প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া (বাঁ দিকে) , কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (মাঝে), প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবকুমার (ডান দিকে)। — ফাইল ছবি।
কর্নাটক বিধানসভা ভোটের ফল বেরিয়েছে। চার দিন হতে চলল। কিন্তু এখনও মুখ্যমন্ত্রী বেছে উঠতে পারল না কংগ্রেস। দিল্লিতে কংগ্রেসের সদর দফতর ২৪ আকবর রোডে দফায় দফায় বৈঠক চলছে, কিন্তু কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা এখনও স্থির করতে পারছে না ‘গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি’। বুধবার আলাদা আলাদা করে সিদ্দারামাইয়া এবং ডিকে শিবকুমার— দুই দাবিদারের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন রাহুল গান্ধী। তাতেই কি নতুন মুখ্যমন্ত্রী নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে? জল্পনা চরমে।
কর্নাটকের জট খুলতে পারেননি দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। শেষ পর্যন্ত আসরে নামতে হয়েছে রাহুল গান্ধীকেই। সূত্রের খবর, বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় রাহুল মুখোমুখি কথা বলবেন সিদ্দারামাইয়ার সঙ্গে। বেলা ১২টায় রাহুল বসবেন শিবকুমারের সঙ্গে। মনে করা হচ্ছে, রাহুলের বৈঠকের পরেই মুখ্যমন্ত্রী কে হচ্ছেন তার উপর থেকে পর্দা সরতে পারে।
অন্দরের সমীকরণ বলছে, কর্নাটকে জয়ী বিধায়কদের অধিকাংশেরই সমর্থন সিদ্দারামাইয়ার দিকে। আবার কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে সনিয়ার বিশেষ পছন্দ প্রদেশ সভাপতি শিবকুমারকে। শিবকুমার নিজেও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হতে চান, এবং নিজের চাওয়া তিনি কখনওই গোপন করছেন না। প্রদেশ সভাপতির কথায়, ‘‘যদি পার্টি মনে করে তা হলে আমার উপর দায়িত্ব দিতে পারে। আমরা ঐক্যবদ্ধ পরিবারের মতো। আমি এখানে ভাগাভাগির খেলা খেলতে আসিনি। ওরা মানুক কিংবা না মানুক, আমি দায়িত্বশীল মানুষ। আমি পিছন থেকে ছুরি মারব না এবং আমি এটা নিয়ে ব্ল্যাকমেলও করব না।’’
সমস্যা সমাধানে সিদ্দা এবং শিবকুমারের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী পদটি ভাগাভাগি করে দেওয়া যায় কি না, তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছিল ২৪ আকবর রোডে। সে ক্ষেত্রে সিদ্দা বা শিবকুমার প্রথম ২ বা ৩ বছর মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কাজ করবেন, বাকি ৩ বা ২ বছর মুখ্যমন্ত্রী হবেন আর এক জন। যদিও ‘ইন্ডিয়া টুডে’র দাবি, সিদ্দা এবং শিবকুমার— দু’জনেই এই ফর্মুলায় গররাজি। ফলে এই প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনায় আপাতত ইতি পড়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
রাজধানী সূত্রের খবর, বুধবার সাতসকালেই ১০ জনপথে সনিয়ার বাসভবনে হাজির হয়েছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল। সেখানে দফায় দফায় বৈঠক চলছে। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দাবিদার সিদ্দা এবং শিবকুমার ছাড়াও রাজ্যের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিধায়কও হাজির রয়েছেন ১০ জনপথে। কর্নাটক কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি ইশ্বর খান্দ্রেও কয়েক জন জয়ী বিধায়ককে নিয়ে ১০ জনপথে ঢুকেছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে সাড়ে ১১টা থেকে রাহুলের জোড়া বৈঠকের দিকেই তাকিয়ে কংগ্রেস। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, বুধবার বিকেলের মধ্যেই সম্ভবত নতুন মুখ্যমন্ত্রীর নাম জানা যাবে। মুখ্যমন্ত্রীর নাম জানা যাবে ঠিকই, কিন্তু অন্দরের অস্বস্তি মুছবে কী ভাবে?