চিনা গুপ্তচর জাহাজ ‘শি ইয়ান ৬’। — ফাইল চিত্র।
এখনও পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের সরকারে আনুষ্ঠানিক অনুমতি দেয়নি। কিন্তু নয়াদিল্লির উদ্বেগ বাড়িয়ে চিনা গুপ্তচর জাহাজ ‘শি ইয়ান ৬’ ইতিমধ্যেই যাত্রা করেছে ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্রের দিকে। সূত্রের খবর, চেন্নাই উপকূল থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে আন্তর্জাতিক জলসীমায় রয়েছে জাহাজটি।
অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে শ্রীলঙ্কার ‘ন্যাশনাল অ্যাকোয়াটিক রিসোর্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি’র সঙ্গে যৌথ মহড়ায় অংশ নেওয়ার কথা ‘শি ইয়ান ৬’-এর। নভেম্বরের গোড়া পর্যন্ত তা চলার কথা। কিন্তু ‘শ্রীলঙ্কার জলসীমায় চিনা গুপ্তচর জাহাজের উপস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই তীব্র আপত্তি জানিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এ বিষয়ে বিক্রমসিঙ্ঘের সঙ্গে কথা বলেছেন। কিছু দিন আগে নিজেই সে কথা জানিয়ে জয়শঙ্কর বলেছিলেন, ‘‘ভারতের নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রশ্ন এ ক্ষেত্রে জড়িত। আর তা আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ।”
এর আগে, গত বছর চিনের নজরদার জাহাজ ‘ইউয়ান ওয়াং ৫’ শ্রীলঙ্কার বন্দরে ভিড়েছিল। সেই সময় এই বিষয়ে ভারতের তরফে কড়া বার্তা দেওয়া হয়। যদিও তার পরও চলতি বছরেরই অগস্ট মাসে শ্রীলঙ্কায় নোঙর ফেলেছিল পিএলএ-র জাহাজ ‘হাই ইয়াং ২৪ হাও’। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, ভারতের পরমাণু এবং ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির উপর নজরদারি করতেই বার বার শ্রীলঙ্কা নৌসেনার পোতাশ্রয়ে আসছে চিনা যুদ্ধজাহাজগুলি। ভারতের কাছে যে বিষয়টি আরও উদ্বেগের, তা হল শ্রীলঙ্কার তরফে চিনকে সঙ্গে রাখার বাধ্যবাধকতা। পূর্বতন রাজাপক্ষে সরকার হামবানতোতা বন্দরটিকে ৯৯ বছরের জন্য চিনের হাতে তুলে দিয়েছে।
শ্রীলঙ্কার পূর্বতন দুই শাসক মাহিন্দা এবং গোতাবায়া রাজাপক্ষের আমলে চিন-শ্রীলঙ্কা বোঝাপড়া ‘উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি’ পেয়েছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের জমানায় শ্রীলঙ্কা সেই অবস্থান কিছুটা বদলেছে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। সে দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কটের জন্যও অনেকে চিনের ঋণনীতিকে দায়ী করে থাকেন। অন্য দিকে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় চিনা আগ্রাসন ঠেকাতে একজোট হয়েছে আমেরিকা, ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানও। চাপের মুখে বিক্রমসিঙ্ঘে সরকার অবস্থান বদলায় কি না, তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে।