মায়ানমার থেকে অনুপ্রবেশ। ছবি: সংগৃহীত।
দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর ঘটনায় যখন তোলপাড় মণিপুর, তখনই উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যটিতে পড়শি দেশ থেকে লোক ঢুকছে বলে অভিযোগ। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মণিপুর সরকার। মায়ানমার থেকে গত কয়েক দিনে অনেকেই কাঁটাতার পেরিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছেন। মণিপুরেও এসেছেন অনেকে। সীমান্তের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অসম রাইফেলসের কাছে এ বিষয়ে রিপোর্ট তলব করেছে মণিপুর সরকার।
সোমবার বেশি রাতে মণিপুর সরকারের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানেই মায়ানমারের অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাজ্য সরকার। জানানো হয়েছে, গত দু’দিনে (২২ জুলাই এবং ২৩ জুলাই) মায়ানমার থেকে নারী, পুরুষ এবং শিশু মিলিয়ে মোট ৭১৮ জন ভারতে প্রবেশ করেছেন। এঁরা চান্ডেল জেলা হয়ে মণিপুরে ঢুকেছেন। কারও কাছেই উপযুক্ত নথিপত্র নেই।
মণিপুর সরকারের উদ্বেগ, মায়ানমারের এই অনুপ্রবেশকারীদের মাধ্যমে রাজ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতিকে আরও উস্কে দেওয়ার জন্য অস্ত্রশস্ত্র মণিপুরে ঢোকানো হতে পারে। তাতে নতুন করে মাথাচাড়া দিতে পারে অশান্তি।
এই পরিস্থিতিতে মণিপুর সরকার অসম রাইফেলসকে যে কোনও রকম বেআইনি অনুপ্রবেশ (উপযুক্ত নথি ছাড়া) কঠোর ভাবে দমন করার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি, কী ভাবে এই ৭১৮ জন প্রয়োজনীয় নথি ছাড়াই ভারতে ঢুকলেন, তার জবাব চেয়ে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে।
গত আড়াই মাসেরও বেশি সময় ধরে অশান্ত মণিপুর। ৩ মে ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত। জনজাতি গোষ্ঠীভুক্ত কুকিদের সঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইদের সংঘর্ষে দু’পক্ষেই ক্ষয়ক্ষতি হয়। মণিপুরের হিংসায় এখনও পর্যন্ত দেড়শোর বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন। আহত অনেকে। বহু মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। বাধ্য হয়ে অনেকে মণিপুর ছেড়ে অন্য রাজ্যে পালিয়ে গিয়েছেন।
সম্প্রতি, মণিপুরে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর ঘটনার একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তার পর থেকে গোটা দেশ উত্তাল। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছেন বিরোধীরা। ঘটনার নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।