— ফাইল চিত্র।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর ক্ষমতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানাবে কেন্দ্র। গত ৪ অক্টোবর হরিয়ানার দুই ব্যবসায়ী বসন্ত বনসল এবং পঙ্কজ বনসলকে গ্রেফতারির মামলায় শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, কোনও ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে হলে লিখিত ভাবে ‘কারণ’ জানাতে হবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি-কে। সেই রায়ের বিরুদ্ধেই শীর্ষ আদালতে ‘রিভিউ পিটিশন’ দাখিল করতে চলেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
গত ১৪ জুন গুরুগ্রামের একটি আবাসন সংস্থার দুই মালিক বসন্ত বনসল এবং পঙ্কজ বনসলকে গ্রেফতার করে ইডি। কিন্তু ওই দিন একটি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু অন্য একটি মামলায় তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের গ্রেফতারির কারণ জানানো হয়নি বলেও অভিযোগ। এই গ্রেফতারির বিরুদ্ধে পঞ্জাব এবং হরিয়ানা আদালতের দ্বারস্থ হন অভিযুক্তেরা। কিন্তু তাঁদের আর্জি খারিজ করে দেয় হাই কোর্ট। তার পরেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন দু’জন।
গত ৪ অক্টোবর বিচারপতি এএস বোপান্না এবং পিভি সঞ্জয় কুমারকে নিয়ে গঠিত শীর্ষ বেঞ্চ বলে, ‘‘ধৃত ব্যক্তিকে অবশ্যই লিখিত ভাবে গ্রেফতারের কারণ জানাতে হবে ইডিকে।’’ পাশাপাশি, রাজনৈতিক প্রভাব এবং প্রতিহিংসামূলক আচরণ ছেড়ে ইডিকে ন্যায্য এবং স্বচ্ছ ভাবে কাজ করারও ‘পরামর্শ’ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। বিজেপির বিরুদ্ধে ইডিকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে’ ব্যবহার করার অভিযোগে বিরোধী দলগুলি যখন সরব, তখন সুপ্রিম কোর্টের এই রায় এবং পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রকে অস্বস্তিতে ফেলেছে বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মত। এই পরিস্থিতিতে ‘রাজনৈতিক কারণেই’ মোদী সরকার রিভিউ পিটিশন দাখিল করতে চলেছে বলে তাঁদের মত।
গত বছর আইন সংশোধনের পরেই বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছিল, ইডি-কে রাজনৈতিক স্বার্থে কাজে লাগাতে তার হাতে লাগামহীন ক্ষমতা তুলে দিয়েছে মোদী সরকার। ইডির বাড়তি ক্ষমতার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে প্রায় আড়াইশো মামলা দায়ের হয়েছিল। কিন্তু গত বছরের ২৭ জুলাই কেন্দ্রকে স্বস্তি দিয়ে বিচারপতি এ এম খানউইলকরের বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছিল, আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনে (পিএমএলএ) ইডি-কে যে সব ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তা সংবিধান-বিরুদ্ধ নয়। আর্থিক কেলেঙ্কারি রুখতে কড়া আইনেরই প্রয়োজন। এর পরে বিভিন্ন রাজ্যে ইডি ধারাবাহিক ভাবে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং তাদের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে’ অভিযান চালাচ্ছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের।