Atmanirbhar Bharat

মোদীর ‘আত্মনির্ভর ভারত’ স্লোগানে ভর করে ছাঁটাই আমদানিতে, অস্ত্রের ঘাটতি দেখা দিতে পারে সেনায়!

২০১৪ সালে ক্ষমতায় এসেই নরেন্দ্র মোদী ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-র কথা বলেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। পরবর্তী সময়ে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও ‘আত্মনির্ভর ভারত’ নীতি রূপায়ণের জন্য পদক্ষেপ করা হয়।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৫:৪২
প্রতিরক্ষায় আত্মনির্ভরতার স্লোগান দিয়েছেন মোদী।

প্রতিরক্ষায় আত্মনির্ভরতার স্লোগান দিয়েছেন মোদী। ফাইল চিত্র।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘স্বপ্নপূরণের’ পথে হাঁটতে গিয়ে ভবিষ্যতে ভারতীয় সেনা বিপাকে পড়তে পারে বলে অভিযোগ উঠল এ বার। আমেরিকার সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে মোদীর ‘আত্মনির্ভর ভারত’ স্লোগান সফল করার জন্য একাধিক অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারির যে সিদ্ধান্ত নয়াদিল্লি নিয়েছে, ভবিষ্যতে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ওই রিপোর্ট জানাচ্ছে, মোদী সরকার প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আমদানি কমিয়ে ‘স্বদেশি’ উৎপাদনে জোর দেওয়ার নীতি নিলেও, কার্যক্ষেত্রে সেই কাজ এগোচ্ছে ঢিমেতালে। ফলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই বিভিন্ন অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের ঘাটতি দেখা দিতে পারে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখায় (স্থল, নৌ এবং বায়ুসেনা)। ওই রিপোর্ট বলছে, ২০২৬ সালের মধ্যে ভারতীয় সেনায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক হেলিকপ্টারের অভাব দেখা দেবে। ২০৩০ সালের মধ্যে দেখা দিতে পারে শতাধিক যুদ্ধবিমানের ঘাটতি।

Advertisement

২০১৪ সালে ক্ষমতায় এসেই মোদী ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-র কথা বলেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। পরবর্তী সময়ে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও ‘আত্মনির্ভর ভারত’ নীতি রূপায়ণের জন্য পদক্ষেপ করা হয়। সেই লক্ষ্যে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানিতে কাটছাঁট করতে কয়েক বছর আগে সক্রিয় হয় মোদী সরকার। বিদেশ থেকে অস্ত্র এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানি নিয়েও নতুন করে পর্যালোচনা শুরু হয়। এ বিষয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনার পরে প্রতিরক্ষা সচিব অজয় কুমারের নেতৃত্বে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনা পর্যালোচনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটি ২০২০ সালে এ বিষয়ে একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে তা কার্যকর করার সুপারিশ করেছিল।

এর পর প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের নেতৃত্বাধীন প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ক্রয় সংক্রান্ত কমিটি (ডিএসি) তা অনুমোদন করে। তার জেরে প্রতিরক্ষা উৎপাদনে ভারতকে স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে গত বছর প্রথম ধাপে ১০১টি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মোদী সরকার। তার পর আরও কিছু সরঞ্জাম আমদানিতে জারি হয় বিধিনিষেধ। বিদেশি নির্ভরতা কমাতে বিভিন্ন ধরনের রাইফেল, ক্ষেপণাস্ত্র, কামান, ড্রোন, যুদ্ধে ব্যবহারের হালকা হেলিকপ্টার থেকে ভারী পণ্যবাহী বিমান আমদানিতে ধাপে ধাপে নিষেধাজ্ঞা চাপানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তার আগে প্রতিরক্ষা উৎপাদন ক্ষেত্রে গতি আনার লক্ষ্যে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ ৪৯ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৪ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রক্রিয়ার গতি ধীর হওয়ার কারণে ভবিষ্যতে সেনায় অস্ত্র ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সূত্র উদ্ধৃত করে ব্লুমবার্গের রিপোর্ট জানাচ্ছে, ঘরোয়া প্রতিরক্ষা উৎপাদনের হার ৩০ থেকে ৬০ শতাংশের মধ্যে রাখার যে নীতি মোদী সরকার নিয়েছে, বর্তমান পরিকাঠামোয় তা পূরণ করা কঠিন। ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন বা ডিআরডিও)-র পক্ষেও সেনার চাহিদা অনুযায়ী গবেষণা ও উৎপাদন সংক্রান্ত লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়ে ফেলা এখনই সম্ভব নয়। ফলে এ ক্ষেত্রে আমদানিতে রাশ টানায় জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আরও পড়ুন
Advertisement