অনাস্থা বিতর্কে অধীর চৌধুরী। ছবি: পিটিআই।
কখনও ‘কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্বের বঞ্চনা’। কখনও নাম না করে ‘তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোন’, কখনও ‘সিপিএমের নির্যাতন’। নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে লোকসভায় ‘ইন্ডিয়া’র আনা অনাস্থা বিতর্কে গত দু’দিন ধরে বার উঠে এসেছে তাঁর নাম। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রধানমন্ত্রী মোদী বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে খোঁচা দিয়েছেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীকে। বৃহস্পতিবার অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটির শেষে ‘অসংসদীয় আচরণের’ অভিযোগ তুলে অধীরের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব আনলেন কেন্দ্রীয় সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী। বিরোধীশূন্য লোকসভায় সেই প্রস্তাব গ্রহণ করে অধীরকে সাসপেন্ড করলেন স্পিকার ওম বিড়লা।
বৃহস্পতিবার সভা মুলতুবির আগে স্পিকার জানিয়েছেন, যতদিন না লোকসভার স্বাধিকার রক্ষা কমিটি অধীরের বিষয়ে রিপোর্ট জমা দেয়, ততদিন তিনি সাসপেন্ড থাকবেন। ঘটনাচক্রে শুক্রবারই বাদল অধিবেশনের শেষ দিন। অর্থাৎ, শুক্রবার সিদ্ধান্ত না-নিলে বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদের সাসপেনশনের মেয়াদ গড়াবে অন্তত আগামী শীতকালীন অধিবেশন পর্যন্ত। ঘটনাচক্রে, লোকসভায় বুধবারের বক্তৃতায় মহারাষ্ট্রের বিধবা কলাবতী বান্দুরকর সম্পর্কে ‘অসত্য তথ্য’ দেওয়ার অভিযোগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার কংগ্রেস সাংসদ মানিকম টেগোর স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস জমা দিলেও সে বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করেননি স্পিকার বিড়লা। এমনকি, স্পিকার নিজে অসংসদীয় আচরণের জন্য অধীরের পাশাপাশি বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বীরেন্দ্র খটিকের নাম করেছিলেন। কিন্তু সভায় হাজির বীরেন্দ্র ক্ষমা চাওয়ায় পত্রপাঠ তাঁকে রেহাই দেন।
অধীর বৃহস্পতিবার তাঁর সাসপেনশনের সিদ্ধান্তকে ‘সংখ্যাগরিষ্ঠের মস্তানি’ বলে চিহ্নিত করে বলেন, ‘‘শুধু প্রহ্লাদ জোশী কেন, বিজেপির সব নেতারা মিলে যদি আমার একটা শব্দ, একটা ব্যাখ্যা মানুষের বিচারে ‘ভুল’ প্রমাণ করতে পারেন, তবে আমি আমার রাজনৈতিক জীবন ছেড়ে দেব।’’ অধীরের দাবি, কোনও অসংসদীয় শব্দ নয়, ভাষার অলঙ্কার ব্যবহার করেছেন তিনি। অধীরের দাবি, চন্দ্রযান থেকে কুনোর চিতা পর্যন্ত সমস্ত বিষয়ে মোদী কথা বললেও মণিপুর প্রসঙ্গে চুপ থাকায় তিনি ‘নীরব’ শব্দ এবং ‘অন্ধ ধৃতরাষ্ট্র’ উপমা ব্যবহার করেছেন। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতার আরও মন্তব্য, ‘‘মোদী এবং শাহ ‘ইন্ডিয়া’কে ভয় পেয়েছেন।’’ তাঁকে বার বার বক্তব্য পেশে বাধা দেওয়া হয়েছে দাবি করে অধীরের মন্তব্য, ‘‘মোদীকে যে আমরা সংসদে হাজির হতে বাধ্য করলাম, সেটা ওঁদের সহ্য হচ্ছে না।’’ এমনকি, বিজেপির উত্তরপ্রদেশের এক সাংসদ তাঁকে মারতে এসেছিলেন বলেও অভিযোগ করেন অধীর। সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘ক্ষমা চাওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই। আমাকে ক্ষমা চাইতে বলার হিম্মত ওঁদের নেই।’’ অধীরের পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “অধীরের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, গত ৪৮ ঘণ্টায় বিজেপি শীর্ষনেতৃত্বের ধারাবাহিক আক্রমণ এবং শেষবেলার সাসপেনশন রাজনৈতিক ভাবে অধীরের বিড়ম্বনা বৃদ্ধি করল। কারণ, পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সম্পর্কে মোদী-শাহদের ধারাবাহিক কটাক্ষের নির্যাস একটাই— লোকসভা ভোটের আগে জাতীয় স্তরে তৃণমূলকে পাশে পেতে উদ্গ্রীব কংগ্রেস হাইকমান্ড মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খুশি রাখার জন্য অধীরকে পিছনের সারিতে ঠেলে দিচ্ছে। বুধবার সেই প্রসঙ্গ উহ্য রেখে অধীরকে খোঁচা দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ। বৃহস্পতিবার একই প্রসঙ্গ তুলে স্পষ্ট ভাষায় লোকসভায় বৃহত্তম বিরোধী দলের নেতাকে কটাক্ষ করলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মোদী। করছেন। যদিও কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং অধীর ঘনিষ্ঠদের পাল্টা দাবি, দু’দিন ধরে বিজেপির দুই শীর্ষনেতার আক্রমণ এবং অনাস্থা বিতর্কের শেষে সাসপেনশনে রাজনৈতিক ভাবে লাভবান হবেন বহরমপুরের পাঁচ বারের কংগ্রেস সাংসদ। কারণ, এই ঘটনা তাঁর ‘বিজেপি বিরোধী অবস্থান’ আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলবে। মুর্শিদাবাদের মতো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত অঞ্চলে যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা।
বৃহস্পতিবার লোকসভায় অনাস্থা বিতর্কের জবাবি ভাষণ দিতে উঠে মোদী শুরুই করেন অধীরকে দিয়ে। পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে ‘অধীরবাবু’ সম্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, ‘‘এই অনাস্থা বিতর্কে এমন সব অদ্ভুত ঘটনা ঘটছে, যা আগে কখনও দেখিনি, শুনিনি এমনকি, কল্পনাও করিনি! বৃহত্তম বিরোধী দলের নেতার (অধীর) নাম প্রথমে বক্তাদের তালিকাতেও ছিল না!’’ তার পরেই কংগ্রেস সাংসদদের লক্ষ্য করে মোদী বলেন, ‘‘আপনাদের দুর্বলতা কোথায়? কেন অধীরবাবুকে কোণঠাসা করছেন? জানি না, কলকাতা থেকে কোনও ফোন এসেছে কি না!’’ অর্থাৎ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যাঁর সঙ্গে অধীরের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের এবং সুবিদিত, তিনি কংগ্রেস নেতৃত্বকে অধীরকে বক্তা তালিকায় না-রাখার কথা বলেছেন কি না।
সেই সময় অধীর-সহ কংগ্রেস সাংসদেরা সমস্বরে মোদীর কথার প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। কিন্তু তাতে না থেমে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘শুধু এ বার নয়। বার বার অধীরবাবুকে অপমান করেন কংগ্রেস নেতৃত্ব! কখনও নির্বাচনের অছিলায় তাঁকে পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়।’’ এর পরেই মোদী ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে কংগ্রেস সাংসদ রভনীত সিংহ বিট্টুর নামটি উচ্চারণ করে মৃদু হাসেন। আর বলেন, ‘‘আমি অধীরবাবুর প্রতি পূর্ণ সমবেদনা জানাচ্ছি।’’ ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটের আগে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরকে দু’মাসের জন্য লোকসভার দলনেতার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে পঞ্জাবের সাংসদ বিট্টুকে সেই পদে বসানো হয়েছিল। অনেকে বলেছিলেন, মমতাকে ‘স্বস্তি’ দিতেই অধীরকে ওই পদ থেকে সরানো হয়েছিল।
মোদী আরও দাবি করেন, ১৯৯৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজয়পেয়ীর বিরুদ্ধে যখন অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছিল, তৎকালীন বিরোধী দলনেতা শরদ পওয়ারকে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল। ২০০৩ সালে বাজপেয়ী সরকারের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা বিতর্কে বিরোধীদের তরফে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলনেত্রী সনিয়া গান্ধী। সেই সূত্রেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘২০১৮ সালে আমার সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের বিতর্কে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন বিরোধী দলের নেতা খড়্গেজি (মল্লিকার্জুন খড়্গে)। কিন্তু এ বার দেখুন অধীরবাবুর কী হাল হয়েছে! ওঁর দলই ওঁকে বলার সুযোগ দিচ্ছিল না। কিন্তু গতকাল (বুধবার) অমিত-ভাই (অমিত শাহ) বললেন, তাঁর বিষয়টি ভাল লাগেনি।’’ বস্তুত, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ স্পিকারকে খানিক কপট আক্ষেপের সুরেই বলেছিলেন, অধীরকে তাঁর জন্য নির্ধারিত সময় থেকে যেন সময় দেওয়া হয় বক্তৃতা করার জন্য। কারণ, কংগ্রেস অধীরের নাম বক্তার তালিকায় রাখেনি। সেই সূত্রেই বৃহস্পতিবার মোদীর দাবি, কংগ্রেসের জন্য নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও স্পিকার ওম বিড়লায় উদারতার কারণে বলার সময় পেয়েছেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা।
সূচনা করেছিলেন শাহ
অনাস্থা বিতর্কে বুধবার থেকেই বিজেপি নিশানা করেছে অধীরকে। অনাস্থা বিতর্কে শাহের বক্তৃতার মধ্যে একটি মন্তব্য করেছিলেন কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা। দ্রুত তার জবাবে খোঁচা দিয়ে শাহ বলেন, ‘‘আপনাকে আমি আমার বলার সময় থেকে ৩০ মিনিট দেব। যাতে আপনি বলতে পারেন। কিন্তু আপাতত বসে যান!’’ এর পরেই অধীরকে নিশানা করে শাহের মন্তব্য, ‘‘আমি বুঝতে পারছি, আপনার দল আপনাকে বলতে দেয়নি বলেই আপনি এ ভাবে কথার মাঝে কথা বলছেন।’’
এর পরেই বৃহস্পতিবার কংগ্রেস সূত্রে জানা যায়, দলের শেষ বক্তা হিসাবে অনাস্থা-বিতর্কে অংশ নেবেন অধীর। প্রথমে বক্তাদের তালিকায় তাঁর নাম না থাকলেও বিতর্ক শুরুর ঠিক আগে কংগ্রেসের তরফে ‘শেষ বক্তা’ হিসাবে তাঁর নাম জমা পড়ে লোকসভার স্পিকারের কাছে। তবে বক্তৃতা করলেও ‘বিড়ম্বনা’ থেকে রেহাই পেলেন না অধীর। একদিকে মূলত তাঁকে সামনে রেখেই বিরোধী জোটের মধ্যে ‘ফাটল’ ধরানোর চেষ্টা করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। অন্যদিকে, অধীরকে তাঁর দল কংগ্রেস থেকে ‘বিচ্ছিন্ন’ করারও চেষ্টা করলেন। সেই সঙ্গে লোকসভায় অধীরের বৃহস্পতিবারের বক্তৃতাকে নিশানা করে মোদী বলেন, ‘‘গোবর কখনও গুড় হয় না।’’ জবাবে অধীরের মন্তব্য, ‘‘আপনারাই তো সব সময় গরু আর গোবরের কথা বলেন।’’
অধীরের পাশে তৃণমূলের কল্যাণ
তৃণমূলনেত্রী মমতার সঙ্গে বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদের সম্পর্ক গত তিন দশক ধরেই ‘মধুর’ (১৯৯৬ সালে অধীরকে নবগ্রামে কংগ্রেসের টিকিট দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করেছিলেন মমতা)। সেই প্রসঙ্গ খুঁচিয়ে দিয়েই লোকসভা ভোটের আগে ‘ইন্ডিয়া’য় ফাটল ধরাতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অধীর-প্রসঙ্গ তুলে অস্বস্তিতে ফেলতে চেয়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্বকে। কার্যত অধীরকে ‘ঘুঁটি’ বানিয়েই বিরোধী জোটকে আক্রমণ করেছেন মোদী।
কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বৃহস্পতিবার সাসপেনশন বিতর্কে অধীরের পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘অধীরের সঙ্গে অন্যায় করা হল। বোঝা যাচ্ছে গণতন্ত্রের দুর্দিন এসেছে। অধীরের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক বিরোধ থাকতে পারে, কিন্তু যে ভাবে লোকসভার বৃহত্তম বিরোধী দলের নেতাকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হল তা মেনে নেওয়া যায় না। মোদীর বিরুদ্ধে যাঁরাই বলবেন তাঁদেরই এমন শাস্তি পেতে হবে।’’
মোদীর অধীর-মন্তব্যেও সিপিএম!
শুধু নাম না-করে মমতার ফোনের প্রসঙ্গ নয়, ১৯৯১ সালে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটের কথা মনে করিয়ে দিয়ে অধীরের উদ্দেশে বলেছেন, ‘‘মনে করে দেখুন, এই বামপন্থীরা আপনাকে সেই ভোটে হারিয়ে দিয়েছিল। এখন তাঁদের সঙ্গে আপনাকে জোট করতে হচ্ছে! অতীতের কথা এত সহজে ভুলে গেলেন?’’ ঘটনাচক্রে, সেই বিধানসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ জেলার নবগ্রাম আসনে কংগ্রেসের টিকিটে জীবনে প্রথম বার লড়তে নেমেছিলেন অধীর। সে সময় বিপুল ছাপ্পা ভোট এবং বুথ দখলের অভিযোগ উঠেছিল সিপিএমের বিরুদ্ধে। দেড় হাজারেরও কম ভোটে হেরে গিয়েছিলেন অধীর।
এর পর ১৯৯৬ সালে ওই কেন্দ্রে দাঁড়িয়েই জিতেছিলেন অধীর। যদিও আদালতের নির্দেশে সে সময় নবগ্রামে প্রচারে যেতে পারেননি তিনি। সিপিএমই তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে নবগ্রামে ঢুকতে না-দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছিল বলে অভিযোগ। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করেন, সাধারণ ভাবে অধীরের সঙ্গে মোদীর সম্পর্ক ভাল। কিন্তু সংখ্যালঘু ভোটার অধ্যুষিত জেলা মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের সাংসদ অধীরের পক্ষে তা রাজনৈতিক দিক দিয়ে ‘সুবিধাজনক’ নয়। ফলে মোদী-শাহ যে ভাবে অধীরের সঙ্গে কংগ্রেসের ‘দূরত্ব’ রচনার চেষ্টা করেছেন, সেটিও প্রদেশ সভাপতির পক্ষে ‘বিড়ম্বনাজনক’ হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। যদিও কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং অধীর ঘনিষ্ঠদের পাল্টা দাবি, দু’দিন ধরে বিডজেপির দুই শীর্ষনেতার আক্রমণ এবং অনাস্থা বিতর্কের শেষে সাসপেনশনে রাজনৈতিক ভাবে লাভ হবে অধীরের। কারণ, মোদী-শাহের আক্রমণের ফলে মজবুত হয়েছে তাঁর ‘বিজেপি বিরোধী অবস্থান’। মুর্শিদাবাদের মতো সংখ্যালঘু প্রধান জেলায় যার সুবিধা পাবেন অধীর।
অধীরের মুখে ‘নীরব’ মোদী
অনাস্তা বিতর্কে অংশ নিয়ে বৃহস্পতিবার অধীর মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, ‘‘মণিপুর ঘুরে এসে আমার মনে হয়েছে নীরব মোদী দেশ ছেড়ে পালাননি। কারণ প্রধানমন্ত্রী এখন ‘নীরব’ মোদী হয়ে গিয়েছেন।’’ অধীরের এই বক্তব্যের বিরোধিতা করেন এনডিএ সাংসদেরা। লোকসভায় হট্টগোল। অধীরকে ক্ষমা চাইতে হবে, দাবি শাসক শিবিরের। অধীরের ওই মন্তব্য কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেন স্পিকার। পাশাপাশি, মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অধীরের মন্তব্য, ‘‘অনাস্থা প্রস্তাবের অনেক ক্ষমতা রয়েছে। অনাস্থা প্রস্তাবের কারণেই লোকসভায় এলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।’’