শশী তারুর। ফাইল চিত্র।
রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে চলা ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রা নিয়ে কংগ্রেসের প্রায় সব স্তরের নেতা যখন মাঠে, তার মধ্যেই দলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দলের সভাপতি নির্বাচনে ‘স্বচ্ছতা’ নিয়ে ফের সরব হলেন শশী তারুর-সহ কয়েক জন কংগ্রেস নেতা। এআইসিসি-র তরফে এই নির্বাচনের ভারপ্রাপ্ত নেতা মধুসূদন মিস্ত্রিকে চিঠি লিখে শশী তারুর, কার্তি চিদম্বরম, প্রদ্যোৎ বরদোলই, আব্দুল খালেক গোটা নির্বাচনে স্বচ্ছতা দাবি করার পাশাপাশি সভাপতি নির্বাচনে এআইসিসি-র যে সব প্রতিনিধি ভোট দেবেন, তাঁদের তালিকা প্রকাশের দাবি তুলেছেন। শশীদের ক্ষোভ, বারবার বলা সত্ত্বেও প্রতিনিধি তালিকা প্রকাশের দাবিকে সে ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।
প্রসঙ্গত এর আগে কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী জি-২৩-র দুই নেতা, আনন্দ শর্মা এবং মণীশ তিওয়ারি কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি সভাপতি নির্বাচনে এআইসিসি-র প্রতিনিধিদের তালিকা প্রকাশের দাবি তুলেছিলেন। এ বারে শশী-কার্তিরাও একই সুরে প্রতিনিধি তালিকা প্রকাশের দাবি তোলায় চাপ বেড়েছে কংগ্রেসের অন্দরে।
মধুসূদন মিস্ত্রিকে লেখা গত ৬ সেপ্টেম্বরের ওই চিঠিতে শশী-কার্তিরা বলেছেন, ‘‘আমরা এমন কোনও অভ্যন্তরীণ নথি প্রকাশ করতে বলজ়ছি না, যা হাতে পেলে আমাদের যারা দুর্বল করতে চায়, বা ওই সব নথির অপব্যবহার করতে চায়, তাদের ফায়দা হবে।’’ তাঁদের আরও বক্তব্য, ‘‘আমাদের দৃঢ় মত হল, মনোনয়ন প্রক্রিয়া ঘোষণার আগে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাচনী সংস্থা যেন প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির প্রতিনিধিদের ভোটার তালিকা প্রকাশ করে।’’ কারা মনোনয়ন দিতে পারবেন এবং কারা ভোট দিতে পারবেন, সেই তালিকা যেন প্রকাশ করা হয়।
একই সঙ্গে ওই তালিকা বাইরে ফাঁস হওয়া নিয়ে দলের অন্দরে যদি কোনও উদ্বেগ থাকে, তারও সুরাহা বাতলিয়েছেন শশীরা। তাঁদের বক্তব্য, এমন কোনও পদ্ধতিতে ওই তালিকা প্রকাশ করা হোক, যাতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা এবং যাঁরা ভোট দেবেন কেবল তারাই তা হাতে পাবেন। প্রার্থী এবং ভোটদাতাদের পক্ষে ২৮টি প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি এবং ৯টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের কমিটিতে গিয়ে নির্বাচনী তালিকা যাচাই করা সম্ভব না বলেও চিঠিতে জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের এই দাবি মানা না হলে নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিয়ে তাঁদের যে উদ্বেগ, তার নিরসন হবে না বলেও সাফ জানানো হয়েছে ওই চিঠিতে।
সভাপতি নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতা মধুসূদন মিস্ত্রি অবশ্য প্রথম থেকেই দাবি করেছেন, সব নিয়ম মেনেই হচ্ছে। কোনও অস্বচ্ছতা নেই। তবে দলের একাধিক নেতার এই চিঠির পরে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব কী পদক্ষেপ করেন, এখন সেটাই দেখার।