—প্রতীকী ছবি।
প্রবাসে বিপন্ন কেরলের এক শ্রমিকের পাশে দাঁড়াতে অল্প কিছু দিনের মধ্যে ৩৪ কোটিরও বেশি টাকার তহবিল সংগ্রহ করেছেন রাজ্যের কিছু বাসিন্দা। যার একটা বড় অংশ জোগাড় হয়েছে গত সপ্তাহখানেকে। এমন এক সময়ে এই খবর সামনে এসেছে, যখন দূরদর্শনে ‘দ্য কেরল স্টোরি’ চলচ্চিত্র দেখানোয় কেরলের বাম সরকার কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির দিকে আঙুল তুলছে। অভিযোগ করছে সরকারি টেলিভিশনে আরএসএস-এর মতাদর্শ প্রচার করা এবং ধর্মীয় উস্কানি ছড়ানোর। এ সবের মধ্যেই মানবিক এই নজির তুলে ধরে রাজ্যের মন্ত্রী পি এ মহম্মদ রিয়াজ বলছেন, “এটাই আসল কেরল স্টোরি।”
কোঝিকোড়ের ফরোকের আবদুল রহিমের পরিজন এবং সৌদি আরবের কিছু সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে, ২০০৬ সালে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে বিশেষ ভাবে সক্ষম একটি ছেলেকে খুনের। তাদের গাড়ি চালাতেন রহিম। গৃহকর্তার সেই ছেলের সঙ্গে তাঁর কিছু মনান্তর হয়। হাত-পা ছোড়ার সময় ছেলেটির শ্বাস নেওয়া যন্ত্র খুলে যায়। মৃত্যু হয় তার। বিষয়টি দুর্ঘটনা বলেই মনে করা হয়।
কোঝিকোড়ে অটো চালাতেন রহিম। ২০০৬ সালেই সৌদি আরবে গিয়েছিলেন কাজের খোঁজে। তখন তাঁর বছর কুড়ি বয়স। সেখানে একটি সম্পন্ন পরিবারের গাড়ি চালানোর কাজ পান। তার কিছু দিনের মধ্যেই এই দুর্বিপাক। সেই ঘটনায় শেষ পর্যন্ত দেড় কোটি রিয়াধের ক্ষতিপূরণের বিনিময়ে মামলা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছে অভিযোগকারী পরিবারটি। যা ভারতীয় মূল্যে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা।
রহিমের বন্ধু, আত্মীয়-স্বজন এবং শুভানুধ্যায়ীরা ‘সেভ আবদুল রহিম’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন চালু করে ইতিমধ্যেই ক্ষতিপূরণের অঙ্কের থেকে বেশি টাকার তহবিল তৈরি করেছেন। যা এ যাবৎ কেরলের সাধারণ মানুষের থেকে সংগৃহীত সব থেকে বড় অঙ্কের তহবিল বলে দাবি করা হচ্ছে। রহিমের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁর সৌদির বন্ধুরা। বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে থাকা পরিযায়ী শ্রমিক, ব্যবসায়ীরা।
আঠারো বছর পরে ছেলেকে ফের ফিরে পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছেন রহিমের মা ফতিমা। ঘটনাচক্রে, ‘দ্য কেরল স্টোরি’ চলচ্চিত্রের কেন্দ্রীয় চরিত্রটির সমনামী তিনি।