— প্রতীকী ছবি।
দিব্যি চাকরি করেন। তবু বাড়তি আয়ের লোভ সামলাতে পারেননি। তারই ফলশ্রুতিতে অ্যাকাউন্ট সাফ করে চলে গেল চোরেরা। সর্বস্ব হারিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হলেও টাকা ফিরবে কি? ঘটনাটি ঘটেছে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী বলে পরিচিত মুম্বইয়ে। পেশায় ব্যাঙ্ককর্মীর অবস্থায় আপনাকেও যাতে পড়তে না হয়, সে জন্য সতর্ক থাকাই একমাত্র পথ।
কোলাবার একটি ব্যাঙ্কে ম্যানেজার পদে চাকরি করেন ৩৪ বছরের যুবক। থাকেন সিবিডি-বেলাপুরে। সম্প্রতি তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। অভিযোগ, বাড়তি উপার্জনের লোভে তিনি একটি ‘পার্টটাইম’ কাজ নিয়েছিলেন। সেই ‘কাজ’ই তাঁকে পথে বসিয়ে ছাড়ল।
গত ২৩ মে এবং ২৬ মে মুম্বই পুলিশের কাছে দু’টি এফআইআর দায়ের করেন ওই ব্যাঙ্ককর্মী। তাঁর অভিযোগ, ইউটিউবে ভিডিয়ো ‘লাইক’ করলেই টাকা মিলবে বলে কথা দিয়েছিলেন চার ব্যক্তি। বেতন ছাড়াও বাড়তি উপার্জনের লোভ সামলাতে পারেননি যুবক। কাজ করবেন বলে সম্মতি জানান। তাঁকে বলা হয়েছিল, ভিডিয়োপ্রতি ১৮০ টাকা এবং ১০০ টাকা করে মিলবে। এ ভাবে অফিসের কাজের পাশাপাশি ভালই চলছিল ‘পার্টটাইম’ কাজ। এর মধ্যেই ওই চার ব্যক্তি যুবককে ১০ লক্ষ টাকা মোট সাতটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করতে বলা হয়। যুবকের বিশ্বাস জিততে তাঁকে সমপরিমাণ অর্থের একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি লিঙ্কও পাঠায় প্রতারকরা। পরে যুবক জানতে পারেন সেই লিঙ্কটি ছিল ভুয়ো।
চার ব্যক্তির কথামতো ১০ লক্ষ বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করার পরও যখন বিনিয়োগ করা টাকা ফেরত পেলেন না যুবক, তখন তাঁর মনে সন্দেহের উদ্রেক হয়। তিনি ওই চার ব্যক্তিকে এ নিয়ে প্রশ্ন করেন। জবাব পান, নির্দিষ্ট সময়ে মুনাফা সমেত বিনিয়োগ করা টাকা তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাবে। চিন্তার কোনও কারণ নেই। কিন্তু ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে তা ফেরত না পাওয়ার পর যুবক সোজা ছোটেন ব্যাঙ্কে। কিন্তু ব্যাঙ্কে সব খুলে জানানোর পর ব্যাঙ্ক থেকেই তাঁকে পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার কথা বলা হয়। যুবক নিশ্চিত হন, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এর পরেই পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি। কিন্তু টাকা ফেরত পাননি এখনও। আদৌ পাবেন কি? প্রশ্ন এখন সেটাই।
ব্যাঙ্কিং বিশেষজ্ঞরা বার বার সহজে অর্থ লাভের ফন্দিতে মানুষকে পা দিতে বারণ করে থাকেন। কিন্তু কে শোনে কার কথা! এখানে খোদ ব্যাঙ্ককর্মীই উপরির লোভে বিপুল বিনিয়োগ করে প্রতারণার জালে আটকে গেলেন।