Mumbai Boat Tragedy

সন্তানদের সমুদ্রে ছুড়তে যাচ্ছিলেন অনেক বাবা-মা! মুম্বইয়ে লঞ্চডুবির অভিজ্ঞতা বর্ণনা জওয়ানের

বুধবার বিকেলে মুম্বইয়ের এলিফ্যান্টা গুহায় ঘুরতে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে যাত্রিবাহী লঞ্চ। স্পিডবোটের ধাক্কায় লঞ্চ ডুবে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন উদ্ধারকারী জওয়ান।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১০:২৫
মুম্বইয়ে স্পিডবোটের ধাক্কায় লঞ্চ ডুবে গিয়ে ১৪ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।

মুম্বইয়ে স্পিডবোটের ধাক্কায় লঞ্চ ডুবে গিয়ে ১৪ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। ছবি: পিটিআই।

ডুবন্ত লঞ্চের মধ্যে থেকে বাবা-মায়েরা তাঁদের সন্তানদের সমুদ্রে ছুড়ে ফেলতে যাচ্ছিলেন। ঘটনার দু’দিন পর সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করলেন সিআইএসএফ-এর এক উদ্ধারকারী জওয়ান। তিনি জানিয়েছেন, ডুবন্ত লঞ্চে বাবা-মায়েদের আতঙ্ক গ্রাস করেছিল। সন্তানদের সমুদ্রে ছুড়ে দিলে তারা প্রাণে বাঁচতে পারে বলে মনে করেছিলেন অনেকে। তাই সেই চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তার আগেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান নৌসেনার জওয়ানেরা। তাঁরা লঞ্চযাত্রীদের আশ্বস্ত করেন এবং উদ্ধারকাজ শুরু করেন।

Advertisement

বুধবার বিকেলে মুম্বইয়ের এলিফ্যান্টা গুহায় ঘুরতে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে নীলকমল নামে একটি যাত্রিবাহী লঞ্চ। নৌসেনার একটি স্পিডবোট নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে লঞ্চটিতে ধাক্কা মারে বলে অভিযোগ। তাতে ১১৩ জন যাত্রী ছিলেন। লঞ্চ ডুবে যাওয়ায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনও নিখোঁজ এক শিশু। সে দিন বিকেলে ঘটনার খবর পেয়ে সবচেয়ে আগে উদ্ধারস্থলে পৌঁছেছিল সিআইএসএফ-এর মেরিন কমান্ডোদের একটি টহলদারি স্পিডবোট। তাতে ছিলেন কনস্টেবল অমল সাভান্ত এবং তাঁর দুই সহকর্মী। বিকেল ৪টে নাগাদ তাঁরা লঞ্চের কাছে পৌঁছে যান। লঞ্চের অনেকটা অংশই তত ক্ষণে ডুবে গিয়েছে।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে অমল বলেন, ‘‘আমরা উপকূলের কাছে প্রতি দিনের মতো টহলদারির দায়িত্বে ছিলাম। হঠাৎ ওয়াকিটকিতে খবর পাই, তিন-চার কিলোমিটার দূরে একটি যাত্রিবাহী লঞ্চ ডুবে যাচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব ঘটনাস্থলে পৌঁছই। গিয়ে ওখানকার পরিস্থিতি দেখে তো আমরা চমকে গিয়েছিলাম। দ্রুত কর্তব্য স্থির করে ফেলি। অনেকেই নিজেদের সন্তানদের প্রাণে বাঁচানোর আশায় জলে ছুড়তে যাচ্ছিলেন। আমরা তাঁদের আশ্বস্ত করি।’’ অমল জানিয়েছেন, লঞ্চের হাত থেকে শিশুদের ঝুলে থাকতে দেখে তিনি ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। তাঁদের বাবা-মায়েরাও নিরুপায় ভাবে সে দিকে তাকিয়ে ছিলেন। প্রথমেই তাঁরা ছয় থেকে সাত জন শিশুকে উদ্ধার করে স্পিডবোটে তুলেছিলেন। তার পর মহিলা এবং শেষে পুরুষদের উদ্ধার করা হয়।

মুম্বইয়ের লঞ্চডুবি নিয়ে টানাপড়েন শুরু হয়েছে। নৌসেনার কাছে জবাব চেয়ে পাঠিয়েছে মুম্বই পুলিশ। জানতে চাওয়া হয়েছে, কেন ব্যস্ত সময়ে পরীক্ষামূলক ভাবে স্পিডবোট চালানো হচ্ছিল। স্পিডবোট চালানোর অনুমতি কে দিয়েছিল নৌসেনাকে? প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, স্পিডবোটের থ্রটলে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। ফলে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। তার পরই সেটি সোজা গিয়ে ধাক্কা মারে যাত্রীবোঝাই লঞ্চে। ওই লঞ্চে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী তোলা হয়েছিল কি না, যাত্রীদের লাইফজ্যাকেট দেওয়া হয়েছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Advertisement
আরও পড়ুন