রাজেন্দ্র সিংহ গুঢা এবং অশোক গহলৌত। — ফাইল চিত্র।
রাজস্থানে নারী নির্যাতন নিয়ে প্রশ্ন তোলায় শনিবার তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করেছিলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত। সোমবার ‘গহলৌত সরকারের দুর্নীতির প্রমাণ’ হিসাবে একটি লাল ডায়েরি এবং আরও কিছু নথিপত্র নিয়ে রাজস্থান বিধানসভায় হাজির হলেন সদ্যপ্রাক্তন মন্ত্রী রাজেন্দ্র সিংহ গুঢা। দাবি করলেন, সেগুলি তাঁকে বিধানসভায় পেশ করতে দিতে হবে।
স্পিকার চন্দ্রপ্রকাশ জোশী অবশ্য সে অনুমতি দেননি রাজেন্দ্রকে। বিষয়টি নিয়ে তিনি বিক্ষোভ শুরু করায় মার্শাল ডেকে তাঁকে সভার বাইরে বার করে দেওয়ার নির্দেশ দেন স্পিকার। এর পরেই বিধানসভা ভবনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাজেন্দ্র অভিযোগ করেন, বিধানসভা ভবনে তাঁর থেকে গহলৌত সরকারের দুর্নীতি সংক্রান্ত বেশ কিছু ‘প্রমাণ’ ছিনতাই করা হয়েছে। শাসক দল কংগ্রেসের মদতেই এমনটা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন খাতায়-কলমে কংগ্রেসেরই বিধায়ক রাজেন্দ্র।
২০২০ সালে মুখ্যমন্ত্রী গহলৌতের সরকারের বিরুদ্ধে ‘অভ্যুত্থান’ চালাতে গিয়ে ‘ব্যর্থ’ হয়েছিলেন ‘বিদ্রোহী’ কংগ্রেস নেতা সচিন পাইলট। রাজস্থানের তৎকালীন উপমুখ্যমন্ত্রী এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তাঁর অনুগামী ১৯ জন বিধায়ককে নিয়ে দিল্লির কাছে একটি রিসর্টে গিয়ে উঠেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রত্যাশী পাইলটের এই পদক্ষেপে কংগ্রেসের অন্দরে আশঙ্কা তৈরি হয় যে, বিজেপির সহায়তায় তিনিও রাজস্থানে কংগ্রেস সরকার ফেলে দিতে পারেন। তবে কিছু দিন পরেই বিদ্রোহে ইতি টানেন প্রয়াত রাজেশ পাইলটের পুত্র। সে সময় গহলৌত শিবিরের সক্রিয় নেতা ছিলেন তৎকালীন অসমারিক প্রতিরক্ষা ও হোমগার্ড বিভাগের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী রাজেন্দ্র।
সোমবার রাজেন্দ্র বলেন, ‘‘সে সময় সরকার বাঁচাতে কোন বিধায়ককে কত কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। সে টাকা কোথা থেকে এসেছিল, সব ওই লাল ডায়েরিতে লেখা রয়েছে। সে সব হিসাব কংগ্রেসেরই নেতা ধর্মেন্দ্র রাঠৌরের লেখা।’’ যদিও গহলৌত-ঘনিষ্ঠ মন্ত্রী শান্তি ধারিওয়াল সোমবার বলেন, ‘‘রাজেন্দ্র মিথ্যা অভিযোগ করছেন। বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছেন।’’ প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটে বিএসপির টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন রাজেন্দ্র। কয়েক মাস পরে আরও পাঁচ বিএসপি বিধায়ককে নিয়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে মন্ত্রী হন তিনি। গত শনিবার রাজস্থান বিধানসভার অধিবেশনে রাজেন্দ্র বলেন, ‘‘রাজস্থানে নারীদের নিরাপত্তা দিতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। নারীদের উপর অত্যাচার বেড়েছে। মণিপুরের ঘটনা নিয়ে কথা না বলে আমাদের উচিত নিজেদের রাজ্যের দিকে নজর দেওয়া।’’ এর পরেই মন্ত্রিসভা থেকে রাজেন্দ্রকে বরখাস্ত করেন গহলৌত।