অবৈধ অভিবাসী সন্দেহে মুম্বইয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার পাঁচ বাংলাদেশি। —ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্র সরকারের ‘লাড়কী বহিন’ (আদরের বোন) প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছিলেন বাংলাদেশি মহিলাও! সম্প্রতি এমনই অভিযোগ উঠে এসেছে মুম্বই থেকে ধৃত উর্মিলা খাতুনের বিরুদ্ধে। অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড়ে পুলিশি অভিযানের সময় ধরা পড়েন বছর তেইশের ওই মহিলা। পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলা বাংলাদেশি। বাড়ি বাংলাদেশের তারাকান্দা উপজেলায়। তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়। পরে মহিলার আইনজীবী এসে দাবি করেন, মহিলা ভারতীয় নাগরিক। নথি হিসাবে মহিলার একটি আধার কার্ড (যেটি ভুয়ো বলে সন্দেহ পুলিশের) দেখান তিনি। ‘লাড়কী বহিন’ প্রকল্পে উপভোক্তা হিসাবে মহিলার নথিভুক্ত থাকার কথাও জানান তিনি।
সম্প্রতি দিল্লি এবং মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রান্তে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। অবৈধ ভাবে ভারতে অভিবাসনের অভিযোগে ধরপাকড়ও চলেছে নাগাড়ে। ধরা পড়েছেন প্রচুর অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী। পুলিশ জানায়, ধৃতেরা এ দেশে আসার পর কোনও ভাবে জাল আধার কার্ড এবং অন্য ভারতীয় পরিচয়পত্র জোগাড় করেছিলেন। কিছু ভারতীয় দালালও এর সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ পুলিশের। ইতিমধ্যে বেশ কয়েক জনকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো (ডিপোর্ট)-র প্রক্রিয়াও শুরু করা হয়েছে। এই আবহে দক্ষিণ মুম্বইয়ের কামাতিপুরা এলাকা থেকে পাঁচ বাংলাদেশি-সহ ছ’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের মধ্যেই এক জন উর্মিলা। ধৃতের আইনজীবীর দাবি ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে মহারাষ্ট্রে। তা হলে কি ভুয়ো পরিচয়ে মাসে মাসে সরকারি অনুদান পেতেন বাংলাদেশি মহিলা? উঠতে শুরু করেছে সেই প্রশ্নও।
পশ্চিমবঙ্গের ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের আদলে মহারাষ্ট্র সরকার ‘লাড়কী বহিন’ চালু করে। ২০২৪ সালের মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের আগে চালু হয় প্রকল্পটি। প্রকল্পের আওতায় ২৫-৬৫ বছর বয়সি মহিলাদের মাসে ১৫০০ টাকা করে দেওয়া শুরু করে মহারাষ্ট্রের সরকার। প্রকল্পের অন্যতম শর্ত হল, উপভোক্তাকে মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা হতে হবে। বিয়ে করে অন্য রাজ্যে চলে গেলে তিনি আর এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন না। সে ক্ষেত্রে ভুয়ো পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ধৃত বাংলাদেশি মহিলাও উপভোক্তার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার অভিযোগে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
মহিলার আইনজীবীর দাবি, তাঁর মক্কেল ভারতীয়। তবে পুলিশ জানিয়েছে মহাদেব যাদব নামে এক দালাল ছাড়া ধৃত ছ’জনের মধ্যে প্রত্যেকেই বাংলাদেশি। ভুয়ো নথি ব্যবহার করে তাঁরা ভারতে বেআইনি ভাবে থাকছিলেন বলে অভিযোগ। ধৃতদের বিরুদ্ধে বিদেশি নাগরিক আইন, পাসপোর্ট আইন এবং ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।