১৯৯৩ সালে মুম্বইয়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের মূল চক্রী ইয়াকুব মেমন। ফাইল চিত্র।
১৯৯৩ সালে মুম্বইয়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের মূল চক্রী, ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত ইয়াকুব মেমনের কবর সাজানো ঘিরে মহারাষ্ট্রে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে উঠল। বিজেপির দোষারোপের পাল্টা জবাবে গতকাল এনসিপি নেতা তথা রাজ্য সভাপতি জয়ন্ত পাটিল বলেছেন, দেশ ও রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় থাকাকালীনই মুম্বইয়ে ইয়াকুবের কবর গড়ার অনুমতি মিলেছিল। ফলে দায় তাদেরই।
মুম্বইয়ে বড়া কবরস্থান এলাকায় রয়েছে ইয়াকুবের কবর। সম্প্রতি ওই কবরে মার্বেল ফলক জোড়া হয়। ফুল ও আলোর মালা দিয়ে সাজানো হয় সেটি। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভ জানান অনেকে। তাঁদের মতে, যে হামলা ২৫৭টি প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল, জখম করেছিল অন্তত ৭০০ মানুষকে, যার কারণে প্রায় ২৭ কোটি টাকার সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছিল, সেই হামলার মূল চক্রীর সমাধি ঘিরে যাঁরা সৌন্দর্যায়ন করেছে, তাঁরা আসলে এক জন সন্ত্রাসবাদীকে মহিমান্বিত করছেন। এর পরেই বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে দায় ঠেলাঠেলি শুরু হয়ে যায়।
বিজেপি ইতিমধ্যে কাঠগড়ায় তুলেছে মহা বিকাশ আগাড়ির সরকারকে। এ প্রসঙ্গে বিজেপি বিধায়ক রাম কদম বলেন, ‘‘মহারাষ্ট্রে মহা বিকাশ আগাড়ির জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন ওই কবরকে মাজারে পরিণত করা হয়েছে। উদ্ধব ঠাকরে তখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। এটাই কি মুম্বইয়ের প্রতি তাঁর ভালবাসা আর দেশপ্রেম?’’ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ঠাকরে, জোট শরিক এনসিপি-র নেতা শরদ পওয়ার, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে দাবি করেন রাম কদম।
তারই জবাবে গতকাল পাল্টা তোপ দেগে এনসিপির রাজ্য সভাপতি জয়ন্ত পাটিল বলেছেন, ‘‘কাদের আমলে কবর গড়ার অনুমতি মিলেছিল সেটা আগে দেখতে হবে। ওই কবর যখন তৈরি হয় তখন বিজেপিই দেশে এবং মহারাষ্ট্রের ক্ষমতায় ছিল। ওরাই এর জন্য দায়ী।’’
চাপের মুখে বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার মুখ খুলেছেন মহারাষ্ট্রের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘মুম্বই হামলায় মূল অভিযুক্ত ইয়াকুব মেমনকে এ ভাবে মহিমান্বিত করা যায় না। আমরা তা মেনে নেব না। আমি বৃহন্মুম্বই পুরসভা এবং মুম্বই পুলিশকে বিষয়টি নিয়ে সচেতন করেছি। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।’’ পুরো ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই কাণ্ড যারা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন শিন্ডে।