ্য হচ্ছে না।’’ এমনকি, বিজেপির উত্তরপ্রদেশের এক সাংসদ তাঁকে মারতে এসেছিলেন বলেও অভিযোগ করেন অধীর। সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘ক্ষমা চাওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই। আমাকে ক্ষমা চাইতে বলার হিম্মত ওঁদের নেই।’’

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বহরমপুরের পাঁচ বারের কংগ্রেস সাংসদের পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “অধীরের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে।” তিনি বলেন, ‘‘অধীরের সঙ্গে অন্যায় করা হল। বোঝা যাচ্ছে গণতন্ত্রের দুর্দিন এসেছে। অধীরের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক বিরোধ থাকতে পারে, কিন্তু যে ভাবে লোকসভার বৃহত্তম বিরোধী দলের নেতাকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হল, তা মেনে নেওয়া যায় না। মোদীর বিরুদ্ধে যাঁরাই বলবেন তাঁদেরই এমন শাস্তি পেতে হবে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement