প্রতীকী ছবি।
গোষ্ঠীসংঘর্ষে দীর্ণ মণিপুরে প্রকাশ্যে এল হিংসার নতুন ভিডিয়ো। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সাত সেকেন্ডের ওই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, এক ব্যক্তির গায়ে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে উন্মত্ত জনতা! মণিপুর পুলিশের দাবি, গত ৪ মে কংপোকপি এবং থৌবল জেলার সীমানায় ওই ঘটনা ঘটেছিল। সে দিনই দুই কুকি মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর ঘটনা ঘটেছিল। ওই ঘটনার ভিডিয়ো জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহে ছড়িয়ে পড়েছিল সমাজমাধ্যমে। ভিডিয়ো দু’টির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
রাজধানী ইম্ফল থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে থৌবল জেলায় বিবস্ত্র করে ঘোরানো এবং গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যেই কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রকাশ্যে এসেছে এক নির্যাতিতায় বয়ানও। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, ওই দিন মেইতেই জনগোষ্ঠীর হামলাকারীরা তাঁর বাবা এবং ভাইকে খুন করেছিল। প্রকাশ্যে পুড়িয়ে খুনের ভিডিয়োটি সেই ঘটনার বলে মনে করা হচ্ছে।
থৌবল লাগোয়া কংপোকপি জেলার বি ফাইনম গ্রামের বাসিন্দা ওই ২১ বছরের মহিলা জানিয়েছেন, ৪ মে ঘটনাটি বি ফাইনম গ্রামের অদূরে থৌবল জেলায় নংপোক সেকমাই থানার দু’কিলোমিটার দূরে তৌবু গ্রামের পাশে ঘটেছিল। বিষয়টি নিয়ে সাইকুল থানায় ‘জ়িরো এফআইআর’ দায়ের করে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ-সহ একাধিক অভিযোগ এনেছিলেন তিনি।
ওই মহিলা বলেছেন, ‘‘দুষ্কৃতীদের অনেকের হাতে একে-৪৭, ইনসাস, এসএলআর-সহ আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। সংখ্যায় তারা ছিল কয়েকশো। গ্রামে ঢুকে তারা নির্বিচারে বাড়িতে আগুন ধরায়, গুলি চালায়। আমরা পাঁচ জন— তিন মহিলা এবং দু’জন পুরুষ (নির্যাতিতার বাবা এবং ভাই) দৌড়ে পাশের জঙ্গলে ঢুকে পড়ায় তখনকার মতো বেঁচে গিয়েছিলাম।’’ নির্যাতিতা মহিলা বলেন, ‘‘পরে নংপোক সেকমাই থানা থেকে পুলিশকর্মীরা গিয়ে আমাদের উদ্ধার করেন। কিন্তু থানায় ফেরার পথে রাস্তায় দুষ্কৃতীরা আমাদের ঘিরে ফেলেন।’’
তিনি জানান, তিন মহিলাকে খুনের ভয় দেখিয়ে জোর করে বিবস্ত্র করানো হয়। এমনকি, তাঁকে গণধর্ষণ করা হয় বলেও জানিয়েছেন ওই মহিলা। তাঁর বাবা এবং ভাইকে হামলাকারী জনতা খুন করেছিল বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমার ৫৬ বছরের বাবাকে প্রথমেই খুন করা হয়। আমাকে বাঁচাতে গিয়ে ভাইও নিহত হয়।’’ তবে এক মহিলা হামলাকারীদের ‘পরিচিত’ হওয়ায় তাঁকে ধর্ষণের শিকার হতে হয়নি।