অরবিন্দ কেজরীওয়াল ও তাঁর সরকারি বাংলো। — ফাইল চিত্র।
আপ প্রধান তথা দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের ‘বিলাসবহুল’ বাসভবনের রক্ষণাবেক্ষণে প্রতি দিন খরচ হত এক লক্ষ টাকা! এ বার ঝিমিয়ে পড়া ‘শিসমহল’ বিতর্ক ফের উস্কে দিয়ে এমনটাই দাবি করল বিজেপি।
শনিবার ‘শিসমহল’ নিয়ে তথ্যের অধিকার আইনে প্রাপ্ত নথি প্রকাশ্যে এনেছেন দিল্লি বিজেপির সভাপতি বীরেন্দ্র সচদেব। বীরেন্দ্রর দাবি, ২০১৫ সালের ৩১ মার্চ থেকে ২০২২ সালের ২৭ ডিসেম্বরের মধ্যে উত্তর দিল্লিতে নিজের সরকারি বাংলোর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মোট ২৯ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা ব্যয় করেছেন কেজরীওয়াল। বীরেন্দ্রর কথায়, ‘‘কেজরীওয়ালের কেলেঙ্কারিগুলি শেষ হওয়ার নামই নেই! আমরা দিল্লি সরকারের কাছেও এ বিষয়ে তদন্ত শুরুর আবেদন করব যে, সরকারি বাংলোর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতি দিন ১ লক্ষ টাকা কী ভাবে ব্যয় করা হত! আমরা প্রতিটি পাইপয়সা উদ্ধার করতে চাই।’’ কেজরীকে সম্মুখসমরে আহ্বান জানিয়ে বীরেন্দ্র আরও জানান, দিল্লি নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকে সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে চললেও দুর্নীতির বিষয়ে এই কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি হতেই হবে কেজরীকে।
সংবাদমাধ্যমকে বীরেন্দ্র বলেন, ‘‘দিল্লির মানুষ জানতে চায়, কেজরীর বাংলোতে ঠিক কী ঘাটতি ছিল যে এর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতি মাসে ৩১ লক্ষ টাকার প্রয়োজন হত? একটি সরকারি বাংলোর বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় ৩.৬৯ কোটি টাকা! এর থেকে স্পষ্টই বোঝা যায় যে, কেজরীওয়াল কতটা রাজকীয় ভাবে জীবনযাপন করতেন! কিংবা এর মধ্যে কোনও দুর্নীতিও থাকতে পারে।’’ দিল্লি বিজেপির প্রধানের দাবি, এই টাকা কেবল মাত্র বাংলোর মেরামত, পয়ঃনিষ্কাশন, বিদ্যুৎ এবং কাঠামোগত কাজের জন্যই ব্যয় করা হত। এ ছাড়াও, কেজরীর বাংলোয় বহু দামি আসবাবপত্র ছিল বলে অভিযোগ। শুধু কেজরীই নয়, আপ নেতা তথা প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী মনীশ সিসৌদিয়াকেও আক্রমণ করেন বীরেন্দ্র। মদ কেলেঙ্কারিতে সিবিআই তদন্তের মুখোমুখি হয়েছেন মণীশ। বীরেন্দ্র জানিয়েছেন, এর পাশাপাশি শিক্ষা খাতে দুর্নীতির জন্যও সিসৌদিয়ার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত চাইবেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, দিল্লির সিভিল লাইন্সের ফ্ল্যাগস্টাফ রোডের এই বাংলোটি ভোটপর্বে নিয়মিত চর্চায় থেকেছে। সে সময় দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কেজরীর নিবাস ছিল এখানেই। নির্বাচনের আগে বিপুল অর্থ খরচ করে সংস্কারের অভিযোগে বিলাসবহুল এই বাংলোটি নিয়ে বিস্তর বিতর্ক শুরু হয়েছিল। নানা মহলে গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল, সংস্কার বাবদ নাকি খরচ হয়েছে ৩৩ কোটি টাকা! কেজরীর বাংলোকে ‘শিসমহল’ বলে কটাক্ষ করে ভোটপ্রচারপর্বে আম আদমি পার্টির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আক্রমণও শানিয়েছিলেন বিজেপি নেতারা।