অরুণাচলে গিয়ে চিনকে কড়া ভাষায় আক্রমণ শাহের। ছবি: পিটিআই।
চিনের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে অরুণাচল সফরে গেলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সোমবার ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) লাগোয়া কিবিথুতে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ভাইব্র্যান্ট ভিলেজ প্রোগ্রাম’ উদ্বোধন করতে গিয়ে কড়া ভাষায় বেজিংকে জবাব দিলেন তিনি।
শাহ সোমবার বলেন, ‘‘আগে যে কেউ ভারতীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশ এবং জবরদখল করতে পারত। এখন ভারতীয় সূচ্যগ্র ভূখণ্ডও কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না।’’ এবং পাশাপাশি, ১৯৬২ সালে চিনা ফৌজের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অরুণাচলবাসীর অনমনীয় মনোভাবের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘‘এই মনোভাবই সে দিন হামলাকারীদের পিছু হটতে বাধ্য করেছিল।’’ ১৯৬২ সালের যুদ্ধে কিবিথুতে চিনা হামলায় নিহত ভারতীয় সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনও করেন শাহ।
সোমবার সকালে শাহের দু’দিনের অরুণাচল সফরের আগেই প্রতিবাদ জানিয়েছিল চিনা বিদেশ মন্ত্রক। বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘‘এই পদক্ষেপ (শাহের সফর) দ্বিপাক্ষিক শান্তি প্রক্রিয়ার পরিপন্থী। আমাদের আঞ্চলিক সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না।’’ বেজিংয়ের তরফে নয়াদিল্লিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, টানাপড়েনের মধ্যে ভারত যেন সীমান্ত পরিস্থিতিকে অযথা জটিল না করে তোলে।
কিন্তু চিনা হুমকি উপেক্ষা করেই উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ওই রাজ্যে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী সরকারের আমলে ভাবনায় বদল এসেছে। কেন্দ্র এখন সীমান্তবর্তী অঞ্চলের উন্নয়নকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে চায়। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলি আর এখন ‘শেষ গ্রাম’ নয়, ‘প্রথম গ্রাম। এটাই ভাবনার বদল।’’
অরুণাচল নিয়ে সাম্প্রতিক টানাপড়েনের আবহে নয়াদিল্লি এই পদক্ষেপ ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছে কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের একাংশ। প্রসঙ্গত, গত সোমবার কমিউনিস্ট পার্টি নিয়ন্ত্রিত একদলীয় চিনের সরকারি সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস সরকারি বিজ্ঞপ্তি উদ্ধৃত করে জানায়, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সরকার অরুণাচলের ১১টি এলাকার নাম পরিবর্তন করেছে। যার মধ্যে রয়েছে ৫টি পর্বতশৃঙ্গ, ২টি মালভূমি অঞ্চল, ২টি আবাসিক এলাকা এবং ২টি নদী।
এর পরেই অরুণাচলের ১১টি স্থানের নাম বদলের চিনা তৎপরতার প্রতিবাদ করে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বলেছিলেন, ‘‘অরুণাচলের যে ১১টি অঞ্চলের নাম বদলের কথা বলা হচ্ছে সেগুলি ভারতীয় ভূখণ্ডের অংশ।’’ কিন্তু পাল্টা বেজিং দাবি করে, ওই এলাকাগুলি তাদের। বেজিং সব সময়েই এই এলাকাকে দক্ষিণ তিব্বত হিসাবে দাবি জানিয়ে এসেছে। রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী পদে থাকাকালীন মনমোহন সিংহ এবং রামনাথ কোবিন্দের অরুণাচল সফর নিয়ে বেজিং উষ্মা প্রকাশ করেছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অরুণাচল সফর নিয়েও আপত্তি জানিয়েছে চিন। যদিও কখনওই তা গ্রাহ্য করেনি নয়াদিল্লি।