Sharad Pawar

ভাইপোকাণ্ডে শরদের নিশানায় স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী! জানালেন, ফোন পেয়েছেন মমতা, খড়্গেদের

মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী হিসাবে রবিবার শপথ নিয়েছেন অজিত পওয়ার। তাঁর সঙ্গে মহারাষ্ট্র সরকারে শপথ নিয়েছেন আরও আট এনসিপি বিধায়ক। ভাইপোর এই বিদ্রোহে বিব্রত নন বলে জানালেন শরদ পওয়ার।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
মুম্বই শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৩ ১৮:২৮
photo of Sharad Pawar and PM Narendra Modi

এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

ভাইপো অজিত পওয়ারের বিদ্রোহে নীরবতা ভেঙে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে ‘টিপ্পনী’ কাটলেন শরদ পওয়ার। বললেন, ‘‘দু’দিন আগে প্রধানমন্ত্রী এনসিপি সম্পর্কে দু’টি কথা বলেছিলেন। একটি হল, এনসিপি দলটা খতম হয়ে গিয়েছে। তিনি দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন। আমি খুশি যে, আমার দলের কয়েক জন সহকর্মী শপথ নিলেন (এনডিএ সরকারে)। এটা থেকে স্পষ্ট যে, সব অভিযোগ থেকে আমরা মুক্ত। ওঁর (প্রধানমন্ত্রী) প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’’

রবিবার একনাথ শিন্ডে-বিজেপি সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন অজিত। মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে এ হেন পট পরিবর্তন নিয়ে মোদীকে যে ভাবে আক্রমণ করলেন পওয়ার, তা অন্য মাত্রা যোগ করেছে। কেননা, একাধিক রাজ্যে বিধায়ক ভাঙিয়ে বিজেপির কুর্সি দখলের উদাহরণ নতুন কিছু নয়। গত বছরই তার সাক্ষী থেকেছে এই মহারাষ্ট্রই। আবার, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মোদী বাহিনীকে ক্ষমতাচ্যুত করতে একজোট হতে সলতে পাকাচ্ছে বিরোধী শিবির। গত ২৩ জুন পটনায় বিজেপির বিরুদ্ধে নির্বাচনী লড়াইয়ের রণকৌশল স্থির করতে বৈঠকে বসেছিল বিরোধী দলগুলি। আগামী ১৩ জুলাই বেঙ্গালুরুতে বিরোধীদের দ্বিতীয় বৈঠক। বিজেপি বিরোধী ঐক্য তৈরিতে অতীতে ‘সক্রিয়’ ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল পওয়ারকে। এই আবহে ভাইপো যে ভাবে বিজেপি সরকারের হাত ধরল এবং তা নিয়ে মোদীকে যে ভাবে বিঁধলেন পওয়ার, তা জাতীয় রাজনীতিতে নজর কেড়েছে।

Advertisement

পটনা বৈঠকের পরই বিরোধীদের বিঁধেছিলেন মোদী। মধ্যপ্রদেশের ভোপালে এনসিপিকে বিঁধে মোদী বলেছিলেন, ‘‘এনসিপির বিরুদ্ধে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে মহারাষ্ট্র সমবায় ব্যাঙ্ক কেলেঙ্কারি, মহারাষ্ট্র সেচ দুর্নীতি এবং অবৈধ খনি কেলেঙ্কারি। তালিকাটা লম্বা।’’ অজিতের বিদ্রোহ নিয়ে মোদীর সেই বক্তব্যকে হাতিয়ার করেই এ বার বিজেপিকে আক্রমণ করলেন পওয়ার। এই প্রসঙ্গেই পওয়ার জানিয়েছেন, তাঁকে রবিবার ফোন করেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থাৎ, বিজেপি বিরোধী নেতারা যে তাঁর সঙ্গেই রয়েছেন, সেই বার্তাও বুঝিয়ে দিলেন শরদ। আগামী দু’তিন দিনের মধ্যে কংগ্রেস এবং উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে বসে পরস্থিতি পর্যালোচনা করার কথাও জানিয়েছেন এনসিপি প্রধান।

অন্য দিকে, অজিতের সিদ্ধান্তে তিনি ‘বিব্রত’ নন বলেই জানিয়েছেন পওয়ার। বলেছেন, ‘‘আজ যা ঘটল, তাতে আমি একেবারেই বিব্রত নই।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এটা নতুন কিছু নয়। ১৯৮০ সালে আমাদের ৫৮ জন বিধায়ক ছিলেন। তার পর সবাই ছেড়ে গিয়েছিলেন। শুধুমাত্র ছ’জন বিধায়ক ছিলেন। তার পরও ঘুরে দাঁড়িয়েছিলাম। যাঁরা আমায় ছেড়ে গিয়েছিলেন, তাঁরা তাঁদের কেন্দ্রে হেরে গিয়েছিলেন।’’

এনডিএ সরকারে অজিতের যোগদান প্রসঙ্গে পওয়ার আরও বলেছেন, ‘‘এটা গুগলি নয়, রবারি (ডাকাতি)। যাঁরা দলীয় শৃঙ্খল লঙ্ঘন করেছেন এবং শপথ নিয়েছেন। তাঁদের জন্য পদক্ষেপ করা হবে।’’ আগামী ৬ জুলাই একটি বৈঠক ডেকেছিলেন বলে জানান পওয়ার। সেই বৈঠকে দলের অন্দরে কিছু রদবদল করা হত। তার আগেই অজিতরা ভিন্ন অবস্থান নিলেন বলে সাংবাদিক বৈঠকে জানান শরদ। অজিতের পাশাপাশি আরও আট জন এনসিপি বিধায়ক যোগ দিয়েছেন মহারাষ্ট্র সরকারে। শুধু তাই নয়, রাজনৈতিক অবস্থান বদলের পর পরই অজিত বলেছেন, ‘‘সরকারে যোগ দিয়েছে এনসিপি। নির্বাচনী লড়াইয়ে দলের নাম এবং প্রতীক ব্যবহার করা হবে।’’ এই প্রসঙ্গে পওয়ার বলেছেন, ‘‘শীঘ্রই সত্য প্রকাশ্যে আসবে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement