— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
হোটেল থেকে ধরা পড়া যৌনকর্মীদের বিরুদ্ধে কোনও রকম অভিযোগ দায়ের করা যাবে না। তাঁদের অযথা গ্রেফতার করে হেনস্থাও করা যাবে না। নির্দেশিকা জারি করে এ বার এমনটাই জানাল মধ্যপ্রদেশ পুলিশ।
পুলিশের জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এখন থেকে হোটেলগুলিতে পুলিশি অভিযানের সময় ধরা পড়া যৌনকর্মীদের ‘অভিযুক্ত’ হিসাবে গণ্য করা যাবে না। কারণ তাঁরা আদতে অভিযুক্ত নন, বরং ভুক্তভোগী। তাই তাঁদের অযথা গ্রেফতার কিংবা হেনস্থা করা উচিত নয়। নির্দেশিকার অনুলিপি ইতিমধ্যেই সমস্ত পুলিশ জেলার সুপার (এসপি) এবং ভোপাল ও ইনদওরের সব পুলিশ কমিশনারের কাছে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশিকাটি জারি করেছেন মধ্যপ্রদেশের ডিজিপি (মহিলা সুরক্ষা) প্রজ্ঞা রিচা শ্রীবাস্তব। তাঁর কথায়, ‘‘হোটেলে অভিযান চালানোর সময় ধরা পড়া যৌনকর্মীরা নির্দোষ। তাই তাঁদেরকে ভুক্তভোগী এবং শোষিত হিসাবেই বিবেচনা করা উচিত।’’
লিখিত নির্দেশটিতে বলা হয়েছে, ‘‘১৯৫৬ সালের অনৈতিক পাচার (প্রতিরোধ) আইনের অধীনে নথিভুক্ত কিছু অপরাধে প্রায়শই দেখা গিয়েছে যে, বেশির ভাগ হোটেলের মালিকেরা টাকার বিনিময়ে হোটেলের ঘরগুলিকে যৌনপল্লির মতো ব্যবহার করেন। অথচ পুলিশি অভিযানের পর যৌনকর্মীদের গ্রেফতার করে তাঁদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়।’’ এ বার থেকে সেই প্রথাতেই রাশ টানতে চাইছে মধ্যপ্রদেশ পুলিশ।
প্রসঙ্গত, ১৯৫৬ সালের অনৈতিক পাচার (প্রতিরোধ) আইন অনুসারে, যৌনপল্লি চালানো অবৈধ, কিন্তু যৌনকর্মী হিসাবে কাজ করা আইনবিরোধী নয়। ২০১০ সালের বুদ্ধদেব কর্মকার বনাম পশ্চিমবঙ্গ সরকার মামলায় সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া একটি রায়ের কথা উল্লেখ করে ডিজিপি আরও বলেন, ‘‘স্বেচ্ছায় যৌনকর্ম বেআইনি নয়। আইন অনুযায়ী, শুধু মাত্র যৌনপল্লি চালানো আইনবিরোধী। তা হলে যৌনকর্মীদের কেন গ্রেফতার কিংবা হেনস্থা করা হবে?’’ এই যুক্তিতেই এর পর থেকে মধ্যপ্রদেশ পুলিশকে সংশ্লিষ্ট আইনের অধীনে নিবন্ধিত অপরাধগুলির ক্ষেত্রে নির্দেশিকা মেনে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।