রেল পুলিশ ও আরপিএফ কর্মীদের সঙ্গে থাকতে হবে ট্রেনে যাত্রার বৈধ নথি, পর্যবেক্ষণ রেল আদালতের। —ফাইল চিত্র।
আরপিএফ কিংবা রেলপুলিশের কর্মীদের ট্রেনে যাত্রার সময় অবশ্যই সঙ্গে রাখতে হবে ওই ট্রেনে তাঁর যাত্রার জন্য কর্তৃপক্ষের দেওয়া কোনও বৈধ নথি। কিংবা তাঁকে টিকিট কেটে ট্রেনে উঠতে হবে। এমনকি কর্তব্যরত অবস্থায় থাকলেও এই নিয়ম মানতে হবে। শুধুমাত্র আরপিএফ বা রেল পুলিশের পরিচয়পত্র এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়। সম্প্রতি এক মামলায় এই পর্যবেক্ষণ জানিয়েছে রেল আদালত (রেলওয়ে ক্লেমস ট্রাইবুনাল)।
সুরাত রেল পুলিশের এক কনস্টেবল রাজেশ বাগুল ক্ষতিপূরণ চেয়ে রেল আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁর দাবি, ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর কর্তব্যরত অবস্থায় দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন তিনি। সে দিন সুরাত-জামনগর ইন্টারসিটি ট্রেনে চেপে সুরাত থেকে ভারুচের দিকে আসছিলেন। সেই যাত্রাপথেই পালেজ স্টেশনের কাছে তিনি ট্রেন থেকে পড়ে যান বলে দাবি মামলাকারীর। সেই দুর্ঘটনায় রেলের থেকে সুদ-সহ ৮ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে রেল আদালতের দ্বারস্থ হন রাজেশ। তবে রেল আদালতের আমদাবাদ বেঞ্চ সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে।
রেল আদালতের (বিচার বিভাগীয়) সদস্য বিনয় গোয়েল জানিয়েছেন, মামলাকারী এমন কোনও নথি দিতে পারেননি, যা প্রমাণ করে ওই ট্রেনে সে দিন সরকারি ভাবে তাঁর থাকার কথা ছিল। আদালতের পর্যবেক্ষণ, কর্তৃপক্ষের দেওয়া কোনও বৈধ নথি তিনি দেখাতে পারেননি। ফলে আবেদনকারীকে ওই ট্রেনের এক জন প্রকৃত যাত্রী হিসাবে গ্রাহ্য করা যায় না।
একই সঙ্গে রেল আদালত এ-ও জানিয়েছে, আরপিএফ ও জিআরপি কর্মীদের ট্রেনে যাত্রার জন্য প্রয়োজনীয় নথি দেওয়ার ব্যাপারে রেল কর্তৃপক্ষকে নিজেদের নির্দেশিকা মেনে চলা উচিত। মামলাকারী কনস্টেবলের আর্জি খারিজ করে দিলেও, বৈধ নথি সংক্রান্ত নির্দেশিকা নিয়ে রেলের ভূমিকাতেও সন্তুষ্ট নয় আদালত। রেল আদালতের মন্তব্য, রেলের এই ‘গা ছাড়া মনোভাব’ মোটেই ভাল নয়। আগামী দিনে যাতে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সে জন্য পশ্চিম রেলের জেনারেল ম্যানেজারকেও আদালত নির্দেশ দিয়েছে বৈধ নথি সংক্রান্ত বিষয়ে যাতে রেলের সঙ্গে জড়িত সব পক্ষকে সচেতন করা হয়।
উল্লেখ্য, ওই ক্ষতিপূরণের মামলায় রেলের তরফে যুক্তি দেখানো হয়েছিল, ওই কনস্টেবল যে দুর্ঘটনার সময় কর্তব্যরত অবস্থায় ছিলেন, তার কোনও তথ্যগত প্রমাণ দিতে পারেননি। রেলের আরও যুক্তি, কনস্টেবলের যে স্টেশনে নামার কথা ছিল, হয়তো সেই স্টেশন পেরিয়ে যাওয়ার পর তিনি ট্রেন থেকে নামতে গিয়েছিলেন। তাঁর কাছে ওই ট্রেনে যাত্রার কোনও বৈধ নথি ছিল না, টিকিটও ছিল না। এমন অবস্থায় তাঁকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য রেল দায়বদ্ধ নয়।