প্রতীকী ছবি।
হাজার হাজার কোটি টাকার ‘অনুদানে’ দলীয় তহবিল ফুলেফেঁপে উঠছে। কিন্তু শতকরা ৭০ ভাগ ক্ষেত্রেই সেই ‘অনুদানের উৎস’ অজানা! ভারতের রাজনৈতিক দলগুলির কোষাগারের হাল নিয়ে এমনই কথা বলা হয়েছে দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উপর নজরদারিতে যুক্ত অসরকারি সংস্থা এডিআর (অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস)-এর সাম্প্রতিক রিপোর্টে।
ওই রিপোর্ট জানাচ্ছে, ২০০৪-০৫ অর্থবর্ষ থেকে ২০২০-২১ অর্থবর্ষ পর্যন্ত ১৬ বছরে দেশের জাতীয় স্তরে স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলির তহবিলে অজানা উৎস থেকে মোট ১৫ হাজার ৭৭ কোটি টাকা চাঁদা জমা পড়েছে। তাদের পাওয়া প্রায় ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রেই চাঁদার উৎস কী, তা কেউ জানে না! রাজনৈতিক দলগুলির তরফে আয়কর বিভাগে জমা দেওয়া অনুদান সংক্রান্ত নথি পরীক্ষা করেই ওই তথ্য মিলেছে বলে এডিআর রিপোর্টে জানানো হয়েছে।
২০১৪-য় ক্ষমতায় আসার পেরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দুর্নীতি কমাতে রাজনৈতিক দলগুলির চাঁদার হিসেবনিকেশে স্বচ্ছতা প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিলেন। কিন্তু গত আট বছরে মোদী সরকার এ বিষয়ে কাজের কাজ কিছুই করেনি ওই রিপোর্টে স্পষ্ট বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন। বস্তুত, অজানা ‘উৎস’ থেকে চাঁদা পাওয়ার বিষয়ে মোদীর দল বিজেপি দেশের অন্য রাজনৈতিক দলগুলিকে বহু পিছনে ফেলে দিয়েছে।
২০১৯-২০ অর্থবর্ষে দেশের জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলির ‘ভুতুড়ে’ অনুদানের অঙ্ক ছিল প্রায় ৩,৩৭৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু মাত্র বিজেপির তহবিলেই এসেছে প্রায় ২,৬৪ক কোটি। অর্থাৎ মোট অজানা অনুদানের ৭৮ শতাংশেরও বেশি! কংগ্রেসের ক্ষেত্রে এই অঙ্কটা ৫২৬ কোটি। ১৫ শতাংশের কিছু বেশি।
এখন দেশের মোট আটটি জাতীয় রাজনৈতিক দল রয়েছে— বিজেপি, কংগ্রেস, তৃণমূল, এনসিপি, সিপিএম, সিপিআই, বিএসপি এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সক্রিয় এনপিপি (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি)। এডিআর রিপোর্ট বলছে, গত দেড় দশকে অন্য দলগুলি সম্মিলিত ভাবে অজানা উৎস থেকে যে চাঁদা পেয়েছে, বিজেপি একাই পেয়েছে তার তিন গুণেরও বেশি! তবে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে অজানা উৎস থেকে কংগ্রেসের ১৭৮ টাকা অনুদান এলেও বিজেপির কমে হয়েছে প্রায় ১০১ কোটি।