নীতীশ এবং কুমারস্বামী। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
প্রথমে জনতা দল-সেকুলার (জেডি-এস) নেতা এইচডি কুমারস্বামী। তার পর সমাজবাদী পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মুলায়ম সিংহ যাদব ও তাঁর ছেলে অখিলেশ। শেষে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোকদলের (আইএনএলডি) প্রধান ওমপ্রকাশ চৌটালা। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জনতা দল-ইউনাইটেড (জেডি-ইউ) প্রধান নীতীশ কুমারের দিল্লি সফরে তিনটি সাক্ষাৎপর্ব ঘিরে ইতিমধ্যেই জল্পনা তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, তিন দশক পরে ফের ছিন্নবিচ্ছিন্ন জনতা পরিবারকে ঐক্যবদ্ধ করার উদ্দেশ্যেই নীতীশের এই তৎপরতা।
কুমারস্বামীর বাবা তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার সঙ্গে শরদ যাদব, রামবিলাস পাসোয়ান, জেএইচ পটেলদের বিরোধের জেরে ১৯৯৯ সালে জনতা দলের ভাঙনের বৃত্ত ‘সম্পূর্ণ’ হয়েছিল। নির্বাচন কমিশন যুযুধান দুই দল জেডি(ইউ) এবং জেডি(এস)-এর মধ্যে কাউকেই জনতা দলের নির্বাচনী প্রতীক ‘চাকা’ ব্যবহারের অধিকার দেয়নি। নীতীশ অবশ্য ১৯৯৪ সালেই লালুর সঙ্গে মতবিরোধের কারণে জনতা দল ছেড়েছিলেন। জর্জ ফার্নান্ডেজের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গড়েছিলেন সমতা পার্টি। ২০০৩-এ নীতীশের সেই দল মিশে গিয়েছিল শরদদের জেডি(ইউ)-তে।
জনতা দলে বেশি দিন টিকে থাকেননি লালুও। ১৯৯৭ সালে গড়েন নিজের দল আরজেডি। বস্তুত, ১৯৮৯ সালের লোকসভা ভোটে বিপুল জয়ের এক বছর পর থেকেই জনতা পরিবারে ভাঙন শুরু হয়েছিল। ভিপি সিংহের নেতৃত্বে অনাস্থা প্রকাশ করে চন্দ্রশেখর-দেবীলাল গড়েছিলেন সমাজবাদী জনতা দল। পরবর্তী কালে, মুলায়ম সিংহ যাদবের সমাজবাদী পার্টি, অজিত সিংহের আরএলডি, দেবীলাল পরিবারের আইএনএলডি, নবীন পট্টনায়কের বিজেডির মত দলগুলিরও সৃষ্টি জনতা দল থেকেই।
২০১৪ সালে নীতীশ এনডিএ জোট ছাড়ার পরেই ভেঙে যাওয়া জনতা পরিবারকে ঐক্যবদ্ধ করার তৎপরতা শুরু হয়েছিল। নতুন দলের প্রতীক হিসাবে জনতা দলের পুরনো প্রতীক ‘চাকা’-কেই ফেরানোর বিষয়েও সে সময় লালু-মুলায়ম-চৌটালাদের সঙ্গে নীতীশের আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু ২০১৭-য় তিনি মহাগঠবন্ধন ছেড়ে এনডিএতে ফিরে যাওয়ার সেই উদ্যোগে ইতি পড়ে যায়। এ বার কি তা সফল হবে?