মোরবীতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে প্রাধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: রয়টার্স।
গুজরাতের মোরবীর মাচ্ছু নদীতে সেতু দুর্ঘটনায় মৃতদের ক্ষতিপূরণ দিতে খরচ হয়েছে মোট ৫.৪ কোটি টাকা। আর ওই দুর্ঘটনাস্থল দেখতে আসা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অভ্যর্থনা, তাঁর সফরের ছবি তোলা ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের খরচই শুধু ছিল ৫.৫ কোটি টাকা। বিরোধীদের দাবি, সব মিলিয়ে মোদীর কয়েক ঘণ্টার মোরবী সফরে গুজরাত সরকারের ৩০ কোটির টাকার কাছাকাছি খরচ হয়ে গিয়েছে বলে তথ্যের অধিকার আইনে জানা গিয়েছে। অন্য দিকে বিজেপির দাবি, তথ্যের অধিকার আইনে এ ধরনের কোনও তথ্য জানতেই চাননি কেউ। গোটাটাই ভুয়ো।
গত ৩০ অক্টোবর গুজরাতের মোরবী জেলার মাচ্ছি নদীর উপরে ঝুলন্ত সেতু ভেঙে পড়ে ১৩৫ জনের মৃত্যু ঘটে। সেতুটির মেরামতি সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই তা খুলে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগের আঙুল ওঠে স্থানীয় বিজেপি প্রশাসনের দিকে। ফলে গুজরাত ভোটের আগে অস্বস্তিতে পড়ে যান মোদী। ঘটনার সময়ে প্রধানমন্ত্রী গুজরাতে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও কেন তিনি দুর্ঘটনার দু’দিন পরে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
বিরোধীদের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর সেই সময়কার মোরবী সফর ঘিরে প্রশাসনের ঠিক কত টাকা খরচ হয়েছিল, তা তথ্যের অধিকার আইনে জানতে চাওয়া হয়েছিল। যে উত্তর পাওয়া গিয়েছে, তা বেশ কিছু স্থানীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। তার ভিত্তিতেই আজ তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র সাকেত গোখলের করা টুইটে বলা হয়েছে, ১৩৫ জন মৃতের পরিবারকে চার লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে প্রশাসনের খরচ হয় পাঁচ কোটি টাকা। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সফরের জন্য রাতারাতি রাস্তা মেরামত করতে গিয়েই ১১ কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। মোদী আসবেন বলে মোরবীর হাসপাতালের ভোল পাল্টাতে (রং করা, সাফাই, আহতদের জন্য নতুন শয্যা ও শয্যার চাদর, জলের কুলার বসানো) খরচ হয় ৮ কোটি টাকা। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানানোর আয়োজনে তিন কোটি টাকা, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য আড়াই কোটি টাকা, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট খাতে দু’কোটি টাকা এবং সফরের ছবি তোলানোর জন্য গুজরাত প্রশাসনের ৫০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে বলে ওই টুইটে দাবি করা হয়।
আজ ছিল গুজরাতের প্রথম দফার ভোট। ভোট ছিল মোরবীতেও। স্বাভাবিক ভাবেই তার আগে এমন দাবি ওঠায় অস্বস্তিতে পড়েন বিজেপি নেতৃত্ব। পরে সাকেতকে আক্রমণ করে বিজেপির গুজরাত শাখা টুইটারে লেখে, ‘‘তথ্যের অধিকার আইনে এমন তথ্য কেউ জানতে চাননি। গোটাটাই কারচুপি ও মিথ্যা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে আপনার মতো মুখপাত্র— মিথ্যাবাদীদের দল তৃণমূল।’’