Chhagan Bhujbal

‘আমি কি পুতুল নাকি’! মহারাষ্ট্রে মন্ত্রিত্ব না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ এনসিপি নেতা ছগন ভুজবলের

এ বারের ভোটে নিজের পুরনো কেন্দ্র, নাসিক জেলার ইয়েভলা থেকে ফের জয়ী হয়েছেন ভুজবল। কিন্তু দেবেন্দ্র ফডণবীসের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারে ঠাঁই পাননি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:৪০
বাঁ দিকে, দেবেন্দ্র ফডণবীস, অজিত পওয়ার এবং ছগন ভুজবল।

বাঁ দিকে, দেবেন্দ্র ফডণবীস, অজিত পওয়ার এবং ছগন ভুজবল। —ফাইল চিত্র।

মহারাষ্ট্রে মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের পরেই প্রকাশ্যে এল বিজেপি-শিন্ডেসেনা-এনসিপি (অজিত)-এর ‘মহাজুটি’র অন্দরের ক্ষোভ। সোমবার প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা এনসিপি (অজিত)-র নেতা ছগন ভুজবল মন্ত্রী হতে না পারার ক্ষোভ উগরে দিলেন প্রকাশ্যে।

Advertisement

‘তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে’ ভুজবল তাঁর মন্ত্রিত্ব না পাওয়ার জন্য দলনেতা অজিত পওয়ারকে নিশানা করেছেন। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস আমাকে মন্ত্রী করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমাদের দলের কে মন্ত্রী হবেন তা দলনেতা অজিত স্থির করেছেন। যেমন বিজেপির মন্ত্রীদের নাম ঠিক করেছেন ফডণবীস। শিবসেনার একনাথ শিন্ডে।’’ এর পরেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি কি পুতুল না কি!’’

তাঁর মন্ত্রিত্ব না পাওয়ার অন্যতম কাণ মরাঠা সংরক্ষণ আন্দোলনের নেতা মনোজ জারাঙ্গে পাটিলের আপত্তি বলেও দাবি করেছেন ভুজবল। সেই সঙ্গে তাঁর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘যেখানে মন চায় না, সেখানে থাকতে নেই।’’ প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারিতে মরাঠা সংরক্ষণ বিল পাশ হয়েছিল মহারাষ্ট্র বিধানসভায়। তাতে শিক্ষা এবং চাকরির ক্ষেত্রে রাজ্যে মরাঠাদের জন্য ১০ শতাংশ আসন সংরক্ষণের কথা বলা রয়েছে। অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর নেতা ভুজবল সে সময় প্রকাশ্যে মরাঠা সংরক্ষণের বিরোধিতা করেছিলেন।

প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনে ‘মহাজুটি’র জয়ের পর গত ৫ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন বিজেপির ফডণবীস। উপমুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন শিবসেনা (শিন্ডে) প্রধান তথা সে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিন্ডে এবং এনসিপি (অজিত) প্রধান অজিত। সেই শপথগ্রহণের ১০ দিন পরে রবিবার মন্ত্রী হিসাবে শপথ নিলেন শাসকজোটের মোট ৩৯ জন বিধায়ক। এই ৩৯ জনের মধ্যে ১৯ জনই বিজেপি বিধায়ক। ফডণবীস মন্ত্রিসভায় ঠাঁই হয়েছে শিবসেনা (শিন্ডে)-র ১১ জন এবং এনসিপি (অজিত)-র ন’জন বিধায়কের। কিন্তু সেই ন’জনের তালিকায় ছগনের নাম নেই।

লোকসভা ভোটের সময়ই শোনা গিয়েছিল নাসিকে টিকিট না পেয়ে ভুজবল ‘ক্ষুব্ধ’। নির্বাচনে মহারাষ্ট্রে এনডিএর বিপর্যয়ের পরে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছিল, অজিতের নেতৃত্বাধীন এনসিপি ছাড়ছেন তিনি। গত জুলাই মাসে সেই জল্পনা আরও উস্কে এনসিপি প্রতিষ্ঠাতা শরদ পওয়ারের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রয়ে গিয়েছিলেন অজিতের দলে। এ বারের ভোটে নিজের পুরনো কেন্দ্র, নাসিক জেলার ইয়েভলা থেকে ফের জয়ী হয়েছেন ভুজবল।

প্রসঙ্গত, একদা শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা বালাসাহেব ঠাকরের ঘনিষ্ঠ ছিলেন ভুজবল। বালাসাহেব তাঁকে মুম্বইয়ের মেয়র করেছিলেন। কিন্তু উদ্ধবের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ১৯৯৯ সালে শরদ পওয়ার কংগ্রেস ছেড়ে এনসিপি গড়ার সময় ভুজবলও তার সঙ্গী ছিলেন। এনসিপি পরিষদীয় নেতা হিসাবে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট সরকারে উপমুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে ভাইপো অজিত কাকা শরদের দল ভেঙে বিজেপি-শিন্ডেসেনার সঙ্গে হাত মেলানোর সময় থেকেই ভুজবল তাঁর সঙ্গী। এ বার কি তাঁর আবার দল ছাড়ার পালা?

Advertisement
আরও পড়ুন